• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

মাদক কারবারি শনাক্তে মোবাইল ট্র্যাকার চায় ডিএনসি

  • ইমরান আলী
  • প্রকাশিত ২৬ ডিসেম্বর ২০২০

মাদক কারবারি ও গডফাদারদের গ্রেপ্তারে  অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতোই  মোবাইল ট্র্যাকার ডিভাইস চায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এ জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করা হয়েছে। এটি পাওয়া গেলে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা সহজ হবে। এ ডিভাইস ও চলমান ল্যাব স্থাপনের আরো শক্তিশালী হবে অধিদপ্তর।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সঞ্জয় কুমার চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মোবাইল ট্র্যাকার নেই। অভিযানের ক্ষেত্রে মোবাইল ট্র্যাকার প্রয়োজন। এটা কেনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। হাতে পেলে মাদক ব্যবসায়ী ধরতে অভিযানসহ বেশ কিছু সুবিধা পাবো।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অধিদপ্তরের অনুকূলে এখন পর্যন্ত কোনো মোবাইল ট্র্যাকার নেই। মোবাইল/লোকাল ট্র্যাকার না থাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। ঘটনাস্থলের আশপাশে গেলেই টের পেয়ে সটকে পড়ছে কারবারিরা। মোবাইল ট্র্যাকার থাকলে, আসামি ধরার পাশাপাশি মাদক ব্যবসার মূলহোতাদের সহজেই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হতো। আসামিদের সঙ্গে মূলহোতাদের যোগাযোগের সূত্রও পাওয়া যেতো। কিন্তু মোবাইল ট্র্যাকার না থাকায় বহনকারীদের সঙ্গে যে মূলহোতাদের যোগাযোগ হচ্ছে, সেটা গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে গোপনই থেকে যাচ্ছে। তাই অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে মোবাইল ট্র্যাকার চেয়ে আবেদেন করেছেন তারা।

এদিকে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব তৈরির বিষয়েও কাজ করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, একজন মাদক ব্যবসায়ীর মোবাইল ফোন জব্দের পর সেই মোবাইল ফোনে মাদকের বিষয়ে কার কার সঙ্গে কথা হয়েছে। আরো চালান কোথায় আসছে। কী কী তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে। এসব বিষয়ে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যাবে। এতে খুব সহজেই মাদক চোরাচালানের মূল গডফাদারদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। যা মাদক নির্মূল করার কাজে সহযোগিতা করবে।’

অন্যদিকে, এ বছরের শুরুর সাত মাসের তুলনায় পরের চার মাসে যে কোনো ধরনের মাদক চালান বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তর বলছে, গত চার মাসে ইয়াবাসহ যে কোনো ধরনের মাদক দেশের বিভিন্ন জায়গায় আগের চেয়ে বেশি জব্দ করা হয়েছে। এসব চালানের বিপরীতে মামলার সংখ্যা এবং গ্রেপ্তার বেড়েছে। তবে কমেনি চোরাচালান। এমতাবস্থায় চোরাচালান রোধে কারবারিদের অবস্থান শনাক্তে মোবাইল ট্র্যাকার চায় অধিদপ্তর।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, হঠাৎ করে আবার সারা দেশে মাদক চোরাচালান বেড়ে গেছে। গত আগস্টে সারা দেশে অভিযান পরিচালনা হয়েছে ৭ হাজার ২০১টি। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে এক হাজার ৯৭৪টি। আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ হাজার ৯২ জন। অভিযানে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে ১৭ লাখ ৪ হাজার ৩১৯ পিস। হেরোইন উদ্ধার হয়েছে এক দশমিক ১৪ কেজি। ফেনসিডিল ২ হাজার ৪৭৮ বোতল। অক্টোবরে সারা দেশে অভিযান চালানো হয়েছে ৬ হাজার ৭২৯টি। এতে মামলা হয়েছে এক হাজার ৭৭৩টি। আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে এক হাজার ৮৯৮ জন। ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৫৩ পিস। নভেম্বরে অভিযান চালানো হয়েছে ৬ হাজার ৮৮০টি। মামলা হয়েছে এক হাজার ৭৭৩টি। আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে এক হাজার ৯১০ জন। ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৮৯ পিস।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক গোয়েন্দা রামেশ্বর দাস বলেন, ‘যে কোনো ধরনের মাদক চোরাচালান বেড়ে গেছে। একই কৌশলে পুরনো ব্যবসায়ীরাই মাদক পাচার করছেন। আমাদের অভিযানও বেড়েছে। নিয়মিত আটক করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোপলিটন উত্তর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (এডি) মোঃ মেহেদী হাসান বলেন, ‘এখন প্রতিদিন ২০-৩০ হাজার পিসের ইয়াবা চালান ধরা পড়ছে। মূলত স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় হঠাৎ মাদক বেশি আসছে। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads