• মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪২৯
সন্তানদের সঙ্গে চার রাত থাকতে পারবেন জাপানি মা: হাইকোর্ট

সংগৃহীত ছবি

আইন-আদালত

সন্তানদের সঙ্গে চার রাত থাকতে পারবেন জাপানি মা: হাইকোর্ট

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

জাপানি মা নাকানো এরিকো তার সন্তানদের নিয়ে বাইরে যেতে পারবেন ও চার রাত সন্তানদের সঙ্গে থাকতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সেইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অপপ্রচারমূলক কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  এর পাশাপাশি কক্ষের ভেতরে যেসব সিসি ক্যামেরা আছে তা সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। 

জাপানি মায়ের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে নাকানো এরিকোর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে বাবা শরীফ ইমরানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।

আগামী ৯, ১১, ১৩ ও ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে মা সন্তানদের সঙ্গে কাটাবেন। তখন বাবা থাকবেন না বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মা-বাবা উভয়ই আলাদাভাবে সন্তানদের নিয়ে বাইরে ঘোরাফেরা করতে পারবেন। 

সিআইডিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অপপ্রচারমূলক কনটেন্ট আপলোডকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

এর আগে গত ১৯ আগস্ট শরীফ ইমরানের জিম্মায় থাকা দুই শিশু সন্তানকে ৩১ আগস্ট হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত। শিশুদের মা এরিকোর করা রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এসব আদেশ দেন।

পরে দুই শিশুকে নির্যাতনের অভিযোগে তাদের মা পৃথক মামলা দায়ের করলে গত ২২ আগস্ট শিশুদের উদ্ধার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। এরপর তাদের তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছিল।

২০০৮ সালে এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি-আমেরিকান শরীফ ইমরানের (৫৮) বিয়ে হয় এবং তারা টোকিওতেই বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে আসে তিন কন্যাসন্তান।  তারা তিনজনই টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের শিক্ষার্থী ছিল। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি তাদের বিয়েবিচ্ছেদ হয়। ২১ জানুয়ারি ইমরান আমেরিকান স্কুল ইন জাপান কর্তৃপক্ষের কাছে তার মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করেন।  কিন্তু এতে স্ত্রী এরিকোর সম্মতি না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ইমরানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এর পরদিন জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা স্কুল বাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে ইমরান তাদের অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

২৫ জানুয়ারি শরীফ ইমরান তার আইনজীবীর মাধ্যমে এরিকোর কাছ থেকে মেয়েদের পাসপোর্ট হস্তান্তরের আবেদন করেন। কিন্তু এরিকো ওই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে মেয়েদের নিজ জিম্মায় পেতে আদেশ চেয়ে ২৮ জানুয়ারি টোকিওর পারিবারিক আদালতে মামলা করেন।

আদালত ৭, ১১ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি মেয়েদের সঙ্গে এরিকোর সাক্ষাতের অনুমতি দিয়ে আদেশ দেন। কিন্তু ইমরান আদালতের আদেশ ভঙ্গ করে মাত্র একবার মায়ের সঙ্গে দুই মেয়েকে সাক্ষাতের সুযোগ দেন। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি ‘মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে’ ইমরান তার মেয়েদের জন্য নতুন পাসপোর্ট করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে নিয়ে তিনি দুবাই হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। এরই মধ্যে ৩১ মে টোকিওর পারিবারিক আদালত জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে তাদের মা এরিকোর জিম্মায় দেওয়ার আদেশ দেন। এ নিয়ে এরিকো বাংলাদেশের একজন মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। ১৮ জুলাই তিনি শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসেন এবং তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ থাকার পরও ইমরান রিপোর্ট অবিশ্বাস করে সন্তানদের সঙ্গে তাকে সাক্ষাতে অস্বীকৃতি জানান। ২৭ জুলাই এরিকোর মোবাইল সংযোগ বন্ধ করে চোখ বাঁধা অবস্থায় মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়। এ অবস্থায় দুই মেয়েকে নিজের জিম্মায় পেতে হাইকোর্টে রিট করেন জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads