• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
বর্ণিল আয়োজনে শুরু দুই মাহেন্দ্রক্ষণ উদযাপন 

ছবি: পিআইডির

জাতীয়

বর্ণিল আয়োজনে শুরু দুই মাহেন্দ্রক্ষণ উদযাপন 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ মার্চ ২০২১

বর্ণিল আয়োজনে ইতিহাসের দুই মাহেন্দ্রক্ষণ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু করল বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে শিশুদের কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ১০ দিনের আয়োজনের সূচনা হয়। বাঙালির ইতিহাসের অনন্য এই উদ্যাপনের মুহূর্তে সঙ্গী হয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ এবং ফার্স্ট লেডি ফাজনা আহমেদ। অনুষ্ঠানস্থলে তাদের অভ্যর্থনা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুজিব চিরন্তন প্রতিপাদ্যে ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের আয়োজনের থিম ‘ভেঙেছ দুয়ার এসেছে জ্যোতির্ময়’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ। ভিডিওতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

অনুষ্ঠানে বর্তমান সময়ের রাজনীতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি। এ সময়ে রাজনীতিতে অনেক চড়াই-উতরাই ঘটেছে। কিন্তু রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন কতটুকু হয়েছে তা ভেবে দেখতে হবে। ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ বড়-এটাই হচ্ছে রাজনীতির মূল আদর্শ। বর্তমানে রাজনীতি যেন উল্টো পথে হাঁটছে। 

কিছু সুবিধাবাদী লোক রাজনীতিটাকে পেশা বানিয়ে ফেলেছেন। রাজনীতি আর পেশা এক জিনিস নয়। পেশার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজের ও পরিবার-পরিজনের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। আর রাজনীতি হচ্ছে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার একটি মহান ক্ষেত্র। তাই রাজনীতিকে পেশা মনে করলে দেশ ও জনগণের কথা ভুলে নিজের ও পরিবারের গণ্ডির মধ্যেই ঘুরপাক খেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকীর এই দিনে আমি রাজনীতিবিদদের আহ্বান জানাব, আসুন বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত করি। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দশ জানুয়ারি তিনি যেমন ফাঁসি ও মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন, তেমনি শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু চর্চার বিরল সুযোগ তৈরি হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী তাকে নতুনভাবে জানার সুযোগ পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সুবর্ণজয়ন্তীর দুয়ারে দাঁড়ানো বাংলাদেশের সামনে সোনালি ভবিষ্যতের হাতছানি। আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে এ দেশকে আমরা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবই, ইনশাআল্লাহ। এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা।

স্বাধীনতার অর্ধশতক পরও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি যে সক্রিয়, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করে দেশকে এগিয়ে নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি এখনো দেশে-বিদেশে সক্রিয় রয়েছে। তারা নানা অপতৎপরতার মাধ্যমে এ অর্জনকে নস্যাৎ করতে চায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের শুভ জন্মদিনে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সকল অপতৎপরতা প্রতিহত করে প্রিয় মাতৃভূমিকে উন্নয়ন-অগ্রগতির পথ ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই।

বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির প্রতীক্ষার প্রহরের আজ অবসান হতে চলেছে। আজ এমন এক সময়ে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করতে যাচ্ছি, যখন বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মর্যাদাশীল উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। বর্তমানে দেশের মাথাপিছু আয় সম্মানজনক দুই হাজার ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে; দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে; দেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে; মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। আর্থসামজিক সূচকে বাংলাদেশ প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১২ বছরের নিরলস প্রচেষ্টা এবং জনগণের ঐকান্তিক পরিশ্রমের ফসল আজকের এই প্রাপ্তি।

বাংলাদেশ এখন যে অবস্থানে পৌঁছেছে, সেখান থেকে তাকে সহজে নামানো যাবে না। বাংলাদেশ করোনা মহামারীও সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছে। ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত আমরা দেশে এবং বিদেশে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আজ তার সূচনাপর্ব। তবে আমাদের উৎসব ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতে থাকবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার সমন্বয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশটির জনগণকে শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা শুভেচ্ছাবাণী পাঠিয়েছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশবাসীর পক্ষ হতে তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই তিন দেশের জনগণকেও শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন আপসহীন নেতা। তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করেছেন। সে লক্ষ্যেই তিনি ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। তিনি ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার একজন অন্যতম বড় নেতা। বাংলাদেশের সঙ্গে মালদ্বীপ অংশীদারত্ব বাড়াতে আগ্রহী। দুই দেশ আগামীতে শক্তিশালী বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে একে অপরকে বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। করোনাকালে সহায়তার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সলিহ। বলেন, বাংলাদেশ যে ওষুধ ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছে, তার জন্য মালদ্বীপ চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।

বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে গতকাল এক ভিডিওবার্তায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, আমি যখন আমার বাবার সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করেছিলাম ওই সময় থেকে বাংলাদেশে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছে। এই সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্র্য কমেছে, শিক্ষার হার বেড়েছে এবং স্বাস্থ্য সেবার প্রসার ঘটেছে। এর ফলে দেশের জনগণের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

একজন ব্যক্তির কারণে ইতিহাসে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন সম্ভব সেটি শেখ মুজিবুর রহমান করে দেখিয়েছেন।  উনার ভিশন বাস্তবে পরিণত হয়েছে, কারণ তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন মানুষকে। আজকে আমরা উৎসব করতে পারছি শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক একটি দেশ গড়ার ভিশনের কারণে। এটি সম্ভব হয়েছে এদেশের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য। আমার পিতার সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় সম্পর্ক ছিল। ওই সময় থেকে দুদেশ দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখছে।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আমূল রূপান্তর হয়েছে এবং এই পথযাত্রায় কানাডা অংশীদার হিসেবে আছে। আমরা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছি এবং নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নে সহায়তা করছি। শিশুস্বাস্থ্য ও শিক্ষা, যুব সম্প্রদায়ের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য কাজে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কানাডা।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, চীনের জনগণের পুরোনো এবং ভালো বন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বলেন, ৫০ বছর আগে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তার দেশ ও জনগণের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ তাকে গভীর ভালোবাসায় এখনো স্মরণ করে।

এই উৎসব পালনের জন্য সবাইকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়ে শি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে চীন সফর করেছিলেন। চেয়ারম্যান মাও সে তুং ও প্রধানমন্ত্রী চৌ এনলাইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক তৈরিতে আগে যারা অবদান রেখেছিল তাদের সব সময় স্মরণ করা উচিত। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এখন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে শি বলেন, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সংস্কার কার্যক্রম ও উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং প্রবৃদ্ধির চাকা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রাচীনকাল থেকে আছে। একটি বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের এই উন্নতিতে চীন উচ্ছ্বসিত।  বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিই। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করব, যাতে করে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয় এবং বর্তমান সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায়।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের পতাকার সঙ্গে মিল রয়েছে। আমার মনে হয়, জাপানের পতাকাকে মাথায় রেখে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের পতাকা চিন্তা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে এক ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মনে করতেন জাপানের উন্নয়ন মডেল অনুসরণযোগ্য।

জাপানের জনগণের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। দুদেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি দৃঢ় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে জাপানি শিশুরা ত্রাণ সংগ্রহের জন্য যেমন অত্যন্ত পরিশ্রম করেছে, তেমনি ১০ বছর আগে যখন জাপানে একটি বড় ভূমিকম্প হয় তখন বাংলাদেশ ত্রাণ দিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। বিশ্বাস, সহযোগিতা ও উভয়ের জন্য মঙ্গলজনক-এই তিনটি জিনিসের ওপর ভিত্তি করে আমাদের প্রথাগত সম্পর্ক এখন আরো দৃঢ় ও মজবুত। 

স্বাধীনতার সময় থেকে সোনার বাংলা অর্জনে জাপান সহায়তা দিচ্ছে। যমুনা সেতু, ১০০ টাকার ব্যাংক নোট, সোনারগাঁও হোটেল স্বাধীনতার পরপরই তৈরি হয়। বর্তমান সময়ে ঢাকায় রোড নেটওয়ার্কসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে জাপান সহায়তা দিচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করছে আঞ্চলিক কানেকটিভিটি বৃদ্ধির জন্য। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারত উপমহাদেশের মাঝখানে বাংলাদেশ অবস্থিত হওয়ায় এবং সাম্প্রতিক উন্নতির কারণে জাপানের কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।

সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে আশা করে শুগা বলেন, এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা এখন আমাদের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আইনের শাসন ও কানেকটিভিটির ওপর ভিত্তি করে একটি স্বাধীন ও উন্মুক্ত ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হলে এটি শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে জাপান।

প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর কারণে গত এক বছর থমকে গিয়েছিল সব আয়োজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্যাপন গত এক বছর ধরে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ ছিল, তার মাঝেই বাঙালির জীবনে এসেছে উদ্যাপনের আরেক মাহেন্দ্রক্ষণ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এ দুই বিশেষ উপলক্ষ ঘিরে শুরু হয়েছে জাতীয় পর্যায়ে দশ দিনের অনুষ্ঠানমালার, যা শেষ হবে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির দিনে। এ অনুষ্ঠানমালার পাঁচ দিনের আয়োজনে যোগ দিচ্ছেন প্রতিবেশী পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। মহামারীর কারণে ওই পাঁচ দিনের আয়োজনে সর্বোচ্চ পাঁচশ জন আমন্ত্রিত অতিথি অংশ নিতে পারবেন। অনুষ্ঠানে আসার আগে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে তিনি সংক্রমিত নন। বাকি পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের কেউ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে থাকবেন না; শিল্পীদের পরিবেশনা সেখানে থেকে টেলিভিশন আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারে সীমাবদ্ধ থাকবে।

গতকাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় কমিটি বাস্তবায়ন কমিটির এই আয়োজনে জাতীয় সংগীতের পর শত শিশুর কণ্ঠে কয়েকটি গান পরিবেশিত হয়। অতিথিরা মঞ্চে আসার পর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর ‘মুজিব চিরন্তন’ এই থিমের ওপর তৈরি একটি অ্যানিমেশন দেখানো হয়। সেই প্রদর্শনী শেষে হলে পরিবেশিত হয় এ আয়োজনের থিম সংয়ের মিউজিক ভিডিও। এরপর বিমানবাহিনীর ফ্লাই পাস্টের রেকর্ড করা ভিডিও দেখানো হয়।

উদ্যাপন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম এবং স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads