• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪২৯
সাংবাদিক আরিফুলের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে হাইকোর্ট

ছবি : সংগৃহীত

আইন-আদালত

সাংবাদিক আরিফুলের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে হাইকোর্ট

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৩ মার্চ ২০২০

অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে হাইকোর্ট।

সোমবার (২৩ মার্চ) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

মধ্যরাতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য আরিফুলের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা’।

আদালতে সাংবাদিক আরিফের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা।

দুপুরে শুনানিকালে সাংবাদিক আরিফুলকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে কিনা জানতে চান আদালত।

জবাবে আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, মামলা করেনি। তবে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কিন্তু তা মামলা হিসাবে গ্রহণ করেনি।

এরপর থানায় দায়ের করা অভিযোগে ডানহাত পক্ষঘাতগ্রস্ত থাকা সত্ত্বেও আরিফুল ইসলাম কিভাবে স্বাক্ষর করলেন সে বিষয়ে জানতে চান আদালত।

এসময় আদালতে উপস্থিত আরিফুল ইসলাম জানান, আমি বামহাত দিয়ে অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছি।

এরপর আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমার বক্তব্য শোনেন। তিনি আদালতকে বলেন, আমরা কেউই আইনের উর্ধ্বে নই। তখন আদালত বলেন, ধন্যবাদ, রাষ্ট্রপক্ষের কাছ থেকে যখন এমন কথা বলা হয় তখন আমাদের ভালোলাগে।

প্রতিকার চাকমা আদালতকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বিভাগীয় প্রক্রিয়া গ্রহণ করছে। অভিযোগটি গ্রহণ করা হবে নাকি হবেনা সে বিষয়ে কুড়িগ্রামের এসপির সঙ্গে কথা বলেছি।

তখন আদালত বলেন, যেকোন সাধারণ নাগরিক বা যে কেউ যখন থানায় অভিযোগ দিতে যাবে তখন তা অন্তর্ভুক্ত করে তদন্ত করাই তার (ওসি) দায়িত্ব। সেখানে আরিফুল ইসলামের মত সাংবাদিকের এই অবস্থা (সাংবাদিকের অভিযোগ মামলা হিসাবে গ্রহণ না করা) হলে সাধারণ মানুষের কি হবে? থানায় ফোন করে দিলেও অভিযোগ নিতে হবে। তারপর তদন্ত করে জানাবে কি আছে কি নেই। অভিযোগ গ্রহণ করা তার প্রধান দায়িত্ব। ক্রিমিনাল মামলায় সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওনার (সাংবাদিক আরিফুল) বিচার পাওয়ার ডিমান্ড নষ্ট হবে। আসামীরা এর বেনিফিট পাবে। তখন আরিফুলকে তার নিজের পক্ষে অনেককিছু প্রমাণ করা নিয়ে কত কাহিনী হবে! ফৌজদারী অপরাধের বিচার এখানে হবে, কোর্ট করবে।

আদালত আরও বলেন, এটা ফৌজদারী অপরাধ, এটা আইনগতভাবে এগোবে। এ বিষয়ে বিভাগীয় পদক্ষেপ হিসাবে প্রতিমন্ত্রী বেশ ভালো উদ্যোগ নিয়ে বলেছেন, কোন ব্যক্তির দায় সরকার নেবে না। তবে রাতারাতি তো সবকিছু ঠিক হবে না! তাই আমরা এ রিটের প্রেক্ষিতে রুল জারি করছি।

তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ফৌজদারী আইনের ৫৬১ ধারার ক্ষমতাবলে এ মামলাটি বাতিল করার ক্ষমতা আপনাদের রয়েছে।

জবাবে আদালত বলেন, ৫৬১ ধারা তখনই কার্যকর হবে যখন কোন মামলা বিচারিক আদালত বা ট্রাইব্যুনালের পেন্ডিং থাকবে। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত সাধারণ বিচারিক প্রক্রিয়া না। এই মামলায় এতো অসঙ্গতি রয়েছে যে আমাদের আর কিছু করার নেই (আদেশ দেওয়া ব্যতিত)। আমরা রুল জারি করবো, শুনবো। মামলার আইনজীবী অনেক গবেষণা করেছেন। এখানে অনেক ত্রুটি আছে। ১৩ তারিখে (গত ১৩ মার্চ) মামলা শুরু হয়ে পরদিন ১৪ তারিখে (গত ১৪ মার্চ) শেষ হলো, এমনটা আমরা কখনো দেখিনি। তবে আমরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারি। হারুক-জিতুক আরিফুল যেন বলতে পারে, আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে সেবনের কোন অভিযোগ নেই। অথচ অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও মাদক সেবনের অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এই মামলা নিয়ে আমরা অনেক সব নথি, তথ্য-উপাত্ত পরীক্ষা করেছি এবং এখন আদেশ দিচ্ছি।

এরপর আদালত তার আদেশে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতনের ঘটনায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ এজাহার হিসাবে গ্রহণ করতে সংম্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads