• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯
‘২০২০’ সাল দারিদ্র্য নিরসনের বছর

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

মুজিববর্ষ

‘২০২০’ সাল দারিদ্র্য নিরসনের বছর

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৩১ জানুয়ারি ২০১৯

২০২০ সাল হবে মুজিববর্ষ। এ বছর বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। তাই ২০২০ সালকে স্মরণীয় করে রাখতে বছরজুড়ে থাকবে সরকারের উন্নয়নবান্ধব নানা কর্মসূচি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর এই বছরটিকে দেশে দারিদ্র্য নিরসনের বছর হিসেবেও ঘোষণা করবে সরকার। একই সঙ্গে রূপকল্প-২১ বাস্তবায়ন করতে চায় বর্তমান সরকার। এ জন্য বছরটিকে মুজিববর্ষ হিসেবে পালন করা হবে বলে জানিয়েছে সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্র।

এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আগামী দুই বছরের মধ্যে রূপকল্প-২১ বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের নেওয়া এই রূপরেখার মূল লক্ষ্য হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে দারিদ্র্য দূর করার পাশাপাশি দেশকে মধ্যম আয়ের কাতারে নিয়ে যাওয়া।

বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ দেশকে মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে নতুন উদ্যমে চলছে পরবর্তী অগ্রগতির কাজ। এ জন্য শতভাগ দারিদ্র্য দূর করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বর্তমান সরকার। পাশাপাশি রূপকল্প বাস্তবায়নে চলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দশ উদ্যোগের কাজ।

রূপকল্প ২০২১ ছিল ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী ইশতেহার। যেটি পরবর্তীতে ভিশন-২০২১ নামেও পরিচিতি লাভ করেছে। রূপকল্পের এই দর্শনটি একেবারেই আওয়ামী লীগের নিজস্ব ও প্রশংসনীয়, যা দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরের জন্য একটি রাজনৈতিক রূপরেখা হয়ে ওঠে। তাই ২০২০ সালের মুজিববর্ষের পরবর্তী বছর ২০২১ সালেই পালিত হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী।

সূত্র জানায়, ২০২০ সালকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন এবং ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রাও ঘোষণা করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো।

গত এক দশকে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে ২০২১ সালের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০১৫ সালেই তা অর্জিত হয়। তাই অচিরেই দেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া সরকার দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চায়। সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখেই কাজ করছে সরকার।

অন্যদিকে সমৃদ্ধ দেশ গড়তে গত এক দশকে বেশ কিছু অর্জন রয়েছে দেশের। নবজাতক ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস করা। স্বাস্থ্য খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, দারিদ্র্যবিমোচনে অগ্রগতি, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালনসহ আরো বেশ কিছু ইস্যুতে বাংলাদেশে একেবারেই প্রথম সারিতে। আবার নারীর ক্ষমতায়নেও অগ্রগতি লক্ষণীয়। নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ আগের চেয়ে এখন অনেক এগিয়ে।

এদিকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা, প্রবৃদ্ধি দুই ডিজিটে নিয়ে যাওয়া, বেসরকারি বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দেশকে মধ্যম আয়ে রূপান্তর এবং টেকসই স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে ৯০০ বিলিয়ন ডলারের অর্থসংস্থান এবং রফতানি বাড়াতে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা হবে।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করা হবে। গুণিজনদের আমন্ত্রণ করা হবে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে। সরকারিভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সচিব পর্যায়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। মুজিববর্ষের কর্মসূচি ২০২০ সাল থেকে শুরু হয়ে চলবে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত। ২০২০ সালের বছরজুড়ে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা, চিত্রাঙ্কন, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাসহ নানা রকমের বর্ণিল কর্মসূচি উদযাপিত হবে।

রূপকল্পে বিশেষ দশ উদ্যোগ

রূপকল্প ‘ভিশন-২১’ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে ‘শেখ হাসিনা বিশেষ উদ্যোগ’ নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচিতে দশটি খাত অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়ন করে চলছে সরকার।

এই খাতগুলো হচ্ছে— একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিট ক্লিনিক, শিশু বিকাশ, সামষ্টিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, পরিবেশ সুরক্ষা ও বিনিয়োগ বিকাশ।

এসব প্রকল্প অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর এবং এসডিজি অর্জনে এসব খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ-সম্পর্কিত চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) মূল ভাবনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সর্বজনীন মানব উন্নয়ন চিন্তার ব্যাপক মিল রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ভাবনা বাস্তবায়ন করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার যাবতীয় পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads