• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জৈষ্ঠ ১৪২৯
ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষে সাফল্য

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

জাতীয়

ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষে সাফল্য

  • গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ এপ্রিল ২০২১

গোপালগঞ্জে ভাসমান ধাপে নানারকম সবজি চাষ শেষে এই সময়ের প্রচুর চাহিদাসম্পন্ন ফসল পেঁয়াজ পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য এসেছে। সদর উপজেলার নকড়ীরচর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বর্ণির বাঁওড়ে ১২ ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষের জন্য কৃষককে আর্থিক সহায়তা, বীজ ও পরামর্শ দেয় সদর উপজেলা কৃষি অফিস।

বর্ষা শেষে নভেম্বর মাসে যখন পানি নামতে শুরু করে তখন কচুরিপানা দিয়ে পেঁয়াজ চাষের ধাপ তৈরি করতে হয় বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী। তিনি জানান, কচুরিপানা দিয়ে তৈরি ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষে দেশে প্রথমবারের মতো এই সফলতা এসেছে। তিনি বলেন, ভাসমান ধাপে সবজি ও মসলা চাষে সনাতনী পদ্ধতির পরিবর্তে এসেছে আধুনিক পদ্ধতি। আগে ভাসমান ধাপ দিয়ে বেড বানিয়ে ওপর লতাবিহীন বিভিন্ন শাক ও সবজি উৎপাদন করা হতো। বর্তমানে লাউ, কুমড়া, ঢ্যাঁড়স, করলার পাশাপাশি উৎপাদন হচ্ছে মসলা জাতীয় ফসল হলুদ ও আদা। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভাসমান বেডে  পেঁয়াজ চাষ। ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাসের পরামর্শে ভাসমান ধাপে প্রথম পরীক্ষামূলক পেঁয়াজ চাষ করা হয়। ভাসমান বেডে সাধারণত পেঁয়াজ ভালো হয় না। কিন্তু গোপালগঞ্জে ভাসমান বেডে পরীক্ষামূলক পেঁয়াজ চাষ সফল হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১১ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে।

সদর উপজেলার নকড়ীরচরে গ্রামের কৃষক হানিফ মোল্যা জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের দেওয়া বীজ, সার ও পরামর্শে এ বছর পেঁয়াজ চাষ করি। বীজতলায় তাহেরপুরী জাতের পেঁয়াজের চারা তৈরি করি। তারপর এ চারা ১২টি বেডে রোপণ করি। প্রতিটি ১০ বর্গমিটারের বেডে ২২ কেজি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। সে হিসাবে হেক্টর প্রতি পেঁয়াজের ফলন হয়েছে ১১ টন। সাথি ফসল হিসেবে ধাপে মরিচ ও লালশাকও আবাদ করেছি।

তিনি আরো বলেন, প্রতিটি বেড বা ধাপ তৈরি ও বীজের জন্য ১২শ টাকা খরচ হয়েছে। এতে কোনো সার বা কীটনাশক লাগেনি। প্রতিটি বেড থেকে উৎপাদিত পেঁয়াজ, মরিচ ও লাল শাক বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। ভাসমান ধাপে লাভজনক পেঁয়াজ চাষ দেখে আমার প্রতিবেশি কৃষকরা আগামীতে এ জাতীয় চাষাবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

নকড়ীরচরের কৃষক সেলিম মল্লিক বলেন, হানিফের ভাসমান বেডে পেঁয়াজ চাষ দেখেছি। এটি খুবই লাভজনক মনে হচ্ছে। পেয়াজ উৎপাদন করলে বাজারে চাহিদা বেশি। আগামী সময়ে আমিসহ কয়েকজন ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষ করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জিএম অলিউল ইসলাম বলেন, বর্ষা শেষে নভেম্বর মাসে যখন পানি নামতে শুরু করে তখন কচুরিপানা দিয়ে পেঁয়াজ চাষের ধাপ তৈরি করতে হয়। এ পদ্ধতির চাষাবাদে বীজের পরিবর্তে প্রতিটি বেডে পেঁয়াজের চারা রোপণ করতে হয়। ৮০ থেকে ৮৫ দিনেই বেড থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করা যায়। ভাসমান ধাপে পেঁয়াজ চাষের এ পদ্ধতি সারা দেশের জলাবদ্ধ এলাকায় ছড়িয়ে দিতে পারলে আগামী সময়ে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমবে। কৃষক লাভবান হবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads