• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
অনন্য স্বীকৃতি এবং ‘বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি’র উদ্যোগ

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো

ছবি : ইন্টারনেট

জাতীয়

অনন্য স্বীকৃতি এবং ‘বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি’র উদ্যোগ

  • এস এম মুকুল
  • প্রকাশিত ০৭ মার্চ ২০১৯

২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য দলিল’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তা সংস্থাটির ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্ত করে।

প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক ইরিনা বুকোভা এই ঘোষণা দিতে গিয়ে বলেন, ‘একদিন এ ভাষণ একটি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আজ থেকে এই ভাষণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করবে।’ এই ভাষণটিসহ মোট ৭৭টি গুরুত্বপূর্ণ নথিকে একই সঙ্গে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ইউনেস্কো পুরো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দলিলকে সংরক্ষিত করে থাকে। ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে (এমওডব্লিউ)’ ৭ই মার্চের ভাষণসহ এখন পর্যন্ত ৪২৭টি গুরুত্বপূর্ণ নথি সংগৃহীত হয়েছে। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত নেতার ভাষণের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের তুলনা করা হয়েছে। তাই সব বিচার-বিশ্লেষণে ৭ই মার্চের ভাষণই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা। কেননা এই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি একটি জাতিকে এক করে ফেলেছিলেন। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক প্রতিক্রিয়ায় একে ইতিহাসের প্রতিশোধ হিসেবে তুলনা করেছেন। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর দীর্ঘ সময় এই ভাষণের প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। সেই ভাষণটি সারা বিশ্বের মানুষের জন্য উন্মুক্ত।

ইউনেস্কোর তথ্যমতে, ১৫ সদস্যের একটি আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের সম্মতিক্রমে ভাষণটি সংস্থার নির্বাহী কমিটি চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করে। ইউনেস্কোর যে উপদেষ্টা কমিটি এ মনোনয়ন দেয় সেই কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ন্যাশনাল আর্কাইভসের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আলরাইসি। প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দফতরের ওই বৈঠকে তিনি ছাড়াও উপদেষ্টা কমিটির আরো ১৪ জন বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন। মূলত বিশ্বজুড়ে যেসব তথ্যভিত্তিক ঐতিহ্য সংরক্ষণযোগ্য এবং পরবর্তী প্রজন্ম যাতে তা থেকে উপকৃত হতে পারে, সে লক্ষ্যেই এ তালিকা প্রণয়ন করে ইউনেস্কো। রীতি অনুসারে ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্তির জন্য সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রস্তাবগুলো দুই বছর ধরে নানা পর্যালোচনার পর উপদেষ্টা কমিটি তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে। বিশ্বনন্দিত বঙ্গবন্ধুর এমন একটি ভাষণকে স্বীকৃতি দিতে পেরে ইউনেস্কো গর্ব প্রকাশ করেছে।

বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটির পুস্তিকা প্রকাশ :

ইউনেস্কো স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক সম্পূর্ণ ভাষণটি রঙিন মলাটের একটি সুদৃশ্য পুস্তিকা হিসেবে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য এক লাখ কপি মুদ্রণ করেছে সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি’। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এই পুস্তিকা প্রসঙ্গে সংগঠনটির চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ বাঙালি জাতির গৌরব এবং বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। আমরা মনে করি, এই ভাষণ জাতির মননে, বিশেষত নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেমের প্রেরণা জোগাবে। তাই এই মহতি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমরা ভাষণটির এক লাখ পুস্তিকা প্রকাশ করেছি। এই পুস্তিকা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। এভাবেই এই ভাষণের গৌরব ও চেতনাকে প্রজন্মের মননে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেমের জাগরণ ঘটাতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads