• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

বাংলাদেশকে এখন ঈর্ষা করে পাকিস্তান

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়ার ৪৯ বছরে তাদের থেকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রায় সব সূচকেই টপকে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ স্বাধীনের সময় রিজার্ভ এক ডলারও ছিল না। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশ পাঁচ দশকেই উন্নীত হতে চলেছে উন্নয়নশীল দেশে। বাংলাদেশের যাত্রার শুরুতেই এটিকে বলা হয়েছিল ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। এখন এ দেশ পরিচিতি পাচ্ছে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে। বাংলাদেশের হাতে বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদের পরিমাণ এখন পাকিস্তানের দ্বিগুণ। ৪৯তম বিজয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪ হাজার ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। একই সময়ে পাকিস্তানের রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য অহংকার করার মতো। এই অগ্রগতির জন্য পাকিস্তান এখন ঈর্ষা করে বাংলাদেশকে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৮৫৫ ডলার। একই সময়ে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৮৪ ডলার। গত অর্থবছরে পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ কমলেও করোনা মহামারীর মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়ায় ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। প্রতি বছর লাফিয়ে বাড়ছে পাকিস্তানি নাগরিকদের মাথাপিছু ঋণের বোঝা। সবশেষ অর্থবছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার রুপি, বাংলাদেশি টাকায় ৯২ হাজার ৮০০ টাকা। দুই দেশের অর্থনীতির তুলনায় বাংলাদেশের জনগণের চেয়ে চার গুণ বড় ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে প্রত্যেক পাকিস্তানি। গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ মন্ত্রিসভাকে জানায়, দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৪০২ কোটি ডলার। সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের মাথা পিছু ঋণ দাঁড়ায় ২৬৬ দশমিক ৮ ডলার, টাকার অঙ্কে যা ২২ হাজার ৬৭৮ টাকা।

উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গত এক দশকে বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে বেড়েছে মাথাপিছু ঋণ। কিন্তু পাকিস্তানে ঋণের বোঝা অল্প সময়ের ব্যবধানে যেভাবে বড় হচ্ছে তাতে দেশটির সামনে ঘোর অন্ধকারই বলা যায়। পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, গত অর্থবছর শেষে দেশটির প্রত্যেক নাগরিকের ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার রুপি।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন লিখেছে, দুই বছরের মধ্যে প্রতি পাকিস্তানি নাগরিকের ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৫৪ হাজার ৯০১ রুপি, ৪৬ শতাংশ।

২০২০-২১ বছরের আর্থিক নীতি বিবরণীতে পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় স্বীকার করে জানিয়েছে, জাতীয় অর্থনীতির তুলনায় আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এতে আর্থিক দায়বদ্ধতা এবং ঋণ সীমিত করে আনা-সংক্রান্ত আইন ২০০৫ লঙ্ঘিত হয়েছে।

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানে ঋণ দাঁড়িয়েছে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮.৬ শতাংশে। ঋণের এই পরিমাণ আইন দ্বারা নির্ধারণ পরিমাণের চেয়ে দ্বিগুণ।

জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে জমা দেওয়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবরণীতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের জুনের শেষে পাকিস্তানে মোট সরকারি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৬.৪ ট্রিলিয়ন রুপি। এক বছরে মাথাপিছু ঋণের বোঝা বেড়েছে ২১ হাজার ৩১১ রুপি, শতকরার হিসাবে যা ১৩ শতাংশ।

এছাড়া আর্থিক বিষয়ের অবস্থা সম্পর্কে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করার চর্চার শুরুর পর ২০২০-২১ অর্থবছরের বিবরণীকে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে তথ্য-উপাত্ত অনেক কম।

কর্মকর্তারা জানান, আর্থিক নীতিবিষয়ক বিস্তারিত খসড়া অর্থ মন্ত্রণালয়কে দেয় ঋণ নীতি দপ্তর। মন্ত্রণালয় শিরোনামসহ এটিকে ১১ পৃষ্ঠার মধ্যে উপস্থাপনের নির্দেশ দেয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া সব নীতির পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ অর্থবছরের বিবরণীতে উল্লেখ করতে ২০০৫ সালের এফআরডিএল নীতিতে বলা থাকলেও এবার তা মানা হয়নি।

১১ পৃষ্ঠার ওই বিবরণীতে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য ছিল। এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরের নীতির বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবারের অর্থবছরের বিবরণীতে উল্লেখ ছিল না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads