• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯
ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি

আগামী সপ্তাহে বাইপাস সার্জারি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ মার্চ ২০১৯

সিঙ্গাপুুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই হাসপাতালে ব্রিফ করেন সেতুমন্ত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. ফিলিপ কোহ। ডা. ফিলিপের বক্তব্যের আলোকে তার চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা গতকাল বাসসকে জানান সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী।

ডা. রিজভী বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে তারা ওবায়দুল কাদেরের কিডনিতে সমস্যা ও কিছু ইনফেকশন পেয়েছে। সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণ করার পরে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তার বাইপাস সার্জারি হবে। তবে তার কিডনি ডায়ালাইসিস করা লাগবে না।’ তিনি বলেন, ‘বুধবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় ডা. ফিলিপ আবার সংবাদ সম্মেলন করবেন।’

কাদেরের আপাতত কিডনি ডায়ালাইসিস লাগবে না বলে গতকাল সন্ধ্যার পর জানান তার স্ত্রী ইসরাতুন্নেসা কাদেরও। সিঙ্গাপুরের হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার পর তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন,  ‘তার (কাদের) অবস্থা স্থিতিশীল আছে। ধাপে ধাপে উন্নতি হচ্ছে। তার কিডনিতে কিছু জটিলতা ও রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়লেও আপাতত ডায়ালাইসিস লাগবে না। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যাবে বলে আশা করছেন চিকিৎসকরা। এটা ঠিক হয়ে গেলে তারা হার্টের  বাইপাস সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’ কাদেরের দ্রুত সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তার স্ত্রী।

ডা. রিজভী জানান, ‘ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরে আনার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে। ওই বোর্ডে আছেন পাঁচজন চিকিৎসক। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তারা বৈঠক করেন। সেখানে তারা বলেন, কাদেরকে বাংলাদেশে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কাদেরের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তবে তার কিডনিতে কিছুটা সমস্যা আছে। ইনফেকশনও কিছু আছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধানের পর তার বাইপাস করা হবে। তার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে যাচ্ছে।’ এ চিকিৎসক দেশবাসীর কাছে ওবায়দুল কাদেরের জন্য দোয়া চান।

ডা. ফিলিপ কোহ ব্রিফ করার সময় উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল কাদেরের সহধর্মিণী ইসরাতুন্নেসা কাদের, সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, একরামুল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা। ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে ও তার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নিতে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালেও ছুটে যাচ্ছেন দেশটিতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা। তাকে দেখতে গতকাল হাসপাতালে যান জাতীয় পার্টির নেতা ও সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ।

উল্লেখ্য, হূদরোগে আক্রান্ত সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত সোমবার বিকাল ৪টা ১২ মিনিটের দিকে তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা থেকে রওনা হয়। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুরের সেলেটর নামে একটি প্রাইভেট বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেলেটর বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি নেওয়া হয় মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। এর আগে আইসিইউ ও সিসিইউ সুবিধাসংবলিত অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিএসএমএমইউ থেকে সেতুমন্ত্রীকে বহন করে রওনা দিয়ে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। কাদেরের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন।

ভারতের প্রখ্যাত হূদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠির পরামর্শে ওবায়দুল কাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। ডা. দেবী শেঠি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন কাদেরকে সোমবার দেখার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাদেরের চিকিৎসার জন্য দেবী শেঠিকে ঢাকায় আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে জানান বিএসএমএমইউর উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads