দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৫৫ তম দিনে ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৬৬ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ২ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৩৯৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। ৫ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৬৬ জন। গতকালের চেয়ে ৭৪৬ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ২০ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭০ জন।
তিনি জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১০ হাজার ৭৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৪৮৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১২৪ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১১ হাজার ৭৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৬১১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
তিনি জানান, দেশে এ পর্যন্ত মোট ১২ লাখ ৬০ হাজার ৩১৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১১ হাজার ১৪ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ৫২৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৫১৫টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৮৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ হাজার ৭৫৯ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১১ হাজার ৭৩৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৯৭৮টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারী। এখন পর্যন্ত পুরুষ ২ হাজার ৬৮৬ জন; ৭৯ দশমিক ০২ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ৭১৩ জন; ২০ দশমিক ৯৮। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩২ জন ও ২ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৪ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছর ১ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সংখ্যা শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৮ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৮৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২১৮ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪৭১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯৭১ জন এবং ৬০ এর অধিক বয়সের রয়েছেন ১ হাজার ৫৯৯ জন।
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ জন, খুলনা বিভাগে ৭ জন, রাজশাহী ৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন এবং রংপুর বিভাগে ২ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত বিভাগ অনুযায়ী মারা গেছেন, ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৬২৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮০৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২১৩ জন, খুলনা বিভাগে ২৫৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১৩২ জন, সিলেট বিভাগে ১৫৮ জন, রংপুর বিভাগে ১৩৪ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৭২ জন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
ডা.নাসিমা সুলতানা বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।