• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
তুরাগের ৪৪ স্পটে উচ্ছেদ অভিযান আজ

বিআইডব্লিউটিএ’র বুড়িগঙ্গা নদী উদ্ধার অভিযান

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

তুরাগের ৪৪ স্পটে উচ্ছেদ অভিযান আজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ মার্চ ২০১৯

তুরাগ তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আজ থেকে পুনরায় অভিযান শুরু হচ্ছে। সকাল ৯টা থেকে হাইক্কার খাল, বসিলা, মোহাম্মদপুর এলাকায় এ অভিযান শুরু হবে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সদরঘাট নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু হবে।

গতকাল সোমবার বুড়িগঙ্গা-তুরাগে চালানো অভিযানের স্থানগুলোয় উচ্ছেদকৃত আবর্জনা ও ভরাটকৃত অংশ পরিদর্শন করেন নৌ সচিব মো. আবদুস সামাদ। এ সময় তিনি ঢাকা শহরের চারদিকের নদীগুলোসহ দেশের সব নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন নদীগুলোর তীরভূমিসহ নদীগর্ভ থেকে অবৈধ স্থাপনা, ভরাট উচ্ছেদ ও অপসারণের জন্য অভিযান জোরদার করতে বিআইডব্লিউটএ’কে নির্দেশ দেন। এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ভোলানাথ দে, বিআইডব্লিউটিএ প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. আবদুল মতিন ও বিআইডব্লিউটিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানীর সদরঘাট নদীবন্দর থেকে বসিলা পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা ও তুরাগের উচ্ছেদকৃত এলাকায় পরিদর্শনকালীন নৌ সচিব নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেওয়ার ও দখল-দূষণমুক্ত প্রবহমান নদী গড়ে তোলার জন্য ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে জিরো টলারেন্স মনোভাবে জেলা প্রশাসন, রাজউক, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পরিবেশ অধিদফতর, ঢাকা ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নিয়ে সমন্বিতভাবে চলমান উচ্ছেদ অভিযান আরো জোরদার করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ’কে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া বসিলা এলাকায় আমিন-মোমিন নামক একটি হাউজিং কোম্পানি কর্তৃক সম্পূর্ণভাবে ভরাটকৃত তুরাগ নদীর মূল চ্যানেলটিসহ বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীগর্ভ, তীরভূমির ভরাটকৃত অংশ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত অপসারণেরও নির্দেশ দেন তিনি।

উচ্ছেদকৃত এলাকা যাতে পুনরায় বেদখল না হয়ে যায় সেজন্য কঠোর মনিটরিং ও পাহারাদার নিয়োগের ব্যবস্থাসহ ওয়াকওয়ে প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করারও নির্দেশ দেন নৌ সচিব। এই নির্দেশনার আলোকে আজ থেকে পুনরায় তুরাগ তীরে ৪৪টি স্পটে আড়াইশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হচ্ছে। এই স্পটগুলোয় ২টি তিনতলা ও ২টি দ্বিতীয় তলা ভবন রয়েছে। এ ছাড়া উচ্ছেদ অভিযানের তালিকায় রয়েছে ৫০টি টংঘর, ১০০ বালুমহাল ও ৫০টি দোকানসহ আড়াইশ অবৈধ স্থাপনা। এসব অবৈধ স্থাপনার মধ্যে ১৮ একর জমিও উদ্ধার করা হবে।

অবৈধ তালিকাভুক্ত দখলদারদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বাবু বাজার ব্রিজ হতে বুড়িগঙ্গা নদীর দ্বিতীয় চ্যানেলসহ নদীর উভয় তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তিন দফায় পরিচালনা করা হয়।

মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৪টি স্পটের স্থানগুলো হলো মোহাম্মদপুর, সাভার শ্যামপুর, রামচন্দ্রপুর, মিরপুর দারুসসালাম, সাভার বড় বরদেশী, কাউন্দিয়া সাভার, শাহআলী, নবাবেরবাগ শাহআলী ও গোড়ান চটবাড়ী রূপনগর এলাকা।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী দূষণ ও দখল প্রতিরোধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। ঢাকা নদীবন্দর এলাকায় ২০ ফেব্রুয়ারি অবৈধ স্থাপনা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর সময় আরো বৃদ্ধি করা হবে। যেকোনো সময় তুরাগ তীরের দুইপাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এখনো অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা রয়েছে নদীর সীমার মধ্যে। নদী রক্ষাই আমাদের প্রধান কাজ। নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে।

নৌ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বিস্তৃত বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে জোগান দেওয়া হবে। বিআইডব্লিউটিএ এটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি গত জুলাইয়ে শুরু হয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় মোট ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের ৩৫ দশমিক ৫১ কিলোমিটারই নির্মিত হবে নদীর নিচু তীরভূমিতে। ১০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে নদীর উঁচু তীরভূমিতে। ৫ দশমিক ৯২ কিলোমিটার নদীর তীরভূমিতে কলামের ওপর ওয়াকওয়ে (হাঁটার রাস্তা) নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া ৩০ কিলোমিটার পায়ে হাঁটার সেতু নির্মাণ, ৪৪ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার তীররক্ষা কাজ, ১ কিলোমিটার ওয়াল নির্মাণ, ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বেড়াসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৩টি ইকোপার্ক নির্মাণ, ১৯টি জেটি নির্মাণ এবং ১ হাজার ৮২০টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে বলে বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads