• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
চাকরি ফিরে পেলেন সেই জাহালম

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

চাকরি ফিরে পেলেন সেই জাহালম

  • নরসিংদী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৭ এপ্রিল ২০১৯

অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগে তিন বছর কারাভোগের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মুক্তি পেয়ে পুরনো চাকরি ফিরে পেলেন জাহালম। তিনি বাংলাদেশ পাট কল করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যানের নির্দেশে নরসিংদীর ঘোড়াশাল কারখানায় আগের চাকরি ফিরে পান। গত মঙ্গলবার পুরনো কর্মস্থল নরসিংদীর ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুটমিলে তাঁতি হিসেবে কাজ যোগ দিয়েছেন জাহালম।

সোনালী ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারিতে দুদকের দায়ের করা ৩৩টি মামলায় সালেকের পরিবর্তে ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জাহালমকে আটক করা হয়। দীর্ঘ তিন বছর ভুল আসামি হিসেবে জেলে থাকার পর চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

মুক্তির পর তার চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় সব ধরনের কাগজপত্র নিয়ে বিজেএমসি চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন জানান জাহালম।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেএমসি চেয়ারম্যান জাহালমের কাগজপত্রগুলো পর্যালোচনা করে তাকে পূর্বপদে যোগদানের নির্দেশ দেন। নির্দেশনা মোতাবেক চলতি এপ্রিলের ১৬ তারিখ তিনি পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে অবস্থিত বিজেএমসির নিয়ন্ত্রাণাধীন বাংলাদেশ জুটমিল কর্তৃপক্ষের কাছে তার কাগজপত্র পেশ করেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক তাকে পূর্বপদে বহাল করে।

দীর্ঘ তিন বছর পর চাকরি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে জাহালম সাংবাদিকদে বলেন, বিনা দোষে জীবন থেকে তিনটি বছর চলে গেছে। শুধু তাই নয়, তিন বছর কষ্টও করেছি অনেক। মানসিক অবস্থাও আগের মতো নেই। কেমন যেন একটা ঘোর অন্ধকার দেখতে পাই। তিন বছরে আমার সংসার তছনছ হয়ে গেছে। একেবারে পথের ফকির হয়ে গেছি আমি।

জাহালম আরো জানান, আমি জেলে যাওয়ার পর সংসার চালাতে স্ত্রী কল্পনা বেগম স্থানীয় প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি নেন। এতে যে বেতন পান তা দিয়েই সংসার চালিয়েছেন তিনি। মামলার খরচ চালাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হতে হয়েছে। বর্তমানে আমার সহায়সম্বল বলতে কিছুই নেই।

উল্লেখ্য, পাঁচ বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে জাহালমের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঠিকানায় একটি চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে জাহালমকে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় দুদকে হাজির হতে বলা হয়। জাহালম সে সময় নরসিংদীর ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুটমিলে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। যথাসময়ে দুদকে হাজিরা দিয়ে জাহালম আবার কর্মস্থলে ফিরে যান। এর দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জাহালমকে গ্রেফতার করা হয়। জাহালম নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, ভুল করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তার কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি।

মুক্তির বিষয়ে কারো কাছে সমাধান না পেয়ে জাহালমের বড় ভাই শাহানূর মিয়া গত বছর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যান। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে জাহালমের সঙ্গে দেখা করেন কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

মানবাধিকার কমিশনের তদন্তে বেরিয়ে আসে, আবু সালেক আর জাহালম এক ব্যক্তি নন। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর টনক নড়ে সংশ্লিষ্টদের। পরে জাহালমকে দুদকের ২৬ মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads