• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
ডিজিটাল সেবায় যুক্ত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট

ক্রাইম ইউনিট

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

ডিজিটাল সেবায় যুক্ত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ০২ মার্চ ২০১৯

তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের পুলিশ। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, জনসেবা উভয় ক্ষেত্রে সমানতালে চলছে ডিজিটালাইজেশন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ১৩ ধরনের ডিজিটাল সেবা দিচ্ছে পুলিশ। জঙ্গি দমন ও প্রশ্নপত্র ফাঁস ও গুজবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এর সঙ্গে যোগ হতে যাচ্ছে আলাদা সাইবার ক্রাইম ইউনিট।

বর্তমানে পুলিশের দেওয়া ডিজিটাল সেবাগুলো হচ্ছে— অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, বিডি পুলিশ হেল্প লাইন, আইজিপি কমপ্লেইন সেল, ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস), সার্ভিস ফ্রেন্ডলি ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন অ্যান্ড ফাইন পেমেন্ট সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট, পয়েন্ট অব সার্ভিস (পস), পুলিশের ফেসবুক পেজ, বাংলাদেশ পুলিশ ইউটিউব চ্যানেল, উন্নত অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং ভিডিও কনফারেন্স সিস্টেম।

পুলিশ সদর দফতর জানায়, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের (সিফ) সহযোগিতায় ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি ‘অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালু করা হয়, যার মাধ্যমে ভোগান্তি ছাড়াই গড়ে মাত্র ১১ কার্যদিবসের মধ্যে সাধারণ মানুষ ঘরে বসে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করতে পারবেন। সেবাটি চালুর পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ লক্ষাধিক আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে তদন্ত শেষে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭৫ জনকে সনদ দেওয়া হয়েছে। কার্যক্রম শুরুর মাত্র এক বছরের মধ্যেই জাতিসংঘ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ওয়ার্ল্ড সামিট অন দি ইনফরমেশন সোসাইটি (ওয়াইএসআইএস) লাভ করেছে এই উদ্যোগটি। ২০১৭ সালের ২০ মার্চ সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত ডিআইজি (আইসিটি ও টেলিকম) মো. রুহুল আমীন পুরস্কারের স্মারক গ্রহণ করেন।

সূত্র আরো জানায়, ২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য চালু করা হয় ‘আইজিপি কমপ্লেইন সেল’। এই সেল ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। সাধারণ মানুষ পুলিশ সদর দফতরে না গিয়ে অনলাইনে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে পারছে। আইজিপি কমপ্লেইন সেলে আসা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই শেষে তদন্ত করে দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই কমপ্লেইন সেলের পাশাপাশি জনমনে পুলিশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দিতে বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজ, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছে। ‘বাংলাদেশ পুলিশ ইউটিউব চ্যানেল’ নামে রয়েছে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল। এ চ্যানেলে পুলিশের ইতিবাচক ও উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের ভিডিও নিয়মিত আপলোড করা হচ্ছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিট এবং অফিসগুলো নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি এবং ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। ইনফো সরকার প্রকল্প, ফেজ-২-এর আওতায় এখন পর্যন্ত সারা দেশে বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ৬০০ অফিসে নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি প্রদান করা হয়েছে।

প্রকল্পের ফেজ-৩-এর আওতায় বাংলাদেশ পুলিশের সব অফিসে নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি প্রদান করে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার কার্যক্রম চলছে জানিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি রুহুল আমীন বলেন, পুলিশের এই নিজস্ব নেটওয়ার্ক চালু হলে সারা দেশে বাংলাদেশ পুলিশের অফিসগুলোয় এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে কথা বলা যাবে, গুগল কিংবা অন্য নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হবে না। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল।

এর আগে ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর চালু করা হয় মোবাইল অ্যাপস ‘বিডি পুলিশ হেল্প লাইন’। এই অ্যাপস-এর মাধ্যমে যে কেউ লগইন করে অপরাধ ও অপরাধী সম্পর্কে তথ্য প্রদান ও যেকোনো ধরনের পুলিশি সেবা চাইতে পারবেন। এই দুটি সেবাই সচেতন জনসাধারণের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে।

ইতোমধ্যে পুলিশের আলাদা সাইবার ক্রাইম ইউনিট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাভ করেছে। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বলেছেন, মিথ্যা তথ্য, গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে স্বার্থান্বেষী মহল। এ পর্যন্ত গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কমপক্ষে ২০০ জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিকে, জঙ্গিরাও সম্প্রতি পুলিশি অভিযানে কোণঠাসা হয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। জঙ্গিবাদ, গুজব ও প্রশ্নপত্র ফাঁস গুরুতর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এসব মোকাবেলায় সাইবার ক্রাইম ইউনিট দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।

এ ব্যাপারে এ আইজি মিডিয়া মো. সোহেল রানা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, দিন যত যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তিতে ততই এগিয়ে যাচ্ছে। অপরাধীরা অনলাইনে তৎপর হলেই পুলিশের নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসছে। ফলে তারা পরিকল্পনা করলেও বাস্তবায়ন করতে পারছে না। ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো আছে। মানুষ স্বস্তিতে আছে-নিরাপদে আছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads