• শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪২৯
১৬ দিনের মাথায়  দুই শিশু হত্যার চার্জশিট

১৬ দিনের মাথায়  দুই শিশু হত্যার চার্জশিট

প্রতীকী ছবি

আইন-আদালত

১৬ দিনের মাথায়  দুই শিশু হত্যার চার্জশিট

  • আদালত প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

রাজধানীর ডেমরায় দুই স্কুলশিশুকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। কারাগারে আটক সিরামিক মিস্ত্রি গোলাম মোস্তফা (২৮) ও তার ফুফাতো ভাই আজিজুল বাওয়ানীকে (২৮) চার্জশিটে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার ১৬ দিনের মাথায় গত বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়ছে বলে নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা থানার এসআই শাহ আলম।

তিনি বলেন, দুই আসামি ইতোমধ্যে তাদের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৩০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১)/৯(৪)(খ) ধারায় ধর্ষণচেষ্টা, হত্যা ও আলামত নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে দুই আসামির বিরুদ্ধে। অপরাধ প্রমাণ হলে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড। দণ্ডবিধির সঙ্গে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন যুক্ত থাকায় এ মামলার বিচার হবে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।

আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকতা এসআই আব্দুল মান্নান গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, জমা দেওয়া অভিযোগপত্রটি দুপুর পর্যন্ত আমাদের হাতে আসেনি। এ কারণে এখনো বিচারকের কাছে উপস্থাপন করা হয়নি।

ডেমরার কোনাপাড়ায় শাহজালাল রোডে পাশাপাশি দুটি বাসায় থাকত হত্যার শিকার দুই শিশু ফারিয়া আক্তার দোলা (৭) ও নুসরাত জাহান (৫)। তারা স্থানীয় একটি নার্সারি স্কুলে পড়ত।

গত ৭ জানুয়ারি দুপুরে বাড়ির সামনে খেলার মধ্যেই নিখোঁজ হয় মেয়ে দুটি। তাদের খোঁজ না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করা হয়। রাতে স্থানীয় আবুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া মোস্তফার বাসার খাটের নিচ থেকে মেয়ে দুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ঘটনার দিন মোস্তফাকে বাসায় না পেলেও তার স্ত্রী আঁখি ও শ্যালককে আটক করা হয়। তদন্তে নেমে হত্যাকাণ্ডের পরদিন যাত্রাবাড়ীর ভাঙা প্রেস ও ডেমরার মোল্লাব্রিজ এলাকা থেকে গোলাম মোস্তফা ও তার ফুফাতো ভাই আজিজুল বাওয়ানীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে নুসরাতের বাবা পলাশ হাওলাদার ডেমরা থানায় মামলা করেন।

দুই আসামিকে গ্রেফতারের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ৯ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘প্রথমে ধারণা করেছিলাম অত ছোট বাচ্চাদের মুক্তিপণের জন্য নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে দুজন বলে, ধর্ষণ করার উদ্দেশ্যে তারা নুসরাত আর দোলাকে বাসায় নিয়ে যায়। ঘটনার সময় মোস্তফার স্ত্রী গার্মেন্টকর্মী আঁখি ছিলেন কারখানায়। মোস্তফা ও আজিজুল তখন বাড়ির বাইরে খেলতে থাকা নুসরাত আর দোলাকে ‘লিপস্টিক কিনে দেওয়ার প্রলোভন’ দেখিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরে দুজন ইয়াবা সেবন করে জোরে গান বাজিয়ে মেয়ে দুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাদের হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে।

তিনি আরো জানান, হত্যার পর দুই শিশুর লাশ খাটের নিচে রেখে দেয় মোস্তফা ও আজিজুল। পরে আজিজুল ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যায়, মোস্তফা তখনো ছিল। সন্ধ্যায় আঁখি বাসায় ফিরে স্বামীর ‘অস্বাভাবিক আচরণ’ দেখে সন্দিহান হয়ে ওঠেন। আঁখি প্রতিবেশীর বাসায় গেলে ওই ফাঁকে মোস্তফা বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ ওই বাসার খাটের নিচ থেকে মেয়ে দুটির লাশ থেকে উদ্ধার করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত গামছা এবং আরো কিছু আলামত সে সময় উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads