• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি

  • এমদাদুল হক খান
  • প্রকাশিত ২৫ অক্টোবর ২০১৯

আজ তোর কান্না দেখে শান্তি পেলাম ইবলিশ। ফেনীর সোনাগাজীতে বহুল আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায়ের পর ঘটনার মূলনায়ক মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে উদ্দেশ করে এভাবেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন গৃহবধূ অন্তরা আহমেদ। শুধু অন্তরা আহমেদই নন, গতকাল বৃহস্পতিবার রায়ের পর সারা দেশের অসংখ্য মানুষ মর্মান্তিক এই হত্যার রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তারা অতি দ্রুত আসামিদের দণ্ড কার্যকরেরও দাবি জানান।

মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যায় গতকাল বৃহস্পতিবার রায়ে ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা মাত্র দেড় মাসের মাথায় আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।  আর সেই প্রতিবেদন ও সার্বিক প্রমাণের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার পর পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মূল আলোচনায় চলে আসে নুসরাত হত্যাকাণ্ড।

প্রখ্যাত লেখক হুমায়ূন আহমেদের পত্নী ও বিশিষ্ট অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন তার স্ট্যাটাসে বলেন, দ্রুততম সময়ে নুসরাত হত্যা মামলার রায়। মামলার আসামি ১৬ জনের প্রত্যেকেরই মৃত্যুদণ্ড। পরম স্বস্তির একটি খবর। বিচার বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবনত শ্রদ্ধা। রায় ঘোষণার পরপর আসামিরা অস্বাভাবিক ছিল। এদের মধ্যে কেউ কেউ হইচই করেন, কেউ চিৎকার করে কেঁদে ওঠেন! এই অমানুষগুলো কি এখন বুঝতে পেরেছে তাদের অপরাধের মাত্রা? তারা কি অনুতপ্ত? আমার মনে হয় না। উচ্চ আদালতে খালাস পেলে এরা আবারো একই ধরনের অন্যায় করবে। রায় কার্যকরও দ্রুততম সময়ে হোক এই আশাবাদ। নুসরাত বিচার পেয়েছে। আবরার হত্যার বিচারও হোক দ্রুততম সময়ে।

ধন্যবাদ রাষ্ট্র , জয়তু শেখ হাসিনার সরকার।

অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায়ে মূলহোতা অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। নুসরাতের জন্য আমাদের প্রতিবাদ-সান্ত্বনা মায়ের বুকে নুসরাতকে ফিরিয়ে দেবে না, তবে এই বিচারের রায়ে ধর্ষক, নির্যাতনকারীদের টনক একটু হলেও নড়বে। বিচারের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের হয়তো নুসরাতদের হারাতে হবে না অকালে।

সাংবাদিক হারুন উর রশীদ লেখেন, নুসরাত হত্যায় বাংলাদেশে এই প্রথম পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে হত্যার পুরো ঘটনা আদালতে তুলে ধরে পিবিআই।

অভিনেত্রী মুনিরা আক্তার মিঠু লেখেন, প্রধানমন্ত্রীকে শত সহস্রবার সালাম, শ্রদ্ধা! নুসরাত হত্যা মামলার রায় হয়েছে, ১৬ কুত্তা-কুত্তির ফাঁসির আদেশ।

গোলাম কিবরিয়া শিকদার নামে একজন লেখেন, নুসরাত নিহত হয়ে প্রমাণ করিল সে আত্মহত্যা করে নাই। ওসি মোয়াজ্জেম গংই হত্যার অন্যতম ইন্ধনদাতা।

নুসরাত হত্যায় বিনা পারিশ্রমিকে আইনি লড়াই করায় আইনজীবী শাহজাহান সাজুকে উদ্দেশ করে আইরিন রাব্বানী নামে এক নারী তার স্ট্যাটাসে লেখেন, একজন বাবাকে শ্রদ্ধা। নুসরাতের পরিবারের পক্ষে আদালতে লড়েছেন সুপ্রিম কোর্ট ও ফেনী জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু। সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে এ মামলাটি স্বপ্রণোদিত হয়ে লড়েছেন। নিজের পকেট থেকে ব্যয় করেছেন। নুসরাতের পরিবারকে এক টাকাও খরচ করতে হয়নি। তিনি বলেছিলেন, আমার নিজেরই তিনটা মেয়ে আছে, তারাও লেখাপড়া করে। আর কোনো মেয়েকে যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে এমন নির্মমতার শিকার হতে না হয়। সেজন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জন্য আইনি লড়াইয়ে লড়েছি। এতে পারিশ্রমিক নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

শাহজাহান সাজু বলেন, আমি এতটাই খুশি, যা বলে বোঝাতে পারব না। এ মামলাটি পরিচালনা করতে গিয়ে অনেক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। আসামিপক্ষের আইনীজীবীরা অনেক সময় কোর্টের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করেছেন। কিছু আইনজীবী অশোভন আচরণও করেছেন। নিজের মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে নুসরাতের জন্য লড়ে গেছি, কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করিনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads