• মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪২৯
ধর্মঘটের ডাক বর্জনকারীদের

সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনকারী প্যানেলগুলো

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

ধর্মঘটের ডাক বর্জনকারীদের

  • ঢাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১২ মার্চ ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে আজ মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন ও ধর্মঘট কর্মসূচি দিয়েছে ভোট বর্জনকারী প্যানেলগুলো। পাশাপাশি ডাকসু নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানায় তারা। তবে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বর্জনকারী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং হলে হলে গিয়ে গণসংযোগ করেন। পরে তারা ভিসির বাসভবনের সামনে জড়ো হন। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা সেখানে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

প্রায় তিন দশক পর গতকাল বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর তিনটি ছাত্রী হলে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কোটা আন্দোলনের নেতা ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নূর রোকেয়া হল ছাত্রলীগের নারীকর্মীদের মারধরের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর ভোট গ্রহণে ছাত্রলীগের ব্যাপক অনিয়ম এবং এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের নীরবতার প্রতিবাদে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি জানায় বাম সংগঠনগুলোর জোট প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য, কোটা আন্দোলনকারীদের বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ ও ছাত্রদল প্রার্থী ও নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রহসন-জালিয়াতির এই নির্বাচন বাতিল করে পুনঃতফসিল ঘোষণা করতে হবে। হলে নয়, নতুনভাবে ভোট হতে হবে একাডেমিক ভবনে। সেই নির্বাচনে ব্যালট বাক্স হতে হবে স্বচ্ছ। ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী বলেন, ভোটে অনিয়ম, কারচুপি, জালভোট ও ছাত্রলীগের আধিপত্য সর্বত্র। এই ভোট বর্জন করে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি আমরা।

দুপুর দেড়টার দিকে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় ছাত্রদল। এ সময় ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিকসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডাকসু নির্বাচনের কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। প্রশাসন শুরু থেকেই ভোট কারচুপিতে যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন হল থেকে সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে। এভাবে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। আমরা এ নির্বাচন বর্জন করছি।

পরে এসব দাবি নিয়ে ভিসি ভবনে অবস্থান নিতে যান ভোট বর্জনকারী প্যানেলগুলোর প্রার্থীরা। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও পৃথক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসি ভবনে অবস্থান নিতে যান। সেখানে ভিসিকে না পেয়ে মিছিল নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসির বাসভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন তারা।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর ভিপি প্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। বিকালে মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোকেয়া হলে কেন্দ্রের ভেতরে নুরুল ও লিটন নন্দীকে মারধরের ঘটনা ভিত্তিহীন। নূর ল্যাবএইড হাসপাতালে আছেন। সেখানে তাকে গিয়ে দেখে এসেছি। তার শরীরের তাপমাত্রা বেশি। চিকিৎসক বলেছেন, তার শরীরে কোনো আঘাত নেই।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুতে ছাত্রলীগ প্যানেলের জিএস প্রার্থী গোলাম রাব্বানী বলেন, সুন্দর পরিবেশে বাম সংগঠনসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন নেতারা যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তার নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, নির্বাচনে পরাজয় বুঝতে পেরে এক্সিট রুট খুঁজছিল ছাত্রদল, বাম সংগঠন, কোটা আন্দোলনকারীসহ অন্যরা। সেজন্য তারা এক জোট হয়ে নাটক মঞ্চস্থ করেছে। প্যানিক সৃষ্টি করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ভোট ব্যাহত করতে চেয়েছিল, তবে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে। এটা ডাকসুর অতীত ইতিহাসেও ছিল, ছাত্রলীগ একদিকে এবং বাকি সবাই একদিকে।

উল্লেখ্য, ২৮ বছর পর গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগ ছাড়া ভোটগ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ তোলেন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্যানেলগুলো।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads