• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
কুলাউড়ায় দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি রাখায় ২৬ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

আইন-আদালত

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

কুলাউড়ায় দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি রাখায় ২৬ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

  • কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২১ মার্চ ২০২০

করোনার অজুহাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তাদের হয়রানি বন্ধের জন্য অভিযানে উপজেলা প্রশাসন। গত দুই দিনে পৃথক ভাবে বিভিন্ন বাজারে এ অভিযান পরিচালনা করে ২৬ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজরাতুন নাঈমের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত। অসাধু ব্যবাসায়ীরা ইচ্ছা মতো ক্রেতাদের কাছ থেকে গলা কাটা দাম নিচ্ছেন এমন অভিযোগে বাজারে মনিটরিংয়ে মাঠে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়ারদৌস হাসান, ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী প্রমুখ।

জানাযায়, শুক্রবার রাতে উপজেলার ভাটেরা বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় ভাটেরা ট্রেডার্সকে ৫০ হাজার টাকা ও বরমচালে ৬ প্রতিষ্ঠানকে মোট ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। রবিরবাজারে দোকান মালিক মুহিত দেবকে ৫ হাজার, মাসুক মিয়াকে ৫ হাজার, জাহিদ মিয়াকে ৫ হাজার, হারুনুর রশীদকে ৫ হাজার, শমরেন্দ্রকে ৫ হাজার, জয়নাল মিয়াকে ৮ হাজার, আব্দুর নুরকে ৫ হাজার, বিময় দেবকে ১০ হাজার, কামাল মিয়াকে ৮ হাজার ও ফয়েজ উদ্দিনকে ৬ হাজারসহ মোট ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করেন এসিল্যান্ড নাজরাতুন নাঈম।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে কুলাউড়া শহরের সিকান্দার স্টোরকে ২০ হাজার টাকা, সাইফুদ্দিন ব্রার্দাসকে ৩০ হাজার টাকা, জলিল এন্ড ব্রাদার্সকে ৫ হাজার টাকা ও ব্রাহ্মণবাজার কানু স্টোরকে ১০ হাজার টাকাসহ মোট ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

এদিকে পৌর শহরের দক্ষিণ বাজার এলাকায় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৩০-৩৫ টাকা বেশি করে পেঁয়াজের মূল্যে রাখার অভিযোগে ৫ হাজার টাকা, আজমল এন্ড সন্সকে ৪ হাজার টাকা ও আতাউর এন্ড ব্রাদার্সকে ৪ হাজার টাকা, হাসান ট্রেডার্সকে বেশি দামে সার্জিক্যাল মাস্ক বিক্রি করায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন এসিল্যান্ড নাজরাতুন নাঈম।

এছাড়া স্টেশন রোডের পাকশী রেষ্টুরেন্টের লাইসেন্স না থাকায় ১০ হাজার টাকা, গ্রীণভিউ রেস্টুরেন্টকে অপরিষ্কার এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি ও সংরক্ষণের অভিযোগে ৬ হাজার টাকাসহ মোট ৩৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তার পরও অসাধু ব্যবসায়ীদের লাগামহীন দ্রব্য মূলে নাকাল ক্রেতারা। সর্বত্র ঠিকই চড়ামূল্যে বিক্রি করছেন ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় পেঁয়াজ। কুলাউড়া শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পেঁয়াজের দাম নির্ধারিত দামের চেয়ে ৪০-৪৫ টাকা করে বেশি দামে বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

করোনার আতঙ্কের সুযোগে ব্যবসায়ীদের এমন অসাধু বাণিজ্যের বিষয়টি গত দুইদিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাউর হলে এ নিয়ে সমগ্র উপজেলা জুড়ে চলছে সমালোচনা।

সরেজমিন দেখা যায়, কুলাউড়া শহরের উত্তরবাজার, দক্ষিণবাজার, স্টেশন রোড, কুলাউড়ার সর্ববৃহৎ রবিরবাজার ও ব্রাহ্মণবাজার, ভাটেরা বাজার, ভূকশিমইল নবাবগঞ্জ বাজার, বরমচালের কালা মিয়ার বাজার, ফুলেরতল বাজার, কর্মধার কাঁঠালতলী বাজার, রাউৎগাঁও পীরের বাজার, গাজীপুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে কেজি প্রতি পেঁয়াজ নির্ধারিত দামের চেয়ে ৪০-১০০ টাকা বেশি নিচ্ছেন।

কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজল বলেন, করোনার সুযোগ নিয়ে সম্মানীত ক্রেতাদের যাতে হুয়রানি করে পেঁয়াজের দাম বেশি না রাখা হয় সেজন্য আমরা ব্যবসায়ীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যে দাম রয়েছে সেই দামে ক্রেতাদের কাছে পণ্যে বিক্রি করতে হবে। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সচেতন করার জন্য শহরে মাইকিং করানো হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কুলাউড়া শহর ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন পাইকারী ও খুচরা দোকানে মনিটরিংয়ের পাশাপাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। করোনা আতঙ্কের সুযোগ নিয়ে কোন ব্যবসায়ীরা যাতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি না করতে পারে সেজন্য বাজার সমিতিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শহরে মাইকিং করানোর জন্য। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত উপজেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads