• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
ধানের প্রভাব কাপড়ে

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

ধানের প্রভাব কাপড়ে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ মে ২০১৯

ঈদুল ফিতর ঘনিয়ে আসছে। বাড়ছে দেশের বড় পাইকারি কাপড়ের বাজার ইসলামপুরের পাইকারি দোকানের বেচাকেনাও। তবে শেষ মুহূর্তের বিক্রিতে খুশি নন ব্যবসায়ীরা।

শেষ ধাপের বিক্রিতে মন্দা ভাব থাকায় তাদের এই হা-হুতাশ! আর এর পেছনে এই মৌসুমে ধানের কম দাম থাকাকেই দায়ী করেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, এই এলাকায় মূলত থান কাপড়ের পাইকারি বিক্রির জন্য বিখ্যাত হলেও এখানে শাড়ি, থ্রি-পিস, লুঙ্গি, প্যান্ট-শার্ট ও পাঞ্জাবির কাপড়ের পাইকারি বিক্রি চলে সারা বছর। তবে খুচরাও বিক্রি হয় কোনো কোনো দোকানে। বেশ কয়েকটি দেশীয় বস্ত্র কারখানার উৎপাদিত কাপড়ের শো-রুমও রয়েছে এখানে। পাশাপাশি থাইল্যান্ড, চীন, পাকিস্তান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কাপড়ের সমাহার রয়েছে এ মার্কেটে। দেশি থান কাপড়ের ৬০ শতাংশ ও বিদেশি থান কাপড়ের ৪০ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয় ইসলামপুরের এ কাপড়ের বাজারের মাধ্যমে। ঈদ মৌসুমে সেটা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এর মধ্যে রোজার ঈদে তাদের বিক্রি সবচেয়ে বেশি।

তারা জানান, ঈদ মৌসুমে বিক্রি হয় মূলত তিন ধাপে। প্রথম ধাপে বিক্রি চলে রমজানের আগে, শবেবরাতের আগে ও পরের সময়ে। প্রথম ধাপের বিক্রি শেষে বা পণ্যের স্টক শেষের দিকে আসলে দ্বিতীয় ধাপের মূল বিক্রি শুরু হয় রোজার শুরুতে। শেষ ধাপে মূল বিক্রি চলে ১০ থেকে ১৫ রমজানের মধ্যে। এসময় খুচরা ব্যবসায়ীরা মূলত কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের খোঁজে এখানে আসেন।

তবে এবার প্রথম ধাপ বাদ দিলে অন্য দুই ধাপের বিক্রিতে প্রত্যাশা মেটেনি পাইকারি ব্যবসায়ীদের। বরং অন্যান্য ঈদের তুলনায় এবার তা বেশ নাজুক বলেই জানালেন তারা। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ইসলামপুর থেকে ৯০ শতাংশ পাইকারি কাপড় বিক্রি হয় সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায়। সেসব এলাকার মানুষের মূল আয়ের উৎস কৃষিকাজ বা কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ততা। এবারের বোরো আবাদের পর ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হওয়ায় সেসব এলাকায় বিক্রি খুব একটা জমছে না। আর খুচরা ব্যবসায়ীদের বিক্রি ভালো না হলে স্বাভাবিকভাবেই পাইকারি বাজারেও এর বড় প্রভাব পড়ে।

গতকাল রোববার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, এই এলাকায় থাকা পাইকারি মার্কেটগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ দোকানই ক্রেতাশূন্য। তবে লুঙ্গি, শাড়ি ও রেডিমেড কাপড়ের দোকানে কিছুটা ভিড় এখনো রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু দোকানে চলছে হিসাবের কাজ। অনেক খুচরা ব্যবসায়ী তাদের পণ্যের বাকি থাকা অর্থ পরিশোধে এসেছেন এখানে। তবে পছন্দসই কাপড়র কম দামে পেলে কিছু সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও লক্ষ করা গেছে।

মারিয়া ফ্যাশন হাউসের প্রোপাইটার ইহসানুল হক বলেন, আমাদের বিক্রির তো শেষ নেই। সারা দেশ থেকে আমাদের কাছে কাস্টমার আসে। এবারো এসেছেন, বিক্রিও করেছি। তবে সেটা আমাদের বিক্রির সঙ্গে যায় না। আমাদের রোজার শুরুতে যখন দ্বিতীয় ধাপের বিক্রি শুরু হয় তখন প্রতিদিন ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা থাকে। সেখানে এবার এই সময়ে বিক্রি হয়েছে ১০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকার। খুচরা ব্যবসায়ীরা যদি বিক্রি করতে না পারেন, তাহলে তো আমাদের বিক্রি হবে না, সোজা কথা।

গুলশান আরা শপিং কমপ্লেক্সের দোকানি আবু সায়েম বলেন, এই ঈদের বিক্রিতে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ঢাকায় বা এর আশপাশের এলাকায় আমাদের হাতেগোনা কিছু পণ্য বিক্রি হয়। বাদবাকি সব দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে নিয়ে যান। কিন্তু এবার আমাদের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, ধানের দাম কম থাকায় অধিকাংশ এলাকায় বিক্রিবাট্টা ভালো চলছে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads