• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

অলস ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যবহারের উদ্যোগ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ জানুয়ারি ২০২১

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ারহোল্ডারদের অদাবিকৃত ২১ হাজার কোটি টাকার লভ্যাংশ পড়ে রয়েছে। শেয়ারহোল্ডারদের ঠিকানা না পাওয়া, ওয়ারিশ নিয়ে জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে কোম্পানিগুলোতে এই লভ্যাংশ জমা পড়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই পড়ে থাকা লভ্যাংশকে বাজারের উন্নয়নে ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ তহবিলের নাম হবে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবলিস্টমেন্ট ফান্ড অব বিএসইসি’।

বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এ তহবিল গঠন করার কাজ চলছে। এতদিন এ অপরিশোধিত লভ্যাংশ কোম্পানির অধীনে ছিল। সেটি কমিশন তার হেফাজতে নিয়ে এসে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ তহবিলটি সব সময় থাকবে।  যখনই বিনিয়োগকারীরা প্রয়োজনীয় প্রমাণসাপেক্ষে লভ্যাংশ দাবি করবেন সেটি তাদের পরিশোধ করে দেওয়া হবে। দৃষ্টির আড়ালে থাকা স্টক ও নগদ মিলিয়ে জমা হওয়া অপরিশোধিত লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৯৪২ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ১০৩ টাকা। বিপুল পরিমাণের এই লভ্যাংশ ব্যবহারের বিষয়ে শিগগিরই নির্দেশনা জারি করা হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, অপরিশোধিত লভ্যাংশের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) দায়িত্ব দিয়েছে বিএসইসি। এর মধ্যে ডিএসই ২১৮টি কোম্পানির কাছে অপরিশোধিত লভ্যাংশের তথ্য চেয়েছিল। ২০৮টি কোম্পানি তথ্য দিয়েছে।  বাকি ১০ কোম্পানি এখনো তথ্য দেয়নি। এদিকে সিএসই ১৫৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের কাছে তথ্য চেয়েছিল।  এর মধ্যে ১২৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড তাদের অপরিশোধিত লভ্যাংশের তথ্য দিয়েছে। বাকি ২৬টি কোম্পানি এখনো তথ্য দেয়নি। ডিএসইর দেওয়া তথ্য অনুসারে, কোম্পানিগুলোর অপরিশোধিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ ১৬ হাজার ৩৮৩ টাকা। আর  সিএসইর হিসাব অনুসারে কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর অপরিশোধিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৮৮১ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬৩ টাকা। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোট অপরিশোধিত স্টক লভ্যাংশের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৮৪৬ টাকায়।

অন্যদিকে ডিএসইর দেওয়া তথ্যানুসারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অপরিশোধিত নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ হচ্ছে ৬৩৪ কোটি ৬৬ লাখ ৪৭ হাজার ২৫৮ টাকা।  সিএসইকে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর ৩২১ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার নগদ লভ্যাংশ অপরিশোধিত রয়েছে। আর মোট অপরিশোধিত নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ হচ্ছে ৯৫৬ কোটি ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৫৭ টাকা।

সূত্রে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত লভ্যাংশ রয়েছে তামাক খাতের বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের (বিএটিবিসি) কাছে। যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৮ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা স্টক লভ্যাংশ এবং ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নগদ লভ্যাংশ।

এরপরের অবস্থানে রয়েছে ন্যাশনাল টি কোম্পানি। এ কোম্পানির কাছে বিনিয়োগকারীদের অপরিশোধিত লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯২৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৯২৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা স্টক লভ্যাংশ আর নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ হচ্ছে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কাছে বিনিয়োগকারীদের অপরিশোধিত লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮০ কোটি ২৩ লাখ টাকায়। এর মধ্যে ২২২ কোটি ৯১ লাখ টাকা স্টক লভ্যাংশ এবং ৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা নগদ লভ্যাংশ।

দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংকের অপরিশোধিত লভ্যাংশের পরিমাণ হচ্ছে ২৫৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৪৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা স্টক লভ্যাংশ আর ৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা নগদ লভ্যাংশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads