• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

সারা দেশে ১২ হাজার অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ নভেম্বর ২০২০

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদন নেই। তারপরও সারা দেশে ১২ হাজারের মতো হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে। এর মধ্যে প্রায় ৩ হাজার হাসপাতাল অনুমোদনের জন্য আবেদনই করেনি। এরপরও দেদার তাদের কার্যক্রম চলছে। এসব অবৈধ হাসপাতাল বন্ধে সিভিল সার্জনদের চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

পুলিশের এএসপি আনিসুল করিম হত্যার পর জানা যায় মাইন্ড এইড হাসপাতালের কোনো অনুমোদনই ছিল না। এমনকি তারা অনুমোদনের জন্য আবেদনই করেনি।

এসব অননুমোদিত ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালানো হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন এবং যথাযথ সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে দেশের ১১ হাজার ৯৪০টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর মধ্যে ২ হাজার ৯১৬টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক লাইসেন্সের জন্য কোনো আবেদনই করেনি। ৯ হাজার ২৪টি হাসপাতাল-ক্লিনিকের মধ্যে কোনো কোনোটি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করলেও এখনো অনুমোদন পায়নি। আবার কোনো কোনোটির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেই অর্থে সেগুলোও অবৈধ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, তালিকা ধরে এসব হাসপাতাল-ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে সেগুলো বন্ধ করা হবে। তবে একসঙ্গে সব জায়গায় হয়তো অভিযান চালানো যাবে না।  আমাদের এত জনবল নেই যে একসঙ্গে সবগুলো বন্ধ করে দিতে পারব। আমি সিভিল সার্জনদের বলেছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে।

১৯৮২ সালের মেডিকেল অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালানোর সুযোগ নেই।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনা উদ্ঘাটিত হওয়ার পর জানা গিয়েছিল, অনুমোদন ছাড়াই চলছিল ওই হাসপাতাল।

আর গত সোমবার ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে বরিশাল মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর জানা যায়, ওই হাসপাতালও সেবা দেওয়ার অনুমোদন পায়নি।

গত ১০ নভেম্বর সারা দেশে অনুমোদিত এবং অনুমোদনহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে বিভাগীয় পরিচালকদের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিভাগীয় কার্যালয়গুলো পাঠানো তথ্য নিয়ে লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অনুমোদনহীন যেসব চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ৩ হাজার ৫৩৫টি ঢাকা বিভাগে, ২ হাজার ২৩২টি চট্টগ্রাম বিভাগে, ১ হাজার ৫২৩টি খুলনা বিভাগে, ১ হাজার ৪৩৮টি রাজশাহী বিভাগে, ১ হাজার ৯৯টি রংপুর বিভাগে, ৯৬৩টি ময়মনসিংহ বিভাগে, ৬০৩টি বরিশাল বিভাগে এবং ৫৪৬টি সিলেট বিভাগে।

এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, এসব অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, ডাক্তারসহ প্রভাবশালীরা জড়িত। এ কারণে বন্ধ করতে গেলেই সমস্যা তৈরি হয়। আপনারা এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন। যে-ই এসবের সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাদের নাম যেন প্রকাশ করে দেওয়া হয়। কেউ যদি বাধা দেয় সেটা যেন বলা হয় যে তারা বাধা দিচ্ছে।

সূত্র জানায়, এসব অবৈধ হাসপাতালগুলোকে দ্রুত বন্ধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তালিকা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে দ্রুত অবৈধ হাসপাতালগুলো বন্ধের জন্য সিভিল সার্জনদের চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads