• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
সুষম উন্নয়নে জার্মান মডেল

লোগো বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

বাস্তবায়নের প্রস্তাব এডিবির

সুষম উন্নয়নে জার্মান মডেল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ এপ্রিল ২০১৯

উন্নয়নের সুফল দেশবাসীর কাছে সমানভাবে পৌঁছে দিতে জার্মানির বিকেন্দ্রীকরণ মডেল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক উন্নতিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এ উন্নয়নের সুফল সবাই সমানভাবে পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণে জার্মান মডেল ব্যবহার করে বাংলাদেশেরও সফল হওয়ার সুযোগ আছে। পল্লী অঞ্চল পর্যন্ত দ্রুত ন্যায়সঙ্গত উন্নয়ন শীর্ষক এক সেমিনারে এডিবির পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়েছে।

রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আরো বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ, মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  রুবানা হক প্রমুখ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্মানির হেলাবা ব্যাংকের নন-ওয়েসিডি দেশগুলোর প্রধান রাফ স্কেস্টার।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে তেমন অবকাঠামো ছিল না। সময়ের ব্যবধানে অনেক উন্নত দেশের চেয়ে দেশটিতে সুষম উন্নয়নে বেশি সফলতা রয়েছে। দশ লাখের বেশি জনসংখ্যা রয়েছে জার্মানিতে এমন শহর রয়েছে মাত্র চারটি। জনসংখ্যার

বাড়তি চাপ নেই দেশটির কোনো শহরে। সারা দেশে সব ধরনের অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থানের সুযোগসহ বৈষম্য নিরসনে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ন্যায়সঙ্গত উন্নয়ন বাংলাদেশ সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে পল্লী এলাকার উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে এখন কাজ করছে সরকার। সব ধরনের নাগরিক সুবিধা গ্রামেই পাওয়া যাবে।

সালমান এফ রহমান বলেন, ন্যায়ভিত্তিক উন্নয়নে জার্মান মডেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই মডেলে শিল্পায়নের পাশাপাশি সামাজিক বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও এ ধারনের উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। প্রত্যেক গ্রামকে শহরে রূপান্তরের কাজ চলছে। এ লক্ষ্য অর্জনে ২০ বছরের বেশি সময় লাগবে না।

মনমোহন প্রকাশ বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক এগিয়ে গেছে। এ ধারাবাহিকতায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির সুফল সারা দেশের মানুষ সমানভাবে পাচ্ছে না। বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামকে ঘিরে। দুর্বল অবকাঠামো, অর্থের অভাব, কঠিন প্রতিযোগিতা এবং দক্ষ শ্রমিকের অভাবে এসএমই শিল্প এগুচ্ছে না। এ অবস্থা নিরসনে জার্মান মডেল বাংলাদেশের জন্য সহায়ক হবে। 

মনমোহন প্রকাশ আরো বলেন, ন্যায়সঙ্গত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে নীতিমালা প্রণয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও দক্ষতা তৈরি, অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  রুবানা হক বলেন,  উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা তৈরি করতে হলে শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়নের সুযোগ সহজ করতে হবে। অর্থায়ন বাংলাদেশের জন্য বড়  চ্যালেঞ্জ। ভারতের পল্লী উদ্যোক্তা তৈরি প্রকল্প রয়েছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের প্রকল্পে জোর দিতে হবে।

মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়, পল্লী অঞ্চল পর্যন্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে জার্মানির ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের জন্য সহজে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক। আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।  উচ্চশিক্ষার জন্য ৪১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। একই সঙ্গে দ্বৈত শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছে। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি চাকরিমুখী শিক্ষার প্রবর্তন করেছে। এতে দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads