• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

অত্যুজ্জ্বল সম্ভাবনার পথে বাংলাদেশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ জানুয়ারি ২০২১

আজ আত্মবিশ্বাসের অভ্রভেদী দাপট নিয়ে নতুন দিনের পথযাত্রা শুরু করল গর্বিত বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যুজ্জ্বল সাফল্যের স্বর্ণপালক মুকুট ধারণ করে সমাপ্ত করলেন তার চলতি মেয়াদের দ্বিতীয় বর্ষ। পা দিলেন তৃতীয় বর্ষে। একই সাথে শেষ করলেন তার সৌরভে-গৌরবে সিক্ত একটানা শাসনের একটি পুরো যুগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় মেয়াদের নির্বাচনি ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার বহুলাংশই আজ সাফল্যের মুখ দেখেছে।

তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পূর্বে নির্বাচনি ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো-দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশু কল্যাণ, পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূল, মেগা প্রজেক্টসমূহের দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়ন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা, দারিদ্র্য নির্মূল, সর্বস্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি, সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা, সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, আধুনিক কৃষিব্যবস্থা—লক্ষ্য যান্ত্রিকীকরণ, দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন, জনবান্ধব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, ব্লু-ইকোনমি, নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা, প্রবীণ, প্রতিবন্ধী ও অটিজম কল্যাণ, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নসহ একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

২০১৯-২০২০ সালে বর্তমান সরকারের শ্রেষ্ঠ অর্জনের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে-স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পুরো মূল কাঠামো দৃশ্যমান, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রুটে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে, দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি-৬ নামের এ প্রকল্পের গত নভেম্বর পর্যন্ত সার্বিক গড় অগ্রগতি ৫৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ, ‘ওয়ান সিটি-টু টাউন’ মডেল কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তৈরি সাড়ে তিন কিলোমিটারের সুড়ঙ্গপথের গত ডিসেম্বর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬১ শতাংশ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩১ শতাংশের বেশি ভৌতকাজ শেষ হওয়া। এছাড়া প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ রোহিঙ্গার আবাসনের জন্য ভাসানচর গড়ে তোলা, বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু-১’ স্যাটেলাইট পাঠানো, কোভিড-১৯ শনাক্তের পরীক্ষাকেন্দ্র ৬৮টি স্থানে স্থাপন, করোনাসংকট মোকাবিলায় এক লাখ ১২ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে ১৪ হাজার ৫৬৫টি আইসোলেশন শয্যা তৈরীকরণ, করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিন হাজার ৬২৫ জন চিকিৎসক, এক হাজার ৩১৪ জন নার্স এবং ৫০০টি প্রতিষ্ঠানের মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের স্বাস্থ্যবীমার ঘোষণা, নিম্নআয়ের মানুষদের ১০ টাকা কেজি দরে ৯০ হাজার টন চাল দেওয়া, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনা মূল্যে ঘর, ছয় মাসের খাদ্য এবং নগদ অর্থ দেওয়া, সারা দেশে অতিরিক্ত ১৩.৭৫ কোটি টাকা ও ২৩ হাজার টন চাল বরাদ্দ দেওয়া, সারা দেশে দলীয়ভাবে এক কোটি ২৫ লাখ আট হাজার ৮১ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া। তা ছাড়া করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতি সাংবাদিককে নগদ ১০ হাজার টাকার অনুদান, জাতীয় প্রেস ক্লাবকে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে দিয়েছেন ৫০ লক্ষ টাকা।

মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সংকট নিরসনে উপজেলা পর্যায়ে ১৪ হাজার বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা, ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম, সারা দেশে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, ৩২তম নিউক্লিয়ার নেশন হিসেবে বিশ্ব পরমাণু ক্লাবে যুক্ত হওয়া, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া, ইমার্জেন্সি সার্ভিস ‘৯৯৯’ কল সেবা চালু করা, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে অবস্থান করা, মাছ উৎপাদনে বিশ্বে ৩য়, ধান উৎপাদনে বিশ্বে ৪র্থ স্থান অর্জন করেছেন।

এ ছাড়া বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম জেন্ডার গ্যাপ

ইনডেক্সে ৫০তম অবস্থান অর্জন রয়েছে। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা, বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা, মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ আওতাধীন জনগোষ্ঠী, রপ্তানি আয়, বয়স্ক ভাতার পরিমাণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মাথাপিছু আয়, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বৈদেশিক বিনিয়োগ, খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে।

দৃশ্যমান সফলতায় জাতি আশাবাদী, যদিও কঠিনভাবে আয়ত্তে রেখেছে অভিশপ্ত করোনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা এখানেই থেমে থাকেননি, আগামী দিনের রূপ পরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। আগামী দিনে পদ্মা সেতুর দুপাড়ে সিঙ্গাপুরের আদলে শিল্পনগরী গড়ে তোলা, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পকে গ্রামভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি গুচ্ছশিল্প কাঠামোয় সংযুক্ত করা, ঢাকা ঘিরে এলিভেটেড রিংরোড এবং ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণ করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে এবং এক্সপ্রেসওয়ে রেললাইন নির্মাণ করা; চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর, পটুয়াখালী, খুলনা এবং কলকাতা পর্যন্ত বুলেট ট্রেন সার্ভিস সম্প্রসারণ করা, ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ, নতুন রাডার স্থাপন ও জেট ফুয়েল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা, বাগেরহাটে খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শেষ করা, কক্সবাজারে সুপিরিয়র বিমান অবতরণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করা, ঢাকায় পাতাল রেল, মেট্রোরেল, সার্কুলার রেলপথ এবং নব্য ও প্রশস্ত নৌপথ নির্মাণ করা, ৫ বছরে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খনন করা, ঢাকার আশপাশের চার নদীকে দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলাসহ সরকারের বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন।

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার বহুলাংশই বাস্তবায়নের ফলে সুফল ভোগ করছে পুরো জাতি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads