• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
তিতাস কর্মকর্তাদের সম্পত্তির হিসাব চেয়েছে জ্বালানি বিভাগ

খনিজসম্পদ ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

তিতাস কর্মকর্তাদের সম্পত্তির হিসাব চেয়েছে জ্বালানি বিভাগ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ এপ্রিল ২০১৯

তিতাসের কর্মকর্তাদের সম্পত্তির হিসাব সংগ্রহ ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। পাশাপাশি ট্রুথ কমিশনে যেসব কর্মকর্তা গিয়েছিলেন, তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে। এসব কর্মকর্তা বর্তমানে কে কোন অবস্থায় আছে তাও জানাতে বলা হয়েছে। গত রোববার মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে খনিজসম্পদ ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

অবৈধ সংযোগ, মিটার টেম্পারিংসহ তিতাসের ২১টি খাতে দুর্নীতি চিহ্নিত করে গত ১৭ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে তিতাসের দুর্নীতি প্রতিরোধে ১২ দফা সুপারিশ জমা দেয়। দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর কাছে সুপারিশগুলো প্রতিবেদন আকারে জমা দেন। সে সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুদককে সাধুবাদ জানাই এ প্রতিবেদনের জন্য। তাদের এই প্রতিবেদন আমাদের কাজ সহজ করে দিয়েছে। তারা বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করেছে,  সেগুলো অনুসন্ধান করা দরকার বলে আমরাও মনে করি।

এরই ধারাবাহিকতায় রোববার মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে সাতটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরমধ্যে প্রথমেই বলা হয় সম্পত্তির হিসাবের কথা। দুদক তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ট্রুথ কমিশনে যাওয়া তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভ্যাসগতভাবে অপরাধী বলে মনে করছে দুদক। তাই যারা ট্রুথ কমিশনে গিয়েছিলেন তাদের পদোন্নতি ও কোনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন না করার পরামর্শ দেয় দুদক। সিটি বিবেচনায় নিয়ে  তিতাসের কর্মকর্তাদের জিএম বা ডিজিএম পর্যায় হতে সম্পত্তির হিসাব সংগ্রহ ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নিদের্শ দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।

দুদক মিটার টেম্পারিং রোধ এবং গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের অপচয় বন্ধ করতে ডিস্ট্রিবিউশন এবং গ্রাহক উভয় ক্ষেত্রে প্রি-পেইড মিটার চালু করার পরামর্শ দেয়। বৈঠকে প্রি-পেইড মিটার লাগাতে দ্রুত ও কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার নিদের্শ দেওয়া হয়। তিন বছরের মধ্যে ১০ লাখ মিটার লাগানোর একটি লক্ষ্য ঠিক করার কথাও বলা হয়। গ্যাস ব্যবহার ও সংযোগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমাতে তিতাসের কোথায় মিটার বা বোস্টার লাগবে তার জন্য পরামর্শক নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দুদক জ্বালানি বিভাগকে জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানা, সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে তিতাসের পাওনা প্রায় ৪০৩ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার ৬০ টাকা। টাকা আদায়ে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে দুদক। প্রয়োজনে টাস্কফোর্স গঠন করে সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণসহ অনাদায়ী শিল্প-প্রতিষ্ঠান তথা গ্রাহকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে বকেয়া বিল সংগ্রহের কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কাজের অগ্রগতির জন্য কেপিআই করার উদ্যোগ নেওয়া ও প্রতিমাসের অগ্রগতি নিয়ে মাসিক ভিত্তিতে সভা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আরো নেওয়া হচ্ছে। আমরা কাজ করছি। দেখা যাক কি হয়।

তিতাসের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, দুদক যেসব অভিযোগ করেছে সেগুলো খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি আর না হয় সেজন্য পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্যাগুলো সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন কাজ আমাদের। অভিযোগগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। যেসব সমস্যা পাওয়া যাবে সেগুলো কীভাবে সমাধান করা হবে তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। দুদতের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নেওয়া পদক্ষেপের তিতাসের ৯৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ফলে ফেঁসে যেতে পারেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান। এরমধ্যে ৫৩ জন মিটার রিডার, ২০ জন ব্যবস্থাপক ও উপ-ব্যবস্থাপক, ২৩ জন অফিস, হিসাব ও বিক্রয় বিভাগের সহকারী। তারা দুর্নীতি করে বিপুল সম্পদের মালিক হন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads