• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করতে পারছে না তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল

তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি)

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

বরাদ্দের অর্থ ব্যয় করতে পারছে না তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ মার্চ ২০১৯

তামাকের ক্ষতিকর দিক জানিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বরাদ্দ দেওয়া অর্থ ব্যয় করতে পারছে না জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি)। ফলে ওই অর্থ ফেরত যাচ্ছে সরকারি কোষাগারে। এনটিসিসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খরচের জন্য সরকার ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় এনটিসিসিকে। কিন্তু আট মাস পার হলেও বরাদ্দ দেওয়া অর্থ থেকে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি সংস্থাটি। ফলে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ২ কোটি টাকা এরই মধ্যে ফেরত নিয়েছে সরকার।

চলতি অর্থবছর শেষ হতে বাকি আর মাত্র তিন মাস। এ সময়ের মধ্যে খরচ করতে না পারলে বাকি ৭ কোটি টাকাও ফেরত যাবে সরকারি কোষাগারে। সূত্র আরো জানায়, ক্যানসার, হূদরোগ, স্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগের অন্যতম কারণ তামাক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৪ সালের তথ্যমতে, তামাকজনিত রোগে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫৭ হাজার মানুষ মারা যায়। পঙ্গু হয় ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ। প্রাণহানি ও পঙ্গুত্ব মোকাবিলায় সরকার প্রণয়ন করে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ’।

২০১৪-১৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে প্রথমবারের মতো সব তামাকজাত দ্রব্যের ওপর এ সারচার্জ আরোপ করা হয়। এ আইন অনুসারে, আমদানি এবং দেশে উৎপাদিত সব তামাকজাত দ্রব্য থেকে এক শতাংশ হারে সারচার্জ সংগ্রহ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। সেই সারচার্জথেকে এনটিসিসিকে দেওয়া হয় ৯ কোটি টাকা। এ সারচার্জের অর্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, তামাকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচার, জনসচেতনতা তৈরি, তামাকের ক্ষতি পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাসহ নানা কাজে ব্যয় করার কথা এনটিসিসির।

এনটিসিসির প্রজ্ঞাপন বলছে, তামাকজাত দ্রব্য থেকে আদায় করা করের অর্থ তামাক নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। তবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের বাজেট অধিশাখার এক নথিতে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ কমিটির সভার কার্যবিবরণীর আলোকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য সাত কোটি টাকার বিভাজন অনুমোদিত হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ পেলেও কার্যক্রম শুরু করতে না পারায় গত ৩ মার্চ বরাদ্দ সংশোধন করে তা ৭ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়। এরপরও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো কাজ শুরু করতে পারেনি এনটিসিসি। ফলে অর্থবছরের শেষ তিন মাসে কোনো কর্মসূচি হাতে নিলেও বরাদ্দ দেওয়া অর্থের বড় একটি অংশ অব্যবহূত থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়ক মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমরা পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সরকারি বিধি-বিধানের আওতায় সবকিছু করা হচ্ছে। আশা করছি, বরাদ্দের টাকা যথাসময়ে খরচ করা সম্ভব হবে।

তবে এনটিসিসির এমন আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে পারছে না তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো। তাদের আশঙ্কা, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ব্যর্থ হতে যাচ্ছে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের অ্যান্টি-টোব্যাকো প্রোগ্রামের মিডিয়া ম্যানেজার মাহমুদ সেতু বলেন, দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা এনটিসিসির। কিন্তু বরাদ্দ থাকার পরও তামাকের ভয়াবহতার ব্যাপারে জনসচেতনতা তৈরি, গণমাধ্যমে প্রচার চালানোর ক্ষেত্রে সংস্থাটির কোনো দৃশ্যমান ভূমিকা চোখে পড়ছে না। এটা খুবই হতাশাজনক।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads