অমর একুশে বইমেলার সময় আড়াই ঘণ্টা কমিয়ে দিয়েছে বাংলা একাডেমি। করোনা সংক্রমণের কারণে রাত ৯টার পরিবর্তে মেলা চলবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। নতুন এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রকাশকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে নতুন এই সময় কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ বিষয়ে জানানো হয়।
প্রকাশকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ ছাড়া হঠাৎ বাংলা একাডেমির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রকাশকরা। বেশিরভাগ প্রকাশক বলছেন, দুপুর ৩টার দিকে মেলা শুরুর পর প্রায় ৬টা পর্যন্ত অলস সময় কাটান প্রকাশক ও তাদের স্টল এবং প্যাভিলিয়নে কর্মরতরা। সন্ধ্যা ৬টার পর মেলা জমে ওঠে। আর ওই সময়টাতে মেলার প্রবেশদ্বার বন্ধের ঘোষণা দিয়ে প্রকাশকদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে বাংলা একাডেমি।
তাদের মতে, তিন ঘণ্টা মেলা করলে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত করা উচিত। কারণ ৫টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ জনশূন্য থাকে। যে সময় মেলায় বিক্রি শুরু হয় সেই সময়ে মেলা বন্ধের এমন সিদ্ধান্তে প্রকাশকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানান বেশিরভাগ প্রকাশক। ঐতিহ্য প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, সাড়ে ৬টায় মেলা বন্ধ করার বিষয়ে বাংলা একাডেমির একতরফা সিদ্ধান্তে প্রকাশকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন চরমভাবে। ৩টার সময় মেলা শুরু হওয়ার পর ৫টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ পুরো খালি থাকে। এমনিতেই বিক্রি নেই, যা হয় তা সন্ধ্যার পরেই।
পারিজাত প্রকাশনীর শাখাওয়াত হোসেন লিটু বলেন, সাড়ে ৬টায় মেলা বন্ধ, ৬টায় পর আর মেলায় ঢোকা যাবে না। এটা কেমন সিদ্ধান্ত হলো! এতে তো মেলায় মানুষ আসতেই পারবে না। ৫টায় অফিস শেষ করে কোন মানুষটা ৬টার ভেতর মেলায় আসতে পারবে? এমন না করে বরং ৪টায় শুরু করে ৮টা পর্যন্ত মেলার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যেতে পারে।
বর্ণমালার কর্ণধার মামুন-অর-রশিদ বলেন, বাংলা একাডেমির এই একতরফা সিদ্ধান্ত আমাদের প্রকাশনা শিল্পকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। অন্য সবার মতো আমরা সরকারকে ট্যাক্স ও ভ্যাট দিয়ে ব্যবসা করি। সব সেক্টরে সরকার প্রণোদনা দিলেও আমাদের প্রকাশনা সেক্টরে কোনো প্রণোদনা দেয়নি। বাংলা একাডেমির এই সিদ্ধান্ত মেলা ও প্রকাশনা শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলেছে।