• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪২৯

আইন-আদালত

কুমিল্লার ঘটনায় ইকবালসহ চার জনের ৭ দিনের রিমান্ড

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৩ অক্টোবর ২০২১

পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মো. ইকবাল হোসেনসহ চারজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

আজ শনিবার (২৩ অক্টোবর) কুমিল্লার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মিথিলা জাহান নিপা এ আদেশ দেন।

দুপুরে পুলিশ তাকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিথিলা জাহানের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসময় ৯৯৯ এ ফোন করা ইকরাম, ফয়সাল ও হুমায়ুনেরও ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল মণ্ডপে কোরআন রাখার কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার বিস্তারিত জানতে ইকবালসহ ৪ জনকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে।

এর আগে শুক্রবার দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে তাকে কক্সবাজার থেকে কুমিল্লায় আনা হয়।

এর আগে ইকবালকে কক্সবাজার সৈকত থেকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। ইকবাল হোসেন কুমিল্লা নগরীর পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন শরীফ সংগ্রহ করে নানুয়ারদীঘির পাড় পূজামণ্ডপে রাখেন। বিষয়টি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত হয়।

বুধবার গণমাধ্যমে ইকবাল হোসেনের নাম আসায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তবে কোরআনটি কোথায় থেকে আনা হয়েছিল এটা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নানুয়ার দীঘির পাড়ের অদূরে দারোগাবাড়ি মাজারের মসজিদ থেকেই কোরআন শরীফটি সংগ্রহ করে মণ্ডপে রাখেন ইকবাল।

১৭ মিনিটের ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন রাতে কয়েক দফায় ইকবাল হোসেন মাজার সংলগ্ন মসজিদে প্রবেশ করেন। রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে তিনি মসজিদে যান। পরে বের হয়ে আসেন। এ সময় মসজিদে দুইজন মুসল্লি ছিলেন। পরে আবার রাত ২টা ১২ মিনিটে মসজিদের একটি বক্স থেকে কোরআন নামিয়ে ফ্লোরে রেখে বের হয়ে যান। সর্বশেষ রাত ২টা ১৭ মিনিটে আবারও মসজিদে গিয়ে কোরআন হাতে বের হয়ে যান।

ঘটনাস্থলের আশেপাশের অন্তত ১২টি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে মণ্ডপে কোরআন রাখা যুবক ইকবাল হোসেন বলে নিশ্চিত হলেও এর নেপথ্যে কে বা কারা- সে বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ইকবাল সুজানগরের নুর আহমেদ আলমের বড় ছেলে। পরিবারের তিন ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে ইকবাল হোসেন সবার বড়। এলাকায় ভবঘুরে হিসেবে পরিচিত ইকবাল প্রায়ই নেশা করতো। নেশার টাকার জন্য পরিবারের শোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হতো সে। কখনো বাস চালকের সহকারী, কখনো রং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করলেও নেশার জগতে পা রাখায় কোথাও তাকে লোকজন কাজে রাখতে চাইতো না। প্রথম বিয়ে করেন বরুড়ায়। আয়েশা বেগম নামে তার সেই স্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ বছর আগে বিচ্ছেদ হয়। সেই সংসারে তার এক ছেলে রয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ে করেন চৌদ্দগ্রামের কাদৈ গ্রামের রুমি আক্তারকে। অন্তঃসত্ত্বা রুমিও তাকে ছেড়ে গেছেন। আদালতে মামলাও করেছেন। সেই সংসারে তার একটি মেয়ে আছে।

গত ১৩ অক্টোবর নগরীর নানুয়ারদীঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় কুমিল্লা নগরের কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এছাড়া জেলার সদর দক্ষিণ ও দাউদকান্দির দুটি মণ্ডপে হামলা হয়।

এর জেরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, রংপুরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় পাঁচটি, সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দুটি, দাউদকান্দি ও দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা হয়। এসব মামলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads