• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা

পরিকল্পনা কমিশন

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

৩৯ প্রকল্প অনুমোদনের বিরল রেকর্ড

বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ নভেম্বর ২০১৮

এক দিনে ৩৯ উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের বিরল রেকর্ড গড়েছে পরিকল্পনা কমিশন। গতকাল রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সংখ্যার বিচারে প্রকল্প অনুমোদনের এ রেকর্ড হয়েছে। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেকে অনুমোদন পাওয়া ৩৯ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৮৬ হাজার ৬৮৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এসব প্রকল্পে ব্যয় হবে ৬৬ হাজার ৪৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো নিজেদের তহবিল থেকে ব্যয় করবে ৩১৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ১৯ হাজার ৯০৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা ঋণ ও অনুদান হিসেবে দিতে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে চলমান সরকারের মেয়াদ ফুরিয়ে এসেছে। আগামী ৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় শেষ মুহূর্তে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেহিসাবি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আগামী কয়েক মাস একনেক সভা না হলে নতুন প্রকল্প নেওয়া যাবে না। বিষয়টি বিবেচনায় কাজ এগিয়ে রাখার জন্য প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে অনুমোদন হওয়া সব প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু না হতে পারে বলেও জানান মন্ত্রী। তাছাড়া নির্বাচনের তফসিলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হলে সরকারের চলতি মেয়াদেই একনেকের আরো সভা হবে বলে তিনি জানান।

জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৪ হাজার ২৫০ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান রেললাইনের পাশে ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ হবে। পৃথক প্রকল্পের আওতায় প্রক্রিয়াধীন যমুনা রেল সেতু ব্যবহার করে এ লাইনে ট্রেন চলাচল করবে। এতে আর্থিক সহায়তা দেবে চীন।

৯৭৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করেছে একনেক। ঢাকার গুলশানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আবাসন প্রকল্পে ব্যয় হবে ১১৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ৬৪৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয় ধরে পুলিশের যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ডুবরি ইউনিট সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা। র্যাবের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে পৃথক প্রকল্প।

১০ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরে পূর্বাচল লিঙ্ক রোডের উভয় পাশে ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৩ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন করা হয়েছে পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৭০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশ ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ ৪ লেনে উন্নয়ন প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নতুন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১১২ কোটি টাকা।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের টাঙ্গাইল পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন, ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা লেক উন্নয়ন, কুমিল্লা জেলার ৫ পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো, দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন, গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, ফরিদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো, বৃহত্তর ঢাকা গ্রামীণ অবকাঠামো, তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন ও পশ্চাৎপদ কুড়িগ্রাম ও জামালপুর জেলার দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক।

এর বাইরে টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়ক (জেড-১০৯৯) হাড়িয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ অংশ পুনর্নির্মাণ, প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ, গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ, গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসই করার লক্ষ্যে হেরিং বন্ড (এইচবি), বঙ্গমাতা ন্যাশনাল সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার রিসার্চ সেন্টার স্থাপন, মুগদা মেডিকেল কলেজের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি সম্প্রসারণ, সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ, ন্যাশনাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (১ম সংশোধন), বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ (১ম সংশোধিত), বিএআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লিমিটেড (১ম সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads