• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
ক্রাইস্টচার্চে নিহত ডা. মোজাম্মেলের দাফন বাদজোহর

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে নিহত ডা. মোজাম্মেল হক ও তার শোক সন্তপ্ত স্বজনদের আহাজারি

ছবি : বাংলাদেশর খবর

জাতীয়

ক্রাইস্টচার্চে নিহত ডা. মোজাম্মেলের দাফন বাদজোহর

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৮ মার্চ ২০১৯

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে নিহত ডা. মোজাম্মেল হককে আজ বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর জানাযা শেষে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে পিতার পাশে দাফন করা হবে। সকাল ৭টায় তার মরদেহ গ্রামের বাড়ীতে এসে পৌঁছেছে। 

নিহতের ভাই শাহাদাত হোসেন বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ নিয়ে মঙ্গলবার দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বুধবার রাতে মরদেহ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে। সেখান থেকে একটি লাশবাহী গাড়ীতে তার মৃতদেহ গ্রামের বাড়ীতে পৌঁছে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায়।

নিহত ডা. মোজাম্মেল হকের বোন জ্যোৎস্না বেগম জানান, ছোট ভাইয়ের মরদেহ দেখার জন্য পরিবারের সবাই গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। তাদের বৃদ্ধা মা জামেলা বেগমের চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। তিনি এখন আর কাঁদতে পারছেননা।

পেশায় ডেন্টাল সার্জন ডা. মোজাম্মেল হক গত সাড়ে তিনবছর আগে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে নিউজিল্যান্ড যান। এর জন্য তার দরিদ্র পরিবার প্রায় ২০ লাখ টাকা ঋণ করে তাকে সেখানে পাঠান। কিন্তু তার এমন অনাকাঙ্খিত মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা এখন ঘোর অন্ধকার দেখছেন।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর পপুলার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশের পর ঢাকায় চলে যান মোজাম্মেল হক। পরে সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে রাজধানীর মীরপুরে বেসরকারি একটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডেন্টাল বিষয় পাস করেন। কিন্তু উচ্চ ডিগ্রি নিতে নিউজিল্যান্ডে যাবার সাড়ে তিনবছর পরই তার এই পরিণতি ঘটে। কথা ছিল ডিগ্রি শেষ করে দেশে ফিরে বিয়ে করবেন ডা. মোজাম্মেল হক।

গত ১৫ মার্চ শুক্রবার নিউজিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চ-এর আল নুর মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে উগ্রবাদী বন্দুকধারীর গুলিতে প্রথমে গুরুতর আহত হন ডা. মোজাম্মেল হক। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এই ঘটনায় ডা. মোজাম্মেল হকসহ ৫জন নিহত হন।

ঘটনার দুই দিন পর চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের খাদেরগাঁও ইউনিয়নের হুরমাইষা গ্রামের বাড়িতে ডা. মোজাম্মেল হকের মৃত্যুর সংবাদ পান স্বজনরা। এরপর থেকে নিহতের মা ভাইবোন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

তিনভাই দুইবোনের মধ্যে ডা. মোজাম্মেল হক সবার ছোট। তার বাবা হাবিবউল্লাহ মিজি অনেক আগেই মারা যান। তারপর সন্তানদের নিয়ে এখনো বেঁচে আছেন, বৃদ্ধা মা জামেলা বেগম।

বড়ভাই আব্দুল মালেক জানান, অনেক কষ্ট করে এই ভাইকে মানুষ করেছিলাম। কিন্তু আদরের ছোটভাইয়ের এমন মৃত্যুতে আমাদের সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ডেন্টাল পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মাসুদ হাসান জানান, নিহত ডা. মোজাম্মেল হক ছিলেন, ডেন্টিস্ট এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি। সংগঠনের এই নেতার মরদেহ দেশে নিয়ে আসায় বৃহস্পতিবার সারাদেশে শোক সভা ও মিলাদের আয়োজক করবে সংগঠনটি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads