বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রার প্রথম দিন বিমান ও সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে উড়াল দিয়েছেন মোট ২ হাজার ৩১৬ জন হজযাত্রী। আশকোনা হজক্যাম্প থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৭টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-৩০০১ জেদ্দার উদ্দেশে ৪১৯ হজযাত্রী নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করে। সৌদি আরব সময় সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে ফ্লাইটটি। এ সময় এয়ারপোর্টে হজযাত্রীদের স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, জেদ্দার কনসাল জেনারেল এফএম বোরহান উদ্দিন, বাংলাদেশ হজ অফিস মক্কার কাউন্সিলর (হজ) মুহাম্মাদ মাকসুদুর রহমান এবং মৌসুমি হজ অফিসার মোহাম্মাদ মাহবুব আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা।
তবে প্রথম ফ্লাইটের সব হজযাত্রীর সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন শেষে রওনা হন তারা। জানা গেছে, প্রথম ফ্লাইটের সবার ইমিগ্রেশন জেদ্দা বিমানবন্দরে করা হয়েছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে সৌদি আরবের পূর্ণাঙ্গ ইমিগ্রেশন শাহজালাল বিমানবন্দরে করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের কিছু করার নেই। কারিগরি ত্রুটি বাংলাদেশ ছাড়াও একাধিক দেশে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, শাহজালালে পূর্ণাঙ্গ ইমিগ্রেশন না হলেও ইমিগ্রেশনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম- যেমন হাতের ১০ আঙুলের ছাপ, পাসপোর্ট স্ক্যান, ছবি উঠানোসহ অন্য কাজগুলো করা হয়েছে। ফলে জেদ্দায় হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশনে খুব বেশি সময় লাগছে না। এর আগে বুধবার রাত ৩টায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন। এ সময় বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ইনামুল বারীসহ বিমান ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় হজযাত্রীদের কল্যাণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
গতকাল সকালে হজ ক্যাম্পে এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম সাংবাদিকদের জানান, সৌদিতে সার্ভার ত্রুটির কারণে বাংলাদেশের হাজিরা আপাতত ইমিগ্রেশন (প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন) সুবিধা পাচ্ছেন না।
তসলিম জানান, বাংলাদেশে এবার ৬০ হাজার হজযাত্রীর সৌদি ইমিগ্রেশন শাহজালাল বিমানবন্দরে হওয়ার কথা। এখন পযর্ন্ত ৩টি ফ্লাইট সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছে। তাদের সৌদি ইমিগ্রেশন সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ সৌদি আরবে ইমিগ্রেশন সিস্টেমে সমস্যা হয়েছে। এ কারণে তারা ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়াতেও এই সুবিধা দিতে পারছে না। শাহজালালে ১১ নম্বর ডিপারচারে সৌদি সরকারের খরচে কাউন্টার করা হয়েছে। তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। সৌদি ইমিগ্রেশনের সার্ভার ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের হাজিরা এই সুবিধা পাবেন না।
হাব সভাপতি বলেন, এবার অনলাইনে ভিসার কাজ করা হচ্ছে। সুতরাং জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়া এবার প্রথম দিনেই বাংলাদেশ বিমানের ৬২ হাজার টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। গত বছর এই দিনে ১০ হাজার টিকেটও বিক্রি হয়নি। তবে এবার হজযাত্রীদের ভোগান্তি কম হবে।
উল্লেখ্য, এ বছর প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ বাংলাদেশি হজ করবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন সাত হাজার ১৯৮ ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন এক লাখ ২০ হাজার হজযাত্রী। এসব যাত্রীর মধ্যে ৫০ শতাংশ রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ সৌদি এয়ারলাইনস পরিবহন করবে। এবার হজযাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা এবং ঢাকা-মদিনা-ঢাকা রুটে পরিবহনের জন্য বিমানের চারটি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
