জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার টুঙ্গিপাড়া আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদেরও টুঙ্গিপাড়া আসার কথা রয়েছে।

এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে আয়োজিত শিশু সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে শেষ হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। সারা জেলায় সাজ সাজ রব। বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। টুঙ্গিপাড়াসহ সারা জেলায় নেওয়া হয়েছে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার কাছে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ কাজী নিশাত রসুল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী এদিন টুঙ্গিপাড়ায় সকাল ১০টায় জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। পরে তিনি ১০টা ৪৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

কিন্তু জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার বিষয়টি সংশোধন করে ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ কাজী নিশাত রসুল স্বাক্ষরিত সংশোধিত এক চিঠিতে জানানো হয়, টুঙ্গিপাড়ায় সকাল ১০টায় জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ সময় গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সমাধি সৌধে কমপ্লেক্সের মূল স্তম্ভ, বঙ্গবন্ধু ভবন, মুক্তমঞ্চ, লাইব্রেরি, সংগ্রহশালা, ক্যাফেটরিয়া, মসজিদ, বকুলতলা চত্বর এলাকায় শেষ হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও উন্নয়নমূলক কাজ। বিভিন্ন অবকাঠামোতে রঙের কাজ ও ফুল গাছের চারা লাগানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সসহ সারা জেলায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেতৃবৃন্দের আগমনে নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের স্বাগত জানাতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত মহাসড়ক শতাধিক বর্ণিল তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে গোপালগঞ্জকে সাজানো হয়েছে। জেলায় চলছে সাজ সাজ রব।

টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ আহম্মদ হোসেন মির্জা জানান, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। তাদের স্বাগত জানাতে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ ও ব্যানার দিয়ে সাজানো হয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসে টুঙ্গিপাড়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গে ভোরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মাল্যদান করে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া হবে। গোপালগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়ায় সৌন্দর্যবর্ধনসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টুঙ্গিপাড়ায় আলোকসজ্জার কাজ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে টুঙ্গিপাড়ায় সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া আসবেন। তাদের আগমনকে নির্বিঘ্ন করতে টুঙ্গিপাড়ায় তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গোপালগঞ্জেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

শিশু সমাবেশ স্থগিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, সারা বিশ্বে এখন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে টুঙ্গিপাড়ায় শিশু সমাবেশের আয়োজন করার জন্য সবকিছুই প্রস্তুত ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রোগ্রাম শিডিউলে (কর্মসূচি তালিকা) প্রথমে শিশু সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও সংশোধিত শিডিউলে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই সব শিশু করোনামুক্ত থাকুন। তবে পরবর্তী সময় নির্ধারণ করে অনুষ্ঠানগুলো উদযাপিত হবে।