• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

আইন-আদালত

ওসি মোয়াজ্জেমের সর্বোচ্চ শাস্তির আশা রাষ্ট্রপক্ষের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৯

মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিওতে ধারণ করে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার নুসরাত হত্যায় ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম এক প্রতিক্রিয়ায় এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, মামলায় এ পর্যন্ত আটজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সাক্ষীরা যা সাক্ষ্য দিয়েছেন তার বিবেচনায় দেখা যায়, রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য বাকি আছে। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলে মামলাটি শেষ পর্যায়ে চলে আসবে। রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে, এ বছরেই রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং রায়ে আসামির সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হবে।

তিনি আরো বলেন, নুসরাতের ভিডিও ওসি মোয়াজ্জেমের নিজের মোবাইলে ধারণ করে ট্রান্সফারের বিষয়টা অ্যাডমিটেড ফ্যাক্টস।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, নুসরাতের ভিডিও ধারণ করেন আসামি মোয়াজ্জেম ঠিকই, তবে এটা তার মোবাইল থেকে সম্প্রচার বা প্রকাশ করা হয়নি। এটা সিআইডির ফরেনসিক রিপোর্টেও এসেছে। একটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি মাদরাসার অধ্যক্ষের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ভিডিও ধারণ করেছেন তিনি। মামলাটি হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে। আমরা আশা করছি আসামি মোয়াজ্জেম মামলা থেকে খালাস পাবেন।

নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের নামে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি মোয়াজ্জেম। পরে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ছড়িয়েও দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। এরপর বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ২৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা মামলার ১২৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালে। এরপর বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে গত ১৬ জুন দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

মামলাটিতে এ পর্যন্ত বাদী, নুসরাতের মা ও ভাইসহ আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষী বাকি আছে। আগামী ৩০ অক্টোবর তার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে কৌশলে একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। পাঁচ দিন পর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত মারা যান। এ ঘটনায় দায়ের মামলায় ১৬ আসামিকেই মৃত্যুদণ্ড দিলেন আদালত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads