• বুধবার, ১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪২৯
‘মারা গেলে খালি হচ্ছে বেড’

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

‘মারা গেলে খালি হচ্ছে বেড’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ এপ্রিল ২০২১

‘এতদিন করোনা আক্রান্তদের জন্য আইসিইউ বেড পেতে সমস্যা হচ্ছিল। এখন সাধারণ বেডও মিলছে না। ওয়ার্ডগুলোও ভর্তি। কেউ মারা গেলে বেড খালি হচ্ছে। অবস্থা এমনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। ঢাকা মেডিকেলে আসা এক রোগীর স্বজনের সাথে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।

বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আতিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, করোনার জন্য রাজধানী সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতালেরই বেড খালি নেই। আইসিইউ তো আরো নেই।

মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, তিনি নিজেও করোনা আক্রান্ত এক স্বজনের জন্য হাসপাতালগুলোতে অনেক খুঁজেও বেড ম্যানেজ করতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘কেবল আমি নই। আত্মীয়রা যে যেখান থেকে পেরেছেন চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ম্যানেজ করা যায়নি। পরে নতুন করে করোনা চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেছে এমন একটি হাসপাতালে বেড ম্যানেজ করা সম্ভব হয়েছে।’

‘গত ১ এপ্রিল আব্বাকে নিয়ে সারারাত রাস্তায় ঘুরেছি।’ নিজে যে হাসপাতালে চাকরি করছেন সেটার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ডা. জেসমিন ফেরদৌসী বলেন, ‘সেদিন পুরো রাত ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ঘুরেছি। একটি বেডও পাইনি। সে রাত গেল, পরের দিনও গেল। তার পরদিন বেসরকারি একটি হাসপাতালে বেড ম্যানেজ করতে পেরেছি।’

কিন্তু একপর্যায়ে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে শুরু করলে ডা. জেসমিনের বাবাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। সেখানেও একই দশা। বেড নেই। খানিক পর করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত এক চিকিৎসক জানান, একজন রোগী মারা গেছেন। সেই বেড ফাঁকা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩ এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জন্য বেড রয়েছে দুই হাজার ৫১১টি। রোগী ভর্তি রয়েছে দুই হাজার ৪০৬ জন। ফাঁকা রয়েছে ১০৫টি। এর মধ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বেড রয়েছে ২৭৫টি। ভর্তি আছেন ৪২৮ জন। অতিরিক্ত ভর্তি আছেন ১৫৩ জন রোগী।

অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বেড রয়েছে তিন হাজার ৪৬৮টি। তাতে রোগী ভর্তি আছে দুই হাজার ৯৯৪ জন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘বেড খালি হলেই নতুন রোগী ভর্তি করাচ্ছি। আমাদের কোভিডের রোগী থাকে, সাসপেকটেড করোনা রোগী থাকে। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে আমাদের এখানে আসেন তারা। তাদের তো ফিরিয়ে দিতে পারি না।’ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. খলিলুর রহমান বলেন, এই হাসপাতালে করোনা ও নন-করোনা রোগী সবাইকে রাখা হয়। আগে করোনা রোগীদের জন্য ১০০ বেড ছিল। গত সপ্তাহে ৫০টি বাড়িয়ে ১৫০ বেড করা হয়। তাতেও কুলাতে না পেরে আজ (৩ এপ্রিল) থেকে আরো ৫০টি বাড়ানো হয়।’

তিনি আরো জানান, ‘এতে হয়তো আগামী দু-একদিন চাপ কম থাকবে। কিন্তু তারপর আবার বাড়বে। তবে আমরা প্রস্তুত আছি, যদি আরো বাড়াতে হয়, বাড়াব।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads