• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
শেখ হাসিনার নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়

একনেক সভা

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

একনেক সভা

শেখ হাসিনার নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ নভেম্বর ২০১৮

নেত্রকোনায় প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। এ লক্ষ্যে অধিগ্রহণ করা হবে ৫০০ একর জমি। নির্মাণ করা হবে ১০ তলাবিশষ্ট তিনটি একাডেমিক ভবন, শিক্ষার্থীদের চারটি হল ও প্রশাসনিক ভবন। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্যও থাকবে আবাসনের ব্যবস্থা। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এ লক্ষ্যে ২ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সভায় মোট ২৮ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩০ হাজার ২৩৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৮৫৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো নিজেদের তহবিল থেকে ব্যয় করবে ৫৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী রূপ দিতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। গবেষণাধর্মী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, সামাজিক বিজ্ঞান ও বাণিজ্যের বিষয়গুলো পড়ানো হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরসহ এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হবে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর কাজ শেষ করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোনা কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রী আরো জানান, হাওর অঞ্চলের এ বিশ্ববিদ্যালয়ে হাওরের অর্থনীতি ও উন্নয়ন নিয়ে গবেষণা করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। জয়িতা ফাউন্ডশনের সক্ষমতা বির্নিমাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ।

১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চা বাগান কর্মীদের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ৭৪৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ, ৬২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্থাপন, ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে মাদারীপুরে সরকারি অফিসগুলোর জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সারা দেশে ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখননে নেওয়া প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম-খুলনা-রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পে ১ হাজার ২২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, র্যাব ফোর্সের আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে ১ হাজার ৩৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়নে ১ হাজার ৯৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, সোনাগাজী ৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ৭৪৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া, বীজ প্রত্যয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ, চট্টগ্রামে ৩৬ পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি চাকুরেদের আবাসিক ফ্ল্যাট, আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ বিশেষ ধরনের পন্টুন নির্মাণ, বৃহত্তর নোয়াখালীর পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, বৃহত্তর রাজশাহীর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, রোহিঙ্গাদের জন্য বহুমুখী সেবা প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া পরিকল্পনামন্ত্রীর পক্ষ থেকে অনুমোদন দেওয়া ১৫টি প্রকল্প অবগতির জন্য গতকাল উপস্থাপন করা হয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে আকাশ আলোকচিত্র ধারণের মাধ্যমে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার বৃহৎ স্কেলের টপোগ্রাফিক্যাল মানচিত্র প্রণয়ন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দায় শেখ হাসিনা সেতু এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র, নোয়াখালীর হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপে পর্যটন কেন্দ্র, চরফ্যাশন পৌর সভার অবকাঠামো উন্নয়ন, বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা হতে রুমা পর্যন্ত পল্লী সড়ক নির্মাণ, প্রত্যন্ত এবং চর এলাকায় সৌরশক্তি, নদীর ভাঙন থেকে খুলনা শহরের সরকারি স্থাপনা রক্ষা, খুলনা মিলিটারি কলেজিয়েট স্কুলের অবকাঠামো, যশোর বিএএফএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, বাসস’র সাংবাদিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অনলাইনে গণগ্রন্থাগারগুলোর ব্যবস্থাপনা, মোহনগঞ্জ উপজেলায় শৈলজারঞ্জন সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ এবং দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি পরিচালনা প্রকল্প।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads