• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কর্মময় জীবন

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কর্মময় জীবন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ জুলাই ২০১৯

কর্মময় ছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জীবন। তিনি ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসে। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন তিনি। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরই আগস্ট মাসে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সেনাবাহিনীপ্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের কাছে ক্ষমতা নেন। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক (সিএমএলএ) হিসেবে দেশ শাসন করেন। এরপর ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করেন। এর কিছুদিন পর অর্থাৎ ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গ্রেপ্তার হন। তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়।

জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংসদে পাঁচটি আসনে বিজয়ী হন। ছয় বছর জেলে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের আমলে তিনি জামিনে মুক্ত হন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি ২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪টি আসনে জয়ী হয়। এরপর ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোট গঠন করেন তিনি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল ২৭টি আসনে বিজয়ী হয়। এরপর দশম ও সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন। চলতি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

এরশাদকে যে নামে ডাকতেন পরিবারের সদস্যরা

দেশের মানুষ তাকে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নামে চিনলেও পরিবারের সদস্যদের কাছে তিনি অন্য নামে পরিচিত ছিলেন। তার বাবা-মা, ভাইবোন, নিকটাত্মীয়রা তাকে ‘পেয়ারা’ নামে ডাকতেন। এরশাদের ভাই জি এম কাদের জানান, চার ভাই পাঁচ বোনের মধ্যে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ছিলেন মেজো। সবার বড় বোনের নাম ছিল পেয়ারী। সেই নামের সঙ্গে মিলিয়ে এরশাদের পরিবারিক নাম ছিল পেয়ারা। এটি তার ডাক নাম। কাদের আরো জানান, বাবা মকবুল হোসেন পেশায় আইনজীবী ছিলেন। তিনি বাড়ি করেছিলেন কুচবিহারের দিনহাটায়। মা মজিরা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। সে কারণে কুচবিহারের দিনহাটাতেই তার বেড়ে ওঠা। তাদের এক ভাই এবং দুই বোন আগেই মারা গিয়েছেন।

ছাত্রজীবনে যেমন ছিলেন এরশাদ

আর ১০ জনের মতোই ছিল এরশাদের ছাত্রজীবন। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা পছন্দ করতেন তিনি। ফুটবল খেলার প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল এরশাদের। তখন ফুটবল খুবই জনপ্রিয় খেলা ছিল। মারা যাওয়ার পর গণমাধ্যমকে এরশাদের ভাই জি এম কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন। জি এম কাদের জানান, খেলাধুলার প্রতি এরশাদের আগ্রহ ছিল বেশি। তিনি ছাত্রজীবনে ফুটবলার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। স্কুল ও কলেজজীবনে তিনি রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন ক্লাবে ভাড়ায় ফুটবল খেলতেন। তিনি আরো জানান, পড়াশোনা, খেলাধুলার পাশাপাশি লেখালেখি করতেন তিনি। এরশাদ ছাত্রজীবন থেকেই কবিতা লিখতেন। কারমাইকেল কলেজের সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads