• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
বিভিন্ন স্থানে হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

বিভিন্ন স্থানে হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে

এগিয়ে এসেছে শিল্প গ্রুপও

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩১ মার্চ ২০২০

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হাসপাতাল তৈরির প্রস্তুতি চলছে। সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসছে একাধিক বেসরকারি শিল্প গ্রুপও। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নতুন হাসপাতাল তৈরি এবং অন্য রোগের চিকিৎসায় কার্যক্রম চলা হাসপাতালকেও করোনা হাসপাতালে রূপান্তরের কাজ এগিয়ে চলছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের পাশাপাশি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল উত্তরা ও মিরপুর এবং যাত্রাবাড়ীর সাজিদা ফাউন্ডেশনে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর বাইরেও মুগদা মেডিকেল কলেজসহ কয়েকটি হাসপাতালে করোনা ইউনিট খোলার কাজ এগিয়ে চলছে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পাঁচ হাজার শয্যার হাসপাতাল বানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। গত রোববার তিনি প্রধানমন্ত্রীর করোনা মোকাবিলার তহবিলে ১০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, রাজধানীর কুড়িলে বসুন্ধরার চারটি কনভেনশন সেন্টার ও একটি ট্রেড সেন্টারকে পাঁচ হাজার শয্যার হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন এবং সম্মতি জানিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বসুন্ধরা গ্রুপের চারটি বিশাল কনভেনশন সেন্টার ও একটি ট্রেড সেন্টার রয়েছে। সবচেয়ে বড় কনভেনশন সেন্টার ৩০ হাজার বর্গফুটের। বাকি তিনটি ২০ হাজার বর্গফুট। আর ট্রেড সেন্টারের আয়তন এক লাখ ৫০ হাজার বর্গফুট।

এদিকে চীনের আদলে আকিজ গ্রুপের সহায়তা নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য চীনের উহান শহরে জরুরি ভিত্তিতে নির্মিত লেইশেনশান হাসপাতালের আদলে এ হাসপাতালটি তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ বশির উদ্দিন। তিনি বলেছেন এই হাসপাতাল করছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

করোনা চিকিৎসায় এ হাসপাতাল নির্মাণের ঘটনায় অপ্রীতিকর ঘটনায় গত শনিবার কাজ বন্ধ হওয়ার পর আবার শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালটির নির্মাণ শেষ হবে। সেই সঙ্গে পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম বসানো হবে। এরপর বিনামূল্যে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হবে।

এ ছাড়া ঢাকার বাইরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতালকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজে করোনা ভাইরাস-সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নগরীর নূরনগর এলাকায় অবস্থিত ৩০ শয্যার এ হাসপাতালে সব রোগের চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে এখানে ‘স্বতন্ত্র ফ্লু কর্নার’ থাকবে।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বতন্ত্র ফ্লু কর্নারে প্রাথমিকভাবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত সন্দেহভাজনদের তথ্য গ্রহণ ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। যদি ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী কারো মধ্যে সংক্রমণের লক্ষণ স্পষ্টভাবে দেখা যায়, তাহলে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য হোটেল অ্যাম্বাসেডর ও হোটেল ডিএস প্যালেসে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

কারো রিপোর্ট পজিটিভ এলে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনের জন্য খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতালে (করোনা হাসপাতাল) পাঠানো হবে।

এদিকে চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে চলবে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা। জানা গেছে, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) বা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চালু করা হয়েছে ১০ শয্যার ইউনিট। করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলে প্রথমে ওই হাসপাতালে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারি থেকে হাসপাতালের ডায়রিয়া ইউনিটের দুটি কক্ষে আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়।

বগুড়ায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন ইউনিট হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে ২৫০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে। বগুড়া সিভিল সার্জন ডা. গাওসুল আজিম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বরিশালে করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় স্বতন্ত্র কোনো হাসপাতাল প্রস্তুত না হলেও বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তবে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব চায় বরিশাল জেলা প্রশাসন।

এই হাসপাতালে যেন করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ ল্যাব স্থাপন করা হয় সেজন্য আবেদন জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।

এ ছাড়া সিলেটে, টাঙ্গাইলসহ বেশ কিছু এলাকায় বিকল্প উদ্যোগ নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads