গাজীপুরের টঙ্গীতে আগামীকাল শুক্রবার শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। চলবে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১৭ জানুয়ারি। চলবে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এদিকে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীদের আয়োজনে সমাপ্ত হবে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার থেকে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা।
টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের শীর্ষ মুরুব্বি ও ময়দানের জিম্মাদার প্রকৌশলী মাহফুজ হান্নান বলেন, সব কাজ শেষ। এখন শেষ মুহূর্তের সামান্য কিছু কাজ চলছে।
বিশ্ব ইজতেমা মিডিয়া সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম বলেন, ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে স্বেচ্ছাসেবী মুসল্লিরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিন দিনের ইজতেমাকে ঘিরে টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় ধর্মীয় উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। গতকাল বিকাল থেকে ইজতেমাকে কেন্দ্র মুসল্লিদের আনাগোনা শুরু হয়েছে।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে আগামী ১৭ জানুয়ারি। ভারতের বিশ্ব তাবলিগ মারকাজের সাবেক আমির মাওলানা সাদের অনুসারীদের আয়োজনে ১৯ জানুয়ারি ওই আসরের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই গ্রুপের বিরোধের কারণে গত বছর থেকে মাওলানা সাদের অনুসারী এবং মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীদের আয়োজনে পৃথকভাবে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উভয় পর্বেই ৬৪ জেলা থেকে তাদের অনুসারীরা যোগ দিচ্ছে।
জানা গেছে, কাল থেকে ইজতেমার মূল কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে আমবয়ান শুরু হবে। ইজতেমা সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইজতেমা ময়দানে শীর্ষ মুরব্বিরা এসে পৌঁছেছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লিরা এসে ঢাকার কাকরাইল মসজিদসহ টঙ্গীর আশপাশের বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান নিয়েছে।
এ বছর বিভিন্ন জেলার মুসল্লিদের জন্য ৮৭টি খিত্তা নির্ধারণ করে খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার বিদেশি মেহমানের থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা রেখে ময়দানের উত্তর-পশ্চিম দিকে আন্তর্জাতিক নিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। ৬৪ জেলার জামাতবদ্ধ মুসল্লি ছাড়াও ব্যক্তিগত ও স্থানীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নেবে। মাওলানা জোবায়েরপন্থিদের মধ্যে কওমি মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি বিশাল অংশ রয়েছে। মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এবার তুরাগ নদের পশ্চিম পাড়ে তিন একর জমিতে ছাউনি সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
এদিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন জানান, এবার বিশ্ব ইজতেমায় কঠোর নিরাপত্তামূলকব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। ৯ হাজার পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রায় ১০ হাজার নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে পাঁচটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র চালু থাকবে।