• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
ই-পাসপোর্টে সর্বোচ্চ ফি ১২ হাজার নির্ধারণ

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

বাতিল হলো সত্যায়নের নিয়ম

ই-পাসপোর্টে সর্বোচ্চ ফি ১২ হাজার নির্ধারণ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ আগস্ট ২০১৯

অবশেষে ই-পাসপোর্টের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কোনো ভ্যাট ছাড়াই নতুন ইলেকট্রনিক পাসপোর্টের সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার টাকা আর সর্বনিম্ন সাড়ে তিন হাজার। তবে ইলেকট্রনিক পাসপোর্টে কোনো সত্যায়নের দরকার হবে না। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু হওয়ার কথা থাকলেও ফি নির্ধারণ না হওয়ার কারণেই তা দেরি হচ্ছিল। তবে এবার আর দেরি নয়, আগামী ৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে ঈদের পর নতুন পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।

গতকাল সোমবার পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, বর্তমানে সাধারণ পাসপোর্ট করাতে ফি লাগে ভ্যাটসহ ৩ হাজার ৪৫০ টাকা ও অতি জরুরির জন্য ভ্যাটসহ ৬ হাজার ৯০০ টাকা। তবে এবার ভ্যাট ছাড়াই ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট)-এর সর্বোচ্চ ফি ১২ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ফি সাড়ে তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য সর্বোচ্চ ফি ২২৫ ডলার এবং সর্বনিম্ন ফি ১০০ ডলার ধরা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ ফি ২২৫ ডলার এবং সর্বনিম্ন ফি ৩০ ডলার ধরা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, সবক্ষেত্রে ই-পাসপোর্ট ৪৮ ও ৬৪ পৃষ্ঠার হবে। পৃষ্ঠা অনুযায়ী আলাদা ফি নির্ধারণ করে গত ১ আগস্ট একটি পরিপত্র জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। পরিপত্রে সাধারণ, জরুরি ও অতি জরুরি এই তিনভাবে ই-পাসপোর্টের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি কাগজপত্র সত্যায়নের ঘর উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্র অনুযায়ী বাংলাদেশে আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫০০০ টাকা, জরুরি ফি ৭০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯০০০ টাকা। এছাড়া বাংলাদেশে আবেদনকারীদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০,৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৭০০০ টাকা, জরুরি ফি ৯০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২০০০ টাকা।

বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারী, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আলাদা ই-পাসপোর্ট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ ডলার ও জরুরি ফি ১৫০ ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১২৫ ডলার ও জরুরি ফি ১৭৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৫০ ডলার ও জরুরি ফি ২০০ ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৭৫ ডলার ও জরুরি ফি ২২৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩০ ডলার ও জরুরি ফি ৪৫ ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫০ ডলার ও জরুরি ফি ৭৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৫০ ডলার ও জরুরি ফি ২০০ ডলার এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৭৫ ডলার ও জরুরি ফি ২২৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

পরিপত্রে ই-পাসপোর্টের ফর্ম পূরণের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র অনলাইনেই পূরণ করা যাবে। এছাড়া পিডিএফ ফরম্যাট ডাউনলোড করে যে কোনো কম্পিউটারে ফরমটি পূরণ করা যাবে। ই-পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না। এছাড়া কোনো ছবি সংযোজন করা এবং তা সত্যায়ন করার দরকার হবে না। ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী যার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নাই, তার পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, ই-পাসপোর্টে কারো আবেদন ১৮ বছরের নিচে হলে জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি), ১৮ বছর হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) এবং ১৮ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অবশ্যই লাগবে। তবে ১৮ বছরের নিচে সব আবেদনকারীর ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। এতে বলা হয়েছে, টেকনিক্যাল সনদগুলো (যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও ড্রাইভার) সংযুক্ত করতে হবে। এছাড়া এনওসি, জিও, প্রত্যয়নপত্র, পেনশন বই অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবে।

সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশনের স্থায়ী কর্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও তাদের নির্ভরশীল স্ত্রী বা স্বামী এবং সরকারি চাকরিজীবীদের ১৫ বছরের কম বয়সের সন্তান সাধারণ ফি জমা দিয়ে অতি জরুরি সুবিধা পাবেন। দেশে পাসপোর্টের ফি জমা দিলে নির্ধারিত ভ্যাট এবং বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশন কর্তৃক সারচার্জসহ নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক পাসপোর্ট পেতে আবেদনকারীদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার উইং বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদন করতে হবে। বৈদেশিক মিশন থেকে নতুন পাসপোর্টের আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানায় বাংলাদেশে যোগাযোগের ঠিকানা থাকতে হবে। অতি জরুরি পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করে আবশ্যিকভাবে আবেদনের সঙ্গে তা দাখিল করতে হবে। এতে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরি পাসপোর্ট পেতে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে অন্যান্য সব তথ্য ঠিক থাকলে ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিনের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। দেশের অভ্যন্তরে জরুরি পাসপোর্ট পেতে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে অন্যান্য সব তথ্য ঠিক থাকলে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে।

দেশের অভ্যন্তরে নিয়মিত পাসপোর্ট পেতে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দিলে অন্যান্য সব তথ্য ঠিক থাকলে ২১ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরি পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। জরুরি পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে। রেগুলার পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হবে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলে পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে কোনো অতিরিক্ত তথ্য সংযোজন বা ছবি পরিবর্তনের প্রয়োজন না হলে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিতির দরকার নেই। রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে যদি সংশোধনের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের কাছে হাজির হওয়ার দরকার হতে পারে। কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার পাসপোর্ট বাতিলের জন্য কাছের পাসপোর্ট অফিস বা বাংলাদেশ মিশনে জমা দিতে হবে। বাতিল করা পাসপোর্ট আবেদনের ভিত্তিতে মৃত ব্যক্তির বৈধ উত্তরাধিকারদের কাছে ফেরত দেওয়া যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads