• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
দেশেই হচ্ছে বিশ্বমানের গবেষণাগার

দেশেই হচ্ছে বিশ্বমানের গবেষণাগার

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

দেশেই হচ্ছে বিশ্বমানের গবেষণাগার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। রাজধানীর মহাখালীতে ‘বঙ্গমাতা ন্যাশনাল সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার রিসার্চ সেন্টার’ নামে এই প্রতিষ্ঠানের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, দেশের চিকিৎসা গবেষণা উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া ও রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে দেশের মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদানে সহায়তা করার ক্ষেত্রে এই রিসার্চ সেন্টার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এছাড়া দেশি ও আন্তর্জাতিক মানের সব পর্যায়ের গবেষকদের একসঙ্গে কাজ করার একটি প্ল্যাটফর্ম হবে এই গবেষণাগারটি। চিকিৎসাশাস্ত্রে নতুন নতুন গবেষক তৈরির পাশাপাশি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকছে এই গবেষণাগারে। এই গবেষণাগারে সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের জেনেটিক প্যাটার্ন এবং এ সম্পর্কিত গবেষণা চালানো যাবে। দেশের মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজনে রোগ, রোগীর তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও গবেষণা এবং আধুনিক জীবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের ওষুধ ও খাদ্য শিল্পের উন্নয়নে সহায়তা করাই হবে এই সেন্টারের কাজ।

ইতোমধ্যেই বঙ্গমাতা ন্যাশনাল সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার রিসার্চ সেন্টার স্থাপন সংক্রান্ত একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫০৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়- স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ কর্তৃক এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে-একটি মেধাবী, সুস্থ ও দক্ষ জাতি গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার টেকসই উন্নয়নের রোল মডেল স্বরূপ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার জন্য ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়ন করে চলেছে। যেখানে শিক্ষা, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নকে বিশেষভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি জনসাধারণ অধ্যুষিত এই দেশের অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত। দেশে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব রয়েছে, অন্যদিকে যুগোপযোগী রোগ নির্ণয় পদ্ধতি ও উন্নত প্রযুক্তির (মলিকুলার ও সেলুলার) মাধ্যমে রোগ শনাক্তকরণের সুবিধার অভাব রয়েছে। এর ফলে মানুষ বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের যথাযথ নির্ণয় ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর কারণে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দেশে এখন পর্যন্ত সুসংগঠিত ও প্রযুক্তিনির্ভর কোনো চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি, যেখানে রোগ নির্ণয়সহ যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণে ব্যবস্থা থাকবে। বাংলাদেশে চিকিৎসক, গবেষক ও নীতিনির্ধারকরা এদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তবে আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগ শনাক্তকরণের জন্য এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতকরণের জন্য ল্যাবরেটরি পরীক্ষার পাশাপাশি জেনেটিক ও মলিকুলার অ্যানালাইসিস করা হচ্ছে। প্রতিটি রোগের জেনেটিক প্যাটার্ন অ্যানালাইসিস করে পার্সোনালাইজড ড্রাগ থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। তাই, দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে বিশ্বমানে উন্নীত করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় ১৬ তলাবিশিষ্ট গবেষণা ভবন নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে ১০ তলাবিশিষ্ট কনভেনশন সেন্টার ও একটি ডরমিটরিও নির্মাণ করা হবে। ৫ তলাবিশিষ্ট বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, ৫ তলাবিশিষ্ট লিকুইড নাইট্রোজেন প্ল্যান্ট, ২ তলাবিশিষ্ট আউটডোর কিচেন বিল্ডিং, ৫ তলাবিশিষ্ট অ্যানিমেল প্ল্যান্ট বিল্ডিং, ২ তলাবিশিষ্ট ওয়েস্ট ডিসপোজাল প্ল্যান্ট বিল্ডিং, সংযোগ করিডোর ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। এছাড়া আধুনিক গবেষণা সরঞ্জাম, যানবাহন, অফিস সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র, চিকিৎসাবিষয়ক বই-পুস্তক সংগ্রহ করা হবে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানিয়েছেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। তবে এখনো অনেক কিছুই আন্তর্জাতিক মানের নয়, বিশেষ করে গবেষণা। এটিকে আরো উন্নত করতেই বঙ্গমাতা ন্যাশনাল সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার রিসার্চ সেন্টার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সেন্টারটি পুরোপুরি গড়ে উঠলে দেশের চিকিৎসাসেবা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads