• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯
টার্মিনাল-স্টেশনে যাত্রীদের ভিড়

ছবি: বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

টার্মিনাল-স্টেশনে যাত্রীদের ভিড়

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৪ এপ্রিল ২০২১

করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় আগামীকাল সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করছে সরকার। লকডাউনের খবরে রাজধানীর বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ফলে টিকিট কাউন্টারগুলো যাত্রীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে দেখা যায়।

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের মাঝে শঙ্কা তৈরি হয়। যারা অগ্রিম টিকিট কাটতে এসেছিলেন স্টেশনেই অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়েন।

বাস কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লকডাউন ঘোষণা আসার পর থেকে নগরীর প্রতিটি বাস কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। কোনো কোনো কাউন্টারে দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। গাবতলি কাউন্টারে মানুষের ভিড় শামাল দিতে পারছেন না কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা। এই টার্মিনালের পুর্বাশা পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা নাইমুল ইসলাম বলেন, গাবতলির প্রতিটি কাউন্টারে প্রচণ্ড ভিড়। মানুষকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের কাউন্টারেও দীর্ঘ লাইন। সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, লকডাউনের ঘোষণা আসার পরপরই মানুষ টিকিটের জন্য ফোন করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরেই কাউন্টারে এসে ভিড় করতে থাকে। অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কারণে আসন দিতে হিমশিম খাচ্ছি।

একই অবস্থা সায়দাবাদ টার্মিনালেও। জানতে চাইলে হানিফ পরিবহনের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা ইকবাল উদ্দিন বলেন, আমাদের কাউন্টারে কোনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয় না। এরপরও অন্যদিনের চেয়ে এখন যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি। বাস আসার আগেই সব আসন বিক্রি হয়ে যায়। যেখানে অন্য সময় কিছু আসন ফাঁকাও যেতো।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির একজন নেতা বলেন, লকডাউনের কথা শুনে অনেকেই বাড়ি যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। যে কারণে অন্য সময়ের চেয়ে কাউন্টারে ভিড় ভাড়ার খবর শুনতে পাচ্ছি।

কমলাপুরে অগ্রিম টিকিট কাটতে আসা কালনী এক্সপ্রেসের যাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, সোমবারের অগ্রিম টিকিট কাটতে এসেছি। কমলাপুর এসেই লকডাউনের খবর শুনলাম। এখন বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সিল্ক সিটির যাত্রী আব্দুল কাদের বলেন, সোমবারের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছিলাম। তবে লকডাউনের সংবাদ শুনে দ্রুতই স্টেশনে চলে এসেছি। এই টিকিট দিয়ে আজই চলে যেতে চাই। তবে ৫ এপ্রিলের টিকিট দিয়ে আজ না যেতে পারলে সড়ক পথেই  চলে যাব।

পঞ্চগড়ের বাসিন্দা মেহেদী হাসান লকডাউনের খবরে কমলাপুরে ছুটে আসেন। মেহেদী হাসান বলেন, আমার অসুস্থ ভাইকে নিয়ে গত তিনদিন আগে স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজে এসেছি। ৫ তারিখে আমার ভাইকে নিয়ে পঞ্চগড় ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু লকডাউনের সংবাদ শুনে স্টেশনে এসেছি দুটি টিকিটের খোঁজে। তবে কাউন্টার থেকে আজকের কোনো টিকিট নেই বলে জানাল। এখন অসুস্থ ভাইকে নিয়ে কীভাবে বাড়ি ফিরব?  বাসেও যাওয়া সম্ভব নয়। উপকূল এক্সপ্রেসের যাত্রী তারেক বলেন, ৫ এপ্রিলের টিকিট নিয়ে শঙ্কায় আছি। লকডাউনের জন্য বাসা থেকে বের হতে পারব কি না তাও জানি না। তাই টিকিট ফেরত দিতে এসেছি।

লকডাউনের মাঝে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কা থাকায় তাৎক্ষণিক অনেক যাত্রী কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজারের কক্ষে ভিড় করেন। সার্বিক বিষয় নিয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, লকডাউনের সংবাদ শুনে অনেক যাত্রী আমাকে ফোন করেছেন। আবার অনেকেই স্টেশনে ছুটে এসেছেন। আমি কোনো সমাধান দিতে পারছি না। তিনি বলেন, সবার মতো আমিও গণমাধ্যমে লকডাউনের খবর শুনেছি। তবে এর মধ্যে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে কি না এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত কমলাপুর স্টেশনে আসেনি। তাই যারা ৫ তারিখের টিকিট ফেরত দিতে আসছেন আমরা ফেরত নিচ্ছি। তবে তাৎক্ষণিক যারা যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আমরা কোনো ব্যবস্থা করতে পারছি না।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এর আগে গত বছরের ২৫ মার্চ সব রুটের ট্রেন বন্ধের পর ৩১ মে থেকে আট জোড়া ট্রেন চালু করে রেলওয়ে। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে ২৮০টি ট্রেন চালু করা হয়। এরমধ্যে ৮৮টি লোকাল ও মেইল ট্রেন এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ট্রেনের শতভাগ টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পর থেকে স্টেশনগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads