• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

পোশাকশ্রমিকদের ৪৩ শতাংশই অপুষ্টির শিকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

দেশে কর্মরত নারী পোশাকশ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশই দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টির শিকার। অপুষ্টির কারণে পোশাক খাতের শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে ২০ শতাংশ।

গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে পোশাক শিল্পখাতে মৌলিক পুষ্টি ও খাদ্য সরবরাহ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দুদিনব্যাপী কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম।

কে এম আলী আজম বলেন, ‘মেধা ও মননকে কাজে লাগানো ও জ্ঞানের রূপান্তরের জন্য এ ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করছি, এই প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে আপনারা মালিক ও শ্রমিক এই উভয় পক্ষের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পারবেন।’

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, রপ্তানি আয়ের ৮৪.২১ শতাংশ আসে পোশাক শিল্প খাত থেকে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) (২০১৮-১৯ অর্থবছর) তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ১১.৭ শতাংশ আসে এই খাত থেকে। এরকম বিকাশমান খাত হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে এই শিল্প খাত। বিশেষত যাদের শ্রমে এই শিল্প টিকে আছে সেই কর্মরত নারী পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশই দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টির শিকার (সূত্র : আইসিডিডিআরবি, ২০১৪ সালের মে মাসে প্রকাশিত গবেষণ তথ্য অনুযায়ী।) এদিকে ইন্টারন্যাশনাল লেবার অফিস (আইএলও)-এর ২০১৪ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, অপর্যাপ্ত পুষ্টির কারণে পোশাক খাতের শ্রমিকদের ২০ শতাংশ উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে।

কর্মশালায় জানানো হয়, বর্তমানে পোশাক শিল্পে প্রায় ৩৫ লাখ থেকে ৪২ লাখ শ্রমিক কাজ করেন; যাদের ৬০-৮০ শতাংশই হচ্ছে নারী। সচেতনতার অভাব, খাদ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে জ্ঞানের স্বল্পতা এবং সীমিত আয়ের কারণে এই শিল্পে নিয়োজিত অধিকাংশ শ্রমিক পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত।

আয়োজকরা জানান, কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে : খাদ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত তথ্যসমূহ, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবারের প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি গার্মেন্ট শ্রমিক-কর্মচারীদের ব্যবস্থাপকগণের খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে করণীয় এবং তদারকি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের অবহিত করা। একই সঙ্গে পোশাক শিল্পে এই কার্যক্রমকে আরো জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমফ্রুভড নিউট্রিশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন গেইনের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, জাতীয় পুষ্টিসেবা (জনস্বার্থ পুষ্টি প্রতিষ্ঠান)-এর লাইন ডিরেক্টর ডা. এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ এম্প্লয়ার্স ফেডারেশন-এর মহাসচিব ফারুক আহমেদ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, গেইন-এর পোর্টফোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল প্রমুখ।

কর্মশালায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য, সাধারণ ও আইন- এই তিন ক্যাটাগরিতে মোট ৩০ জন সরকারি কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টি সেবা বিভাগ। আজ সোমবার কর্মশালার সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads