• মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪২৯
প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড

সংগৃহীত ছবি

আইন-আদালত

প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ৩১ জানুয়ারি ২০২২

কক্সবাজারের আলোচিত সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল আজ সোমবার বেলা সোয়া চারটার দিকে এই রায় ঘোষণা করেন।

এছাড়াএসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত ও পুলিশের তিন সোর্সসহ ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন এপিবিএনের তিন সদস্যসহ সাতজন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পুলিশের এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, রুবেল শর্মা, মোহাম্মদ আইয়াজ আয়াছ, সাগর দেব, নুরুল আমিন এবং নিজাম উদ্দিন।

খালাস পাওয়া সাতজন হলেন এপিবিএনের তিন সদস্য এসআই মো. শাহজাহান আলী, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, কনস্টেবল রাজিব হোসেন, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল ছাফানুল করিম, কনস্টেবল কামাল হোসাইন আজাদ কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। আদালতপাড়ার চারপাশে, পয়েন্টে পয়েন্টে অবস্থান নেয় নিরাপত্তাকর্মীরা। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা বিভাগের লোকজন কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে। এমন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বেলা ২টার দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে ১৫ আসামিকে কারাগার থেকে কক্সবাজারের জেলা আদালতে আনা হয়। পরে লাইন ধরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় এজলাস কক্ষে, দাঁড় করানো হয় কাঠগড়ায়।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা।

হত্যাকাণ্ডের চারদিন পর ৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে হত্যা মামলা করেন। মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করা হয়।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত। কক্সবাজারের র‌্যাব-১৫ মামলাটির তদন্তভার পায়।

ওই বছরের ৭ আগস্ট মামলার আসামি সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিন বাসিন্দা, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও ওসি প্রদীপের দেহরক্ষীসহ আরও সাতজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর ২০২১ সালের ২৪ জুন মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি কনস্টেবল সাগর দেবের আদালতে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে আলোচিত এই মামলার ১৫ আসামির সবাই আইনের আওতায় আসেন।

এ মামলায় চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ৮৩ জন সাক্ষীসহ অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৫ জনকে আসামি করে দায়ের করা অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে একটি পরিকল্পিত ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার ১৫ আসামি হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব, বরখাস্ত এপিবিএনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ। এছাড়া রয়েছেন টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

দীর্ঘশুনানি, সাক্ষীদের জবানবন্দি, জেরা ও আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে গত ১২ জানুয়ারি রায়ের জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন বিচারক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads