• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

গণমাধ্যম কাউকে ভুলে যেতে দেয়নি -পিবিআই প্রধান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৯

নুসরাত হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমরা সব সময়ই চাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে এ রায় এসেছে। গণমাধ্যমও কাউকে ভুলে যেতে দেয়নি।

তিনি বলেন, আমরা যেটা প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটাই হয়েছে। আমরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে মেধা দিয়ে কাজ করেছি। প্রত্যেকের পরিবারে নুসরাত আছে, আমরা সে ভাবনা নিয়ে কাজ করেছি।

গতকাল বৃহস্পতিবার ফেনীর সোনাগাজীতে বহুল আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা মাত্র দেড় মাসের মাথায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। আর সেই প্রতিবেদন ও সার্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ে ১৬ জন আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। স্বল্প সময়ের মধ্যে নিখুঁত একটি তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ মেধার প্রয়োগ করে আমরা চেষ্টা করেছি একটি নির্ভুল চার্জশিট দিতে। মামলা প্রমাণের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই প্রয়োগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমাদের যেসব সদস্য তদন্ত ও অপারেশনের জড়িত ছিলেন, আমরা তাদের কনভিন্স করতে পেরেছি যে, অপরাধীদের শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের পরিবারেও এমন হতে পারে— এটা আমরা বোঝাতে পেরেছি। একটা নির্ভুল বিচার হলে সমাজের সব ক্ষেত্রে একটা বহুমুখী প্রভাব পড়তে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখে যতদূর পেরেছি আমরা চেষ্টা করেছি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাতে হয় এবং আমরা সেটা পেয়েছি।

একটি নির্ভুল চার্জশিট হলেই একটি নির্ভুল রায় আসতে পারে- এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, শুধু নির্ভুল চার্জশিটের ওপর বিচার নির্ভর করে না। সাক্ষীদেরও ব্যাপার রয়েছে। আরো অনেক বিষয় থাকে। সব সম্পূর্ণ হলেই সঠিক রায় আসতে পারে।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটা অপরাধেই ঘটনাস্থলের স্কেচ ম্যাপ থাকে, সেটি আমরা নিখুঁতভাবে করতে পেরেছিলাম। ঘটনাস্থলের ডিজিটাল ম্যাপ, লিংক চার্ট এবং এবারই প্রথমবারের মতো রং-তুলি দিয়ে ঘটনাস্থলের বিবরণের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেছি। আমরা সব সময়ই চাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। তারপরও এখানে অনেক ব্যাপার থাকে। তদন্তের বিষয়গুলো আদালতে কীভাবে উপস্থাপিত হলো ইত্যাদি বিষয়। যারা পিপি রয়েছেন তারাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়া গণমাধ্যমও কাউকে ভুলে যেতে দেয়নি।

মামলার তদন্তে অভিনব পন্থা অবলম্বনের কথা উল্লেখ করে পিবিআই প্রধান বলেন, ঢাকায় আনার আগেই একটি জবানবন্দি দিয়েছিল নুসরাত। আমরা তার সেই ভিডিওটি সংগ্রহ করে এটাকেই সত্য ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করি। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আমরা দুজন নারী অফিসার পাঠিয়ে আবারো তার জবানবন্দি নিই। ঘুরেফিরে নুসরাত কয়েকজনের নামই বলছিল। এরপর ২-৩ দিনের মধ্যে নূর উদ্দিন ও শামীমকে গ্রেপ্তার করি, তাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ হত্যাকাণ্ডটি মাদরাসার ভেতরে হয়েছে, বাইরের কেউ জানত না, দেখেওনি। তাই যারা ভেতরে ছিল, একে একে তাদের গ্রেপ্তার করে তথ্য সংগ্রহ করি আমরা।

কারাগারে বসে অধ্যক্ষের হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়ে পিবিআই প্রধান বলেন, আমার কর্মজীবনে কখনো এমন ঘটনা তদন্ত করিনি বা দেখিনি যে কেউ কারাগারে বসে একজন হত্যার পরিকল্পনা ও হুকুম দিয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে তদন্তের সময় আমরাও নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলাম। তবে আমরা যাদের জবানবন্দি নিয়েছি, তাদের কথায় অধ্যক্ষের পরিকল্পনার কথাটি উঠে এসেছে। আমরা এসব তথ্য নিয়ে আমাদের এসআইসহ অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে বসেছি। নিখুঁতভাবে প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়ে আমরা সবার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads