• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

ইন্টারপোলের রেড নোটিশে নাম

ধরাছোঁয়ার বাইরে ৬০ বাংলাদেশি

  • সালাহ উদ্দিন চৌধুরী
  • প্রকাশিত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ইন্টারপোলের (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন) রেড নোটিশের তালিকায় ঝুলছে ৬০ বাংলাদেশির নাম। খুন, মানি লন্ডারিং, শীর্ষ সন্ত্রাসী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, বঙ্গবন্ধুর স্বঘোষিত খুনী, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে এসব ব্যক্তির তালিকা ইন্টারপোলে পাঠানো হয় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো থেকে।

ওয়ান্টেড এসব ব্যক্তিদের মধ্যে আছে ঢাকার অপরাধ জগত কাঁপানো শীর্ষ সন্ত্রাসী, তেমনি আছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়ী, ছাত্র নেতাও। সবশেষ প্রশান্ত কুমার হালদার বা পিকে হালদারের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জানান, গত জানুয়ারি মাসে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো ইন্টারপোলকে চিঠি পাঠিয়েছে। যদিও ইন্টারেপোলের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে এখনো পিকে হালদারের নাম যুক্ত হয়নি। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে মামলা করে। এরইমধ্যে হাইকোর্ট পিকে হালদারের মা, স্ত্রী ও ভাইদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত এবং তার সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে ৬ মানবপাচারকারীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানানো হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-র পক্ষ থেকে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর মাধ্যমে এ অনুরোধ জানানো হয়। তারা হলো-মিটু মিয়া, স্বপন, শাহাদাত হোসেন, মোল্লা নজরুল ইসলাম, ইকবাল জাফর ও তানজিরুল। এরা দুবাই, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভন্ন দেশে পলাতক আছেন। ইন্টারপোলের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের রেড নোটিশের তালিকায় এই ছয়জনের নাম বর্তমানে প্রথমে আছে। ইন্টারপোলের রেড নোটিশে এই ছয়জনের বিষয়ে বলা হয়েছে, তারা বেশি বেতনের লোভ দেখিয়ে মানুষকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করেছে।

সিআইডি-র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জিসানুল হক জানান, পাচারকারীরা ৩৮ জন বাংলাদেশিকে প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়া নিয়ে যায়। পরে তাদের আটকে রেখে নির্যাতন করে সেই ভিডিও দেশে থাকা তাদের স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। এই ছয় ব্যক্তি বর্তমানে বিদেশ পলাতক আছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

এদিকে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারিকৃত বাংলাদেশি অপরাধীদের মধ্যে কয়েকজন দেশ-বিদেশে আটকও হয়েছেন। তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর খুনী আব্দুল মাজেদকে গত বছরের এপ্রিল মাসে পুলিশ রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। শীর্ষ সন্ত্রাসী আহমেদ মন্টি ইলিয়াস জিসানকে ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর সংযুক্ত আরব আমিরাত পুলিশ আটক করে। কিন্তু নানা জটিলতায় এখনো তাকে দেশে ফেরত আনা যায়নি। আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে আটক করা হয় নেপালে। সে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়েছিল। পরে তাকে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাতকে কলকাতা পুলিশ ৬ বছর আগে আটক করলেও পরে সে ছাড়া পেয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাই হয়ে ইতালি চলে যান। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের মধ্যে শরিফুল হক ডালিম পাকিস্তান, লিবিয়া কিংবা স্পেনে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। খন্দকার আব্দুর রশিদ পাকিস্তান হয়ে আফ্রিকায় গেছেন। রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনকে বিভিন্ন সময় ইউরোপের বিভিন্ন জায়গা দেখা গেছে।

বর্তমানে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশিরা হলো-শেখ হাবিবুর রহমান, ইকবাল জাফর, তানজিরুল, স্বপন, মোল্লা নজরুল ইসলাম, মিন্টু মিয়া, খান মো. শহিদ উদ্দিন, ওয়াসিম, মো. হানিফ, গিয়াস উদ্দিন, আশোক কুমার দাস, চন্দন কুমার রায়, রাতুল আহমেদ বাবু, আবুল হারিছ চৌধুরী, সাইদ হোসেন, হাসান আলী, আব্দুল জব্বার, আমান উদ্দিন শফিক, আবুল কালাম আজাদ, সাজ্জাদ হোসেন খান, রফিকুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, নাইম খান, কারা জাহাঙ্গির, ইউসুফ, মজনু আহমেদ, নুরুল দিপু, নুর চৌধুরী, খন্দকার আব্দুর রশিদ, নাজমুল আফসার, শরিফুল হক ডালিম, শরিফুল হোসেন আহমেদ, মুসলেহ উদ্দিন খান, রাশেদ চেধুৈরী, আতাউর রহমান মাহমুদ চৌধুরী, মাওলানা মো. তাজ উদ্দিন মিয়া, সারাহ উদ্দিন মিন্টু, গোলাম ফারুক অভি, আমিনুর রহমান, মিয়া চান, মিন্টু, শেখ হারুন, শাহাদাত হোসেন, খোরশেদ আলম, সুলতান সুজিত, মনোতোস বসাক, প্রশান্ত সর্দার, নারিরুদ্দিন রতন, আতিউর রহমান, তওফিক আলম, জাফর অহমেদ, রফিকুল ইসলাম, জিসান আহমেদ, আমিনুর রসুল, খন্দকার তানভীর ইসলাম জয়, ত্রিমতি সুব্রত বাইন, নবী হোসেন, আব্দুল জব্বার এবং প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads