• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
উত্তরা-আগারগাঁও অংশ চালু হচ্ছে ডিসেম্বরে

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

উত্তরা-আগারগাঁও অংশ চালু হচ্ছে ডিসেম্বরে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৯ এপ্রিল ২০২১

 মহামারী করোনার মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরোদমে এগিয়ে চলছে ঢাকাবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেলের কাজ। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬২ শতাংশ। এর প্রথম অংশ উত্তরা তৃতীয় ফেইজ থেকে আগারগাঁওয়ের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ। যে গতিতে কাজ চলছে তাতে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন চলতি বছরের ডিসেম্বরে উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি চালু করা সম্ভব। 

মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটি গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমটিসিএল মেট্রোরেল-৬ এর সর্বশেষ অগ্রগতি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ইতোমধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভারতসহ অন্যান্য দেশকে বিবেচনায় নেওয়া হবে। এসব দেশে যেসব বিষয় আমলে নিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ একই পথ অনুসরণ করবে।

ডিএমটিসিএল জানায়, ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার  ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৩ দশমিক  ২৭৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে ১৬ দশমিক ৯০ কিলোমিটার রেল লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ভায়াডাক্টের ওপরে ১০ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক প্লিন্থ কাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে।

ভাড়া নির্ধারণ প্রসঙ্গে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এম এ এন সিদ্দিক বলেন, একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আমাদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছে, আমরা তথ্য দিয়েছি। আমরা বলেছি, আশপাশের দেশে যেভাবে ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে সেইভাবে ভাড়া নির্ধারণ হতে হবে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে যেভাবে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এটা ফলো করা যেতে পারে। আমাদের আশা এবং প্রচেষ্টা রয়েছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই উত্তরা-আগারগাঁও অংশের কাজ শেষ করে ট্রেন চলাচল শুরু করতে পারব। এটি এমন একটি প্রকল্প যেটির মেয়াদ ও ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে না। এখনো সঠিক পথেই চলছে প্রকল্পটি।

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মেট্রোরেলের ডিপোতে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে তৈরি হচ্ছে ৫২টি স্থাপনা। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের বেশি স্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলো কাজও ৮০ ভাগ শেষ। এ ছাড়া ট্রেন পরিচালনার জন্য ১৫’শ ভোল্টের বিদ্যুৎ রিসিভিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে বিশাল আকারের ওয়ার্ক স্টেশন। এখানে ট্রেনগুলো চলাচলের পর প্রতিদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। ত্রুটিমুক্ত করেই ফের চলবে লাইনের ওপর। এই ওয়ার্ক স্টেশনে একসঙ্গে ২৪টি ট্রেন মেইনটেনেন্সের ব্যবস্থা থাকবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পিয়ারের ওপর সর্বশেষ ভয়াডাক্ট স্থাপনও শেষ হয়েছে। মেট্রোরেলের ছয়টি বগির একটি চালান দেশে এসেছে। আরো আসবে ১৩৮টি বগি।

প্রতিটি বগিতে ৫৪ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। পিক সময়ে (অফিস যাওয়া ও আসার সময়) বসে এবং দাঁড়িয়ে মিলে মোট ২ হাজার ৩০৮ জন যেতে পারবে একটি ট্রেনে। স্বাভাবিক সময়ে এক হাজার ৭৩৮ জন যাতায়াত করতে পারবেন। নারীদের জন্য থাকবে একটি করে বিশেষ বগি। এ ছাড়া প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে প্রতিটি বগির দরজার পাশে হুইল চেয়ার আটকানোর ব্যবস্থা।

প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াবে ৪৫ সেকেন্ড। স্টেশগুলোতে থাকছে টিকিট কাউন্টার, বিশ্রামাগার, খাবারের স্বয়ংক্রিয় দোকান, নামাজের জায়গা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট, অপারেশন ও মেইনটেন্সে রুম, বিনাটিকিটে বা টিকিটের অতিরিক্ত গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মনিটরিং ব্যবস্থা, ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা, উপরে ওঠার সিড়ি, এসকিলেটর (চলন্ত সিড়ি), লিফটসহ নানা আয়োজন।

উল্লেখ্য, ঢাকার যানজট নিরসন ও নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে ২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। এর মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads