• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

৪০তম বিসিএসে আশার আলো

আড়াই বছর পর ফল প্রকাশ এ মাসেই

  • এম এ বাবর
  • প্রকাশিত ০৯ জানুয়ারি ২০২১

অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে ৪০তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ফল প্রত্যাশীদের। করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে দীর্ঘদিন পিএসসির কার্যক্রম শিথিল ছিল। এজন্য এই ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। তবে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) জরুরি সভা করবে। সেখানেই ৪০তম বিসিএসের ফলের বিষয়টি চূড়ান্ত করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর সভাতেই ঠিক করা হবে মৌখিক পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ফল প্রকাশের কথা জানিয়েছিল পিএসসির কর্মকর্তারা। তবে বিপুল সংখ্যক খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে যাওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি।

পিএসসি সূত্র জানায়, ৪০তম বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়ে ২০ হাজার ২৭৭ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের দ্বারা পুনর্মূল্যায়ন করার কাজ জোরেশোরে চলছে। তৃতীয় পরীক্ষকের খাতা দেখা শেষ হলেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করবে পিএসসি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিএসসির এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে পিএসসি কেবল ৪০তম বিসিএসের ফল প্রকাশ নিয়েই কাজ করছে। কারণ চেয়ারম্যান দপ্তর থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ করতে হবে। এ নির্দেশনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সবাই এখন অতিরিক্ত সময় কাজ করছেন। ৮ হাজার খাতা তৃতীয় পরীক্ষক মূল্যায়ন করবেন। এজন্য অনেক সময় প্রয়োজন। এ অবস্থায় আসলেই কি জানুয়ারির মধ্যে ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল দেয়া সম্ভব। এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা পরীক্ষকের সংখ্যা বাড়িয়ে হলেও চলতি মাসের মধ্যেই খাতা দেখার কাজ শেষ করব। আশা করছি, শিগগির ফলপ্রত্যাশীদের অপেক্ষা শেষ হবে। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারির মধ্যেই ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, একজন পরীক্ষক খাতা মূল্যায়ন করার পর তার মূল্যায়ন সঠিক হয়েছে কি না, সেটি যাচাইয়ের জন্য ওই খাতা দ্বিতীয় ধাপে একজন নিরীক্ষক পুনরায় পরীক্ষা করেন। পুনর্নিরীক্ষণ করার সময় নিরীক্ষক দেখেন, যেখানে যেমন নম্বর দেয়ার কথা ছিল, তা দেয়া হয়েছে কি না, আবার নম্বর যোগ করতে কোথাও ভুল হয়েছে কি না। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে তবেই ফল চূড়ান্ত করা হয়। পরীক্ষার্থীদের মেধা যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে ৩৮তম বিসিএস থেকে এভাবেই খাতা দেখে আসছে পিএসসি।

২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর প্রায় আড়াই বছর হতে চললেও এখনো এই বিসিএসের লিখিতের ফল প্রকাশ করতে পারেনি পিএসসি। লিখিত পরীক্ষার পর মৌখিক পরীক্ষা এবং চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে কত সময় লাগবে সেটি কেউ বলতে পারছিল না। ফলে ৪০তমদের অপেক্ষার প্রহর আরো দীর্ঘ হয়।

তথ্যমতে, ৪০তম বিসিএসে আবেদন করেন ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ প্রার্থী। গত বছরের ৩ মে ৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ৩ লাখ ২৭ হাজার পরীক্ষার্থী। লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার ২৭৭ জন। ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়।

৪০তম বিসিএসে মোট ১ হাজার ৯০৩ জন ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ক্যাডার অনুসারে, প্রশাসনে ২০০, পুলিশে ৭২, পররাষ্ট্রে ২৫, করে ২৪, শুল্ক আবগারিতে ৩২ ও শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ৮০০ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে পিএসসি।

অন্যদিকে এরই মধ্যে দুই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। এর মধ্যে ৪২তম বিসিএসটি বিশেষ এবং ৪৩তমটি সাধারণ। ৪২তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে চিকিৎসক নেয়া হবে ২ হাজার। আর ৪৩তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নেয়া হবে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মোট ১ হাজার ৮১৪ পদের চাহিদা পাঠায়। এতে শিক্ষায় নেয়া হবে সবচেয়ে বেশি। এখানে পদসংখ্যা ৮৪৩। এছাড়া প্রশাসনে ৩০০, পুলিশে ১০০, পররাষ্ট্রে ২৫, অডিটে ৩৫, ট্যাক্সে ১৯, কাস্টমসে ১৪, সমবায়ে ১৯, ডেন্টাল সার্জন ৭৫ জন এবং অন্যান্য ক্যাডারে ৩৮৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে।

৪২তম বিশেষ বিসিএসে ২ হাজার চিকিৎসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে পিএসসি। বিশেষ বিসিএসে নিয়োগ দিতে হলে বিধিমালা সংশোধন করতে হয়। তারা সেই প্রক্রিয়া শেষ করেছে। ৪১তম বিসিএসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন সাড়ে ৪ লাখের বেশি প্রার্থী। গত বছরের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এতে বিভিন্ন পদে ২ হাজার ১৩৫ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নিয়েছে পিএসসি। এখন ফল প্রকাশের পর মৌখিক পরীক্ষার দিন ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন প্রার্থীরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads