• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জৈষ্ঠ ১৪২৯
মেক্সিকোর মতো বাণিজ্য নগরী হবে মহেশখালী

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

মেক্সিকোর মতো বাণিজ্য নগরী হবে মহেশখালী

  • চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৩১ অক্টোবর ২০১৯

মেক্সিকোর মতো বাণিজ্য নগরীতে পরিণত করতে কক্সবাজারের স্বর্ণদ্বীপ মহেশখালীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রায় ৫০ হাজার একর জমি নিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বর্তমানে এ দ্বীপের যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। দ্বীপের ৩টি প্রধান সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারবিহীন থাকায় ৫০ শতাংশই খানাখন্দকে ভরপুর হয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো ভিআইপি এসব সড়ক দিয়ে একবার যাতায়ত করলে দ্বিতীয়বার এ সড়কে পা বাড়ায় না। এ দ্বীপের সড়কগুলো হচ্ছে জনতাবাজার- মাতারবাড়ী সড়ক, জনতাবাজার ভায়া শাপলাপুর গোরকঘাটা সড়ক, জনতা বাজার ভায়া কালামার ছড়া গোরকঘাটা সড়ক। এ তিনটি সড়কের মধ্যে শাপলাপুর গোরকঘাটা সড়কটি এলজিইডি’র তত্ববধানে। বাকি দুইটি সড়ক বিভাগের নিয়ন্ত্রাণাধীন।

বর্তমানে মাতারবাড়ি কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে (সওজ) অংশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অর্থায়নে ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে দুইটি প্যাকেজের অধিনে নির্মীত হচ্ছে, ৫ দশমিক ৩ কিলোমিটার সড়ক,  ৬৮০ মিটার পিসি গার্ডার সেতু এবং ৭ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার বাঁধ-কাম সড়ক নির্মাণ ও স্লুইচ গেট নির্মাণ। ধলঘাটা দ্বীপের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য মহেশখালীবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী কোহেলিয়া নদীতে নির্মিত হচ্ছে ৬০০ মিটার দৈর্ঘ সেতু। এসব কাজ শেষ হলে দ্বীপ মহেশখালীতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে যোগাযোগ ক্ষেত্রে। এ অভিমত অবহেলিত দ্বীপবাসীর।

এসব প্রকল্পের সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০০ মিটার দৈর্ঘ ও ৭ দশমিক ৩মিটার প্রস্ত কোহেলিয়া নদীতে সেতু নির্মাণের পাইলিংয়ের কাজ বর্তমানে চলছে। এ সেতুতে পিলার থাকবে ১২টি ও ষ্প্যান থাকবে ১১টি। ৫ দশমিক ৩ কিলোমিটার পাকা সড়কটির প্রস্থ হবে ৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার। ৭ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার বাঁধ-কাম সড়কের প্রস্থ হবে ৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার, ওই বাঁধের উচ্চতা হবে ৬ মিটার। পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত হকে একটি বড় স্লুইচ গেট।

দ্বীপ নিয়ে অতীত কথা

আজ থেকে ২৪০ বছর আগে ১৭৭৯ সালে মহেশের নামে নামকরণ করা হয় মহেশখালী দ্বীপটি  আবি¯ৃ‹ত হয় তখন দ্বীপের আয়াতন ছিল ১৮৮ বর্গ কিলোমিটার। কালের বিবর্তনে সোনাদিয়া, ধলঘাট ও মাতারবাড়ি উপদ্বীপ মহেশখালীর সাথে সংযুক্তি হলে, দ্বীপের আয়াতন বেড়ে দাঁড়ায় ৩১০ বর্গ কিলোমিটারে। ২২১ বছর ধরে মহেশখালী দ্বীপটি মূল ভুখন্ডের সাথে বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে ২০০০ সালের ১৭ জুন চকরিয়ার বদরখালী ও মহেশখালী জনতা বাজারের মধ্যাংশে মহেশখালী চ্যানেলের উপর একটি সেতু নির্মিত হলে মহেশখালীর সাথে সারা দেশের সড়ক নেটওয়ার্ক চালু হওয়ার পর মহেশখালীকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ আর বলা যাচ্ছেনা।

মহেশখালী দ্বীপের আয়াতন দিন-দিন বাড়ছে। ১৭৭৯ সালে মহেশখালী চ্যানেলের গড় গভীরতা ছিল ১৫ থেকে ৩৩ মিটার। বর্তমানে এর গভীরতা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ থেকে ১০ মিটার। এর কারণ হিসেবে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদী থেকে বর্ষার সময় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বিপুল পরিমান পলিমাটি এসে মহেশখালী চ্যানেলটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যৎ কক্সবাজার সদর ও চকরিয়া উপজেলার মহেশখালী চ্যানেল লাগোয়া অংশ টুকু মহেশখালীর সাথে একাকার হয়ে যাবে। এ অভিমত ভূ-রূপতত্ব গবেষকদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads