• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
কোরবানির পশু ঢাকায় আসা শুরু

ঢাকায় আসতে শুরু করেছে কোরবানীর পশু

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

কোরবানির পশু ঢাকায় আসা শুরু

প্রস্তুত দক্ষিণের ৭ হাট, ৬টির স্পট টেন্ডার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ আগস্ট ২০১৮

কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় ছয়টি হাটের স্পট টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারাদার চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি)। তবে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা পাওয়া সাতটি হাটের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বেশ আগেই। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই হাটগুলোয় আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। চলছে মাইকিং করে হাটের প্রচারণাও।

এদিকে ইজারা চূড়ান্ত না হওয়া হাটগুলোও প্রস্তুত পশু কেনাবেচার জন্য। ইজারা চূড়ান্ত না হওয়া হাটগুলোতে পশু কেনাবেচার ওপর ধার্য হাসিলের একটি অংশ পাবে সিটি করপোরেশন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জিগাতলা, হাজারীবাগ লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন মাঠ ও আশপাশের এলাকার পশুর হাটের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালেই। ১৫ আগস্ট শোক দিবসের কর্মসূচি থাকায় ওই দিন গভীর রাত থেকেই হাট প্রস্তুতির কাজ শুরু হয় বলে জানান ইজারাদার জাহিদুল ইসলাম রাজিব। এ বছর এক কোটি ১৫ লাখ টাকা সর্বোচ্চ দর হাঁকিয়ে হাজারীবাগ হাটটির ইজারা পান তিনি। বিগত বছরগুলোয়ও রাজিব এই হাটের ইজারা পেয়ে আসছেন।

রাজিব বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি থাকায় হাটের পুরোপুরি প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ওইদিন গভীর রাত থেকেই হাটের কাজ শুরু হয়। সকালের মধ্যেই মূল হাটের পশুর খোয়াড় ও ক্রেতাদের চলার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে নির্ধারিত সীমানার বাইরে হাটের বিস্তৃতির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্ধারিত জায়গায় বাইরে হাট বসছে না। হাটের ভেতরে পশুর রাখার জায়গা সঙ্কুলান না হলেই বাইরে রাখা হচ্ছে।

হাজারীবাগ পশুর হাট থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গার হাটটির ইজারা পেয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির পক্ষে সহসভাপতি হাজী শফি মাহমুদ। এ বছর ১১ লাখ সাত হাজার ১৫০ টাকা সর্বোচ্চ ধরে এই হাটটির ইজারা দেওয়া হয়েছে। পশু কেনাবেচার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ডিএসসিসির এই হাটটিও। এরই মধ্যে পশুবোঝাই ট্রাক আসতে শুরু করেছে রহমতগঞ্জের এই হাটে। কামরাঙ্গীরচর চেয়ারম্যান বাড়ির মোড় সংলগ্ন হাটটির ইজারা পেয়েছেন মো. আবুল হোসেন সরকার। ৫০ লাখ ২০ হাজার টাকা দরে এ বছর হাটটির ইজারা নিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে হাটের সব প্রস্তুতি শেষ করে হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দুপুর থেকেই পশু আসতে শুরু করেছে এই হাটে।

তবে হাজারীবাগ, রহমতগঞ্জ ও কামরাঙ্গীরচর চেয়ারম্যান বাড়ির তিনটি হাট পাশাপাশি হওয়ায় পশুবাহী ট্রাক প্রবেশ নিয়ে বরাবরের মতো এ বছরও দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, নির্ধারিত সীমানা ছাড়িয়ে হাট বসানোই তিনটি হাটই হাজারীবাগ বেড়িবাঁধের কালুনগর এলাকায় এসে মিলিত হয়। পাশাপাশি হাট তিনটিতে পশু প্রবেশের প্রধান যাতায়াত ব্যবস্থা হলো বেড়িবাঁধ সড়ক। গাবতলী থেকে শুরু হওয়া সদরঘাট পর্যন্ত এ সড়কের দুই পাশে রয়েছে পাঁচটি পশুর হাট। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গাবতলী পশুর হাট, বসিলা ব্রিজ সংলগ্ন পুলিশ লাইনসের খালি জায়গার হাটও রয়েছে এই সড়কের পাশেই। হাট পাঁচটিতে পশুবাহী ট্রাক প্রবেশের একমাত্র সড়ক হিসেবেই বেড়িবাঁধ সড়কটি ব্যবহূত হচ্ছে।

কামরাঙ্গীরচর হাটের ইজারাদার আবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার হাটের ব্যানার লাগানো গরুর ট্রাক হাজারীবাগ রোডে অন্য হাটের ইজারাদারের লোকজন আটকে দেয়। অনেক সময় বেপারিদের জিম্মি করে ট্রাক থেকে পশু নামিয়ে রাখাও হয়। এ বছরও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছি। আশা করি সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন ট্রাক আটকে রাখার বিষয়টি রোধ করবেন।

এদিকে ইজারা না পাওয়া ব্রাদার্স ইউনিয়ন খেলার মাঠ, গোপীবাগ, কমলাপুর এলাকার ডিএসসিসির হাটটি ইজারাদার চূড়ান্ত না হলেও স্পট টেন্ডারের মাধ্যমে এই হাটের পশু কেনাবেচা করবেন মো. আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় এই হাটের স্পট ইজারাদার হিসেবে আমাকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। হাটে পশু কেনাবেচার ওপর ধার্য করা হাসিলের একটা অংশ সিটি করপোরেশন পাবে।

ডিএসসিসির অন্য হাটের মধ্যে শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠ সংলগ্ন হাটের ইজারা পেয়েছেন আবদুল লতিফ। এ বছর আট লাখ ২০ হাজার টাকা সর্বোচ্চ দর দেওয়ায় তাকে ইজারাদার চূড়ান্ত করা হয়েছে।

পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গার হাটটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও শ্যামপুর বালু মাঠসংলগ্ন খালি জায়গার হাটটি এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা সর্বোচ্চ দরে ইজারা পেয়েছেন শেখ মাসুদ রহমান। গত বছরের মতো এ বছরও ডিএসসিরি সবচেয়ে বড় পশুর হাট সাদেক হোসেন খেলার মাঠটির ইজারাদার চূড়ান্ত হয়নি। এ বছরও স্পট ইজারার মাধ্যমে এই হাটে পশু কেনাবেচা করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক। তিনি বলেন, সাদেক হোসেন খেলার মাঠ ছাড়াও কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর স্টেডিয়াম সংলগ্ন হাট, আরমানিটোলা খেলার মাঠ, ধুপখোলা ইস্ট এন্ড ক্লাব মাঠ, দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন হাটেরও ইজারাদার চূড়ান্ত না হওয়ায় স্পট ইজারার মাধ্যমে পশু কেনাবেচা করা হবে। স্পট ইজারার মাধ্যমে সিটি করপোরেশনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্ক্ষা নেই বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads