• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

জাতীয়

এবার উপকূলের দরিদ্ররা পাবেন খাসজমি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

নদীভাঙনের কারণে সহায় সম্বলহীন জলবায়ু উদ্বাস্তু উপকূলীয় হতদরিদ্র পরিবারকে খাসজমি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ। এ লক্ষ্যে ‘চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-৪’ (অতিরিক্ত অর্থায়ন) (এলজিইডি অংশ) শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিচ্ছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যাতায়াতব্যবস্থা উন্নয়নে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ, সাইক্লোন শেল্টার, বেড়িবাঁধ ও স্লুইসগেট নির্মাণ করা হবে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য হ্রাস এবং প্রস্তাবিত প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৬ লাখ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি সাধন করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩৪ কোটি ৩৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা এবং ইফাদের ঋণ থেকে ৭২ কোটি ৪৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটির এরইমধ্যে প্রক্রিয়াকরণ শেষ করেছে পরিকল্পনা কমিশন।

সূত্র জানায়, উপকূলীয় চর এলাকায় জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রকল্প (সিডিএসপি) ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। বাস্তবায়িত এসব সিডিএসপির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় সিডিএসপি-৪ প্রকল্প প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভলপমেন্ট (ইফাদ) প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা এবং নেদারল্যান্ড সরকার ৫ মিলিয়ন ইউরো অনুদান দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নেদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ১৯৮০ সাল হতে ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্পের মাধ্যমে সমুদ্র হতে ভূমি পুনরুদ্ধার ও চর উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চল, বিশেষত, নোয়াখালী জেলায় চর উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্প-১, ২, ৩ ও ৪ এর মাধ্যমে ১৯৯৪ সাল হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চর উন্নয়ন ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ভূমি বন্দোবস্তের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। এরমধ্যে এ প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে ২৫ বছরে সমুদ্র হতে জেগে উঠা ৪৫ হাজার একর ভূমির সার্বিক উন্নয়ন সাধন করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ হাজার ভূমিহীন পরিবারকে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদান করে পুনর্বাসন করা হয়েছে। নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার আওতাধীন উড়িরচর ও সুবর্ণচরে আরও ১০ হাজার একর খাস জমির জলবায়ু সহনশীল উন্নয়ন ও ২০২২ সালের মধ্যে ৬ হাজার ভূমিহীন পরিবারকে খাস জমি বিতরণের জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইফাদ ও নেদারল্যান্ডস সরকারের পক্ষ হতে ২০১৭ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষঅ করা হয়। এই সম্ভাব্যতা সমীক্ষার সুপারিশের ভিত্তিতে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে ৪টি ভবন, সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, মাঠ উন্নয়ন, একটি বাজার উন্নয়ন, ১৩৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ও পাইপ কালভার্ট এবং ৩৫টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা প্রভৃতি।

প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উপকূলীয় হতদরিদ্র মানুষ খাস জমি পাবেন। এ ছাড়া তাদের জীবনমানেরও উন্নতি হবে। খাস জমি চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষিব্যবস্থারও উন্নতি হবে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads