• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
সায়েন্স ফিকশনের কদর

সায়েন্স ফিকশনের কদর

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

সায়েন্স ফিকশনের কদর

  • সোহেল অটল
  • প্রকাশিত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মেলা শুরুর ১৯তম দিনটি পার হয়ে যাওয়ার পর বোঝা যাচ্ছে, সায়েন্স ফিকশনের বিশাল কদর রয়েছে এ দেশের পাঠক সমাজে। যারা নিয়মিত সায়েন্স ফিকশন লেখেন, তাদের বইয়ের বেচাবিক্রি দেখে প্রকাশকরা এমনই মনে করছেন। এ দেশে সায়েন্স ফিকশন রচনায় অগ্রপথিক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। হুমায়ূন সাহিত্যের পরপরই বেচাকেনায় জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন উঠে এসেছে। এ ঘটনা অবশ্য গত কয়েক মেলাতেই দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া নবীন ও পুরনো সাহিত্যিক যারা সায়েন্স ফিকশন রচনা করছেন, তাদের বইয়েরও কদর লক্ষ করা যাচ্ছে।

গতকাল কথাপ্রকাশ’র স্টলে গিয়ে দেখা গেল আগ্রহী পাঠকরা সাজ্জাদ কবীরের নতুন আসা বই ‘তারায় তারায় যুদ্ধ’ সংগ্রহ করছেন। তাদের মধ্যে মগবাজার থেকে আসা কলেজপড়ুয়া তরুণ সাব্বির হোসেন জানালেন, জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশন তার ভালো লাগে। তবে নতুন লেখকের সায়েন্স ফিকশনও তিনি পড়তে চান। সে কারণেই ওই বইটি সংগ্রহ করেছেন।

সাজ্জাদ কবীর বলেন, দেশে সায়েন্স ফিকশন লেখক খুব কম। অন্তত মানের দিক দিয়ে বললে এটা বলতে হয়। তবে এর মধ্যে অনেকে আছেন যারা ভালো লেখেন কিন্তু আমরা তা জানি না। এ কারণেই এ বছর অনেক নাম না জানা লেখকের সায়েন্স ফিকশন সংগ্রহ করলাম।

বাংলা একাডেমির দেওয়া তথ্যমতে গতকাল মঙ্গলবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নতুন বই এসেছে ১৪২টি। গল্পগ্রন্থ ৩৪, উপন্যাস ২৫, প্রবন্ধ ৭, কবিতা ৪৫ ও অন্যান্য বিষয়ক গ্রন্থ ৩১টি। গতকাল বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন বড়ুয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আলম তালুকদার, আসলাম সানী, লুৎফর রহমান রিটন, আমীরুল ইসলাম ও আনজীর লিটন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। 

প্রাবন্ধিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ একটি বাতিঘর। সব জাতির জীবনে এমন আলোকবর্তিকা অর্জনের সৌভাগ্য হয় না। সে ক্ষেত্রে বাঙালি সৌভাগ্যবান জাতি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে বিশ্বে এমন দেশই বা কয়টি আছে? সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহঙ্কার। মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য আমাদের গর্ব, আমাদের পরিচয়। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতিসত্তাকে উজ্জীবিত করেছে নতুনভাবে। শিল্প-সংস্কৃতির অন্যান্য শাখার মতো ছড়াসাহিত্য ঘটেছে এর উজ্জ্বল প্রতিফলন। বিশেষত স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে স্বতন্ত্র সাহিত্য-মাধ্যম হিসেবে ছড়াসাহিত্য পেয়েছে পূর্ণ মর্যাদা। মুক্তিযুদ্ধই বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যকে দিয়েছে মৌলিক ভিত্তি।

আলোচকরা বলেন, ছড়া কেবল শিশুতোষ বিষয় নয়। ছড়ার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় জাতির আত্মা। বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে এ দেশের মহান মুক্তিসংগ্রাম উদ্ভাসিত হয়েছে অনন্য ব্যঞ্জনায়, আবার ছড়াই আমাদের মুক্তিসংগ্রামকে দিয়েছে বিপুল বেগ; কারণ ছড়ার সহজাত আবেগ সাধারণ মানুষকে স্পর্শ করে বিপুলভাবে। তারা বলেন, বাংলাদেশের ছড়াকাররা এ আবেগকে কোনো স্থূল অর্থে ব্যবহার না করে একে সংযুক্ত করেছেন গণমানুষের মুক্তির শাশ্বত সংগ্রামে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রূপায়িত হয়েছে নানা মাত্রায়। লোকায়ত ধারা থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত এ দেশের ছড়াসাহিত্যের মৌল মর্মে রয়েছে জনমানুষের মুক্তির চেতনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্য তাই এক অভিন্ন অনুভবের নাম।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন মতীন্দ্র মানখিন, ফারুক মঈনউদ্দীন, ওবায়েদ আকাশ,  রেজা ঘটক, আলতাফ শাহনেওয়াজ এবং বদরুল হয়দার।

কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি রবীন্দ্র গোপ, মতিন বৈরাগী। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী, এনামুল হক বাবু। এগনেস র্যাচেল প্যারিসের পরিচালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগ ‘গীতিনাট্য’ পরিবেশন করেন এবং শাহাবুদ্দিন আহমেদ দোলনের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন : ‘সুর ধারা সঙ্গীতায়ন’-এর পরিবেশনা। সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী শারমিন সুলতানা, সুমন চন্দ্র দাস ও মো. জাকির হোসেন।

আজকের অনুষ্ঠান

আজ বুধবার মেলা চলবে দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘সওগাত পত্রিকার শতবর্ষ : ফিরে দেখা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. ইসরাইল খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন হাবিব আর রহমান, সোনিয়া নিশাত আমিন, আমিনুর রহমান সুলতান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ড. মুহাম্মদ সামাদ। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads