• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

আইন-আদালত

কারাগারে ক্যাসিনো সম্রাট

  • এমদাদুল হক খান
  • প্রকাশিত ০৭ অক্টোবর ২০১৯

অবশেষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটকে তার অন্যতম সহযোগী এনামুল হক আরমানসহ গ্রেপ্তার করেছে এলিট ফোর্স র্যাব। গ্রেপ্তারের পর গতকালই সম্রাটকে ৬ মাসের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আরমানকেও ভিন্ন মামলায় ছয় মাসের সাজা দিয়ে সম্রাটসহ তাদের কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও আরমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের নিয়ে আসা হয় ঢাকার র্যাব সদর দপ্তরে। এরপর দুপুরের দিকে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে তার অফিসে অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় সেখান থেকে মাদক, অস্ত্র-গুলি ও ক্যাঙ্গারুর চামড়া উদ্ধার করা হয়। পরে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে সম্রাটকে এবং কুমিল্লায় গ্রেপ্তারের সময় ‘মদ্যপ’ থাকায় আরমানকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম।

ক্যাসিনোবিরোধী চলমান অভিযানের শুরু থেকেই নজরদারির মধ্যে ছিলেন সম্রাট। এই সময়ের মধ্যে তিনি বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তিনি দেশ ছাড়তে পারেননি। ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে রাজধানীর জুয়াড়িদের কাছে বেশ পরিচিত ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। তার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগরীতে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা ও অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসাসহ আরো অনেক অবৈধ কর্মকাণ্ডের হোতা হিসেবে অভিযোগ রয়েছে। র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে র্যাবের ১২ থেকে ১৪টি গাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের আশপাশে অবস্থান নেয়। র্যাব বিভিন্ন সড়কের মধ্যে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। ভোর ৫টার দিকে কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে মুনির চৌধুরী নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি (বর্তমানে বহিষ্কৃত) সম্রাট ও এনামুল হক আরমানকে আটক করে। আরমানও যুবলীগের নেতা ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের যে বাড়িতে সম্রাট আশ্রয় নিয়েছিলেন সেটি তার আত্মীয়ের বাসা। চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামটি ফেনী জেলার সঙ্গে লাগোয়া একটি এলাকা।

আলকরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, একসময় বাড়ির মালিক মনির হোসেন চৌধুরী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। এখন তিনি পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এলাকায় বেশি একটা আসেন না। শনিবার সন্ধ্যা থেকে তার বাড়ির চারপাশে অবস্থান নেয় র‍্যাব। সেখান থেকে ভোরে সহযোগী আরমানসহ সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এর আগে এলাকাবাসীর কেউই সম্রাটকে ওই বাসায় থাকাকালীন দেখেননি বলে জানান। বাড়িটি রোববার বেলা দুইটার সময়ে তালাবদ্ধ ছিল। ফেনীর পশুরামপুরে সম্রাটের বাড়ি হওয়ায় আগে থেকেই তিনি এই আশ্রয়স্থলের কথা জানতেন।

র‍্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর দু-একদিনের মধ্যেই ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকা ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যান। অবশেষে গতকাল রোবববার ভোর ৫টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকারা ইউনিয়নের একটি গ্রাম থেকে সম্রাটকে আটক করে র‍্যাব।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা একাধিকবার সম্রাটের নাম পেয়েছি। আমরা যখন ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করি, তার দু-একদিনের মধ্যে সম্রাট ঢাকা ত্যাগ করেন। আমাদের দীর্ঘদিন সময় লেগেছে উনাকে লোকেট করতে। যেখান থেকে সম্রাটকে আটক করা হয়েছে, সেখানে তিনি কত দিন অবস্থান করছিলেন— এমন প্রশ্নে র‍্যাবের মহাপরিচালক বলেন, গণমাধ্যমে লেখালেখির কারণে আত্মগোপনের জন্য উনি এমন সব পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন, যাতে উনাকে না খুঁজে পাওয়া যায়। সে জন্য এর বেশি গণমাধ্যমে বলা ঠিক হবে না।

বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চালিয়ে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা বন্ধ করেছি। এরপর যারা ক্যাসিনোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। এরপর আরো যারা যারা জড়িত বা ক্যাসিনো পরিচালনা করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছি আমরা।

জানা গেছে, ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে আটক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নেতা (বর্তমানে বহিষ্কৃত) ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে একাধিকবার ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সীমান্তে কড়া নজরদারি থাকায় তার চেষ্টা সফল হয়নি। অবশেষে প্রায় তিন সপ্তাহ আত্মগোপনে থাকার পর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে রোববার ভোরে র্যাবের হাতে আটক হন যুবলীগের এই নেতা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি গোয়েন্দা সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, দেশ ছেড়ে পালানোর উদ্দেশ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা ছাড়েন সম্রাট। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে এক আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন তিনি। সেখানে তিনি একাধিকবার সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাওয়া এবং সেখান থেকে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা এসব তথ্য ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। তবে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য এতদিন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে সম্রাটের ওপর নজরদারি ছিল। এমনকি সম্রাট কুমিল্লা যাওয়ার পর কুমিল্লার সব সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়।

সম্রাটকে আটকের অভিযানে থাকা একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গতকাল ভোর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্রাট এখানে মনিরুজ্জামান নামে তার এক আত্মীয়ের বাসায় ছিল গত কয়েকদিন। উদ্দেশ্য ছিল দেশ ছেড়ে ভারত সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া। সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্রাটের জড়িত থাকার প্রমাণ হাতে নিয়ে মধ্যরাতে ওই বাড়িটি র্যাব সদস্যরা ঘিরে রাখেন।

র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্রাট একাধিকবার পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে সীমান্তে আগে থেকে কড়া নজরদারি রাখায় তিনি সফল হতে পারেননি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের মুখপাত্র সারোয়ার-বিন-কাসেম বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাতে নিয়েই সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তিনি কবে ঢাকা ছেড়েছেন এবং দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন কি না সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

র‍্যাব-২-এর অধিনায়ক (সিও) আশিক বিল্লাহ জানান, মহাখালী এলাকার ডিওএইচএসে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন ওরফে সম্রাটের বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। রোববার বিকেল ৩টার দিকে ডিওএইচএসের ২৯ নম্বর সড়কে ও ৩৯২ নম্বর বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়।

অন্যদিকে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক (সিও) মেজর কাজী সাইফুদ্দিন জানান, গতকাল দুপুর ২টার দিকে মিরপুরে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমানের বাসায় অভিযান চালিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। মিরপুর-২-এর মসজিদ মার্কেটের ১৬ নম্বর বাড়িতে র্যাব এ তল্লাশি অভিযান শুরু করে। তবে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও র্যাব-৪-এর অধিনায়ক বিস্তারিত কিছু জানাননি।  এদিকে রাজধানীর কলাবাগানেও আরমানের একটি বাসায়ও র্যাব অভিযান চালিয়েছে বলে জানা গেছে। 

র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, কাকরাইলের ৭৪, ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের অফিসে অভিযান চালিয়ে এক হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১টি পিস্তল, ২ ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ৫ পিস কাটুস, ২টি ইলেকট্রনিক শর্ট সার্কিট ২টি, ১৬ বোতল বিদেশি মদ ও ৪/৫ বান্ডেল তাস পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাকরাইল এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, এ এলাকায় ব্যবসা করতে হলে সম্রাটকে বাধ্যতামূলক চাঁদা দিতে হতো। তার সাঙ্গোপাঙ্গরাই এ চাঁদা আদায় করত।

স্বস্তি প্রকাশ করে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, সম্রাট গ্রেপ্তার হওয়ায় কাকরাইল এলাকার সবাই খুশি। সম্রাটকে বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে এলাকায় ব্যবসা করতে হতো।

বিল্লাল হোসেন নামের এক হকার বলেন, সম্রাটের লোকজন প্রতিদিন তার কাছ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা নিত। জানা গেছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে পুরো এলাকায় আধিপত্য গড়ে তোলে সম্রাট।

সম্রাটের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সম্রাটের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী বাড্ডায় থাকেন। ওই ঘরে সম্রাটের এক মেয়ে। তিনি পড়াশোনা শেষ করেছেন। সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী মহাখালীর ডিওএইচএসে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে সম্রাটের এক ছেলে। তিনি মালয়েশিয়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। মহাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসাতেই থাকতেন সম্রাট। যদিও গত দুই বছর ধরে তিনি কাকরাইলে নিজ কার্যালয়েই থাকতেন। বাসায় না গেলেও পরিবারের সব খরচ দিতেন সম্রাট। সিঙ্গাপুরে সম্রাটের বিদেশি একজন স্ত্রী আছে বলেও তার পরিবারের একটি সূত্র দাবি করলেও ওই স্ত্রীর ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জানা গেছে, সম্রাটদের গ্রামের বাড়ি ফেনীর পরশুরামে। সম্রাটরা তিন ভাই। এক ভাই সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। আরেক ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন।

রাজধানীতে ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া র্যাবের অভিযানে আটক হন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর ধরা পড়েন আরেক যুবলীগ নেতা জি কে শামীম। এ দুজনই অবৈধ আয়ের ভাগ দিতেন সম্রাটকে। তারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাটের অবৈধ ক্যাসিনো সাম্রাজ্য নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। এতে বেকায়দায় পড়েন সম্রাট। কিন্তু সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযান শুরুর প্রথম তিন দিন দৃশ্যমান ছিলেন তিনি। ফোনও ধরতেন। কয়েক দিন কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়েও অবস্থান করেন সম্রাট। ভূঁইয়া ম্যানশনে অবস্থানকালে শতাধিক যুবক তাকে পাহারা দিয়ে রাখছিলেন। সেখান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে যান সম্রাট। এরপর তার অবস্থান নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত একটি আদেশ দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে পাঠানো হয়। তার ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়, সম্রাটের ব্যাংক হিসাবে কী পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়েছে, তার হিসাব দিতে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads